চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীদের লকডাউন বিরোধী বিক্ষোভ
করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশব্যাপী ঘোষিত এক সপ্তাহের লকডাউনের প্রতিবাদ জানাচ্ছে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। আজ সোমবার (৫ এপ্রিল) বিকেল ৩টা থেকে নগরীর নিউমার্কেট মোড় অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করছেন হাজারো ব্যবসায়ী।
সর্বশেষ পাওয়া সংবাদ অনুসারে, এ মুহুর্তে সমাবেশে লকডাউনের বিরোধিতা করে বক্তব্য দিচ্ছেন চট্টগ্রামের তামাকুমুন্ডি লেন বণিক সমিতির নেতারা। সমাবেশ থেকে লকডাউন বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাস্তাঘাট সব কিছুই স্বাভাবিক; যানবাহন চলছে। তাই তারা চান সীমিত পরিসরে হলেও তাদের দোকান খুলতে দেওয়া হোক। কারণ আসন্ন রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা প্রচুর বিনিয়োগ করেছেন।
এদিকে সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের প্রতিবাদ ও মার্কেট খোলা রাখার দাবিতে জেলার লোহাগাড়া ও হাটহাজারীতেও বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
চট্টগ্রামের নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. সগির দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "করোনার কারণে প্রথম দফা লকডাউনে তিনমাস আমরা খেয়ে না খেয়ে দিন পার করেছি। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রনোদনার ব্যবস্থা ছিল না। এর মাঝেই আমাদের কাছ থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স আদায় করা হয়েছে। সামনে রোজা ও ঈদকে কেন্দ্র করে যখন আমরা ব্যবসা করব ভাবছি তখন আবারও লকডাউন দেওয়া হলো। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে তাই আমরা আন্দোলন করছি।"
বেলা ১২ টার দিকে লোহাগড়ার বটতলী এলাকায় সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন লোহাগাড়া দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। এ সময় তারা 'লকডাউন মানি না' বলেও শ্লোগান দেন। একই সময় লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ করতে বলায় দোকান মালিক এবং কর্মচারীরা হাটহাজারীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করেন বলে জানিয়েছেন ইউএনও রুহুল আমিন।
লোহাগাড়া বণিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী বাচ্চু বলেন, "সারা বছরের ব্যবসা হয় ঈদের আগের দুই মাসে। গত বছর আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এবারও যদি এই সময় মার্কেট বন্ধ থাকে, তাহলে আমাদের পথে বসে যেতে হবে। আমাদের দাবি, যেভাবে বিশেষ বিবেচনায় শিল্প-কারখানা চালু রাখা হয়েছে, সেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট খোলা রাখার সুযোগ দেওয়া হোক।"
এক সপ্তাহের লকডাউনের প্রথম দিনে আজ সোমবার বন্দরনগরী চট্টগ্রামে লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ আছে, তবে বাড়তি ভাড়ায় অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে গণপরিবহণ চলছে আগের মতোই। শপিংমলগুলো বন্ধ থাকলেও খোলা আছে অন্যান্য দোকান ও বাজার।
এদিকে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে করোনায় আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩০৭ জন। এ নিয়ে চট্টগ্রাম জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা ৩৯৫ এবং শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৮০৭ জনে।