চট্টগ্রামে করোনায় মৃতদের ৮০ শতাংশই পঞ্চাশোর্ধ্ব
২০২০ সালের ৯ এপ্রিল চট্টগ্রামে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু ঘটে। পরের এক বছরে করোনায় মারা গেছেন ৪৮২ জন। সর্বশেষ ২২ দিনে মারা গেছেন ৭৮ জন। চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছে, মৃতদের মধ্যে ৭৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ মানুষের বয়স ৫০ বছরের উপরে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর থেকে চট্টগ্রামে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যায় ধারাবাহিক বৃদ্ধি পেয়েছে। চট্টগ্রামে গত বছরের ৩ এপ্রিল প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ছয় দিন পর ৯ এপ্রিল ঘটে প্রথম মৃত্যু। চলতি বছরের ৬ এপ্রিল চট্টগ্রামে করোনায় মৃতের সংখ্যা চারশ ছাড়ায়।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রদানকৃত গত বৃহস্পতিবারের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত মৃতের সংখ্যা ছিল ৪৮০ জন। এর মধ্যে ৩৫২ জন পুরুষ ও ১২৮ জন নারী। মৃতদের মধ্যে ২৯০ জন পুরুষ ও ৮২ জন নারীর বয়স ৫০ বছরের বেশি। যা মোট মৃতের ৭৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
এছাড়া ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের মধ্যে করোনায় মারা গেছেন ৬১ জন, যা মোট মৃতের ১২ দশমিক ৭০ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে করোনায় মারা গেছেন ২৩ জন, যা মোট মৃতের ১২ দশমিক ৭০ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে ৫ জন, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী ৫ জন ও শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সী ৪ জন করোনায় মারা গেছেন।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, 'চট্টগ্রামের করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৫০ বছরের বেশি বয়সীরা শীর্ষে। এর প্রধান কারণ তাদের পুরোনো রোগ। '
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, 'উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও হৃদরোগসহ যারা অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত থাকেন তাদের জন্য করোনায় মৃত্যুঝুঁকি বেশি। এ জন্য ঘরের বয়োবৃদ্ধদের প্রতি সবসময় আলাদা নজর দেওয়া উচিত।'
চট্টগ্রামে করোনায় মৃত্যুবরণ করা ৪৮২ জনের মধ্যে ৩৫৯ জনই নগরের বাসিন্দা। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে নগরের হালিশহর এলাকায়। এরপরে পাঁচলাইশে ২৩ জন, চান্দগাঁও ২২ জন, চকবাজারে ১৭ জন, খুলশীতে ১৬ জন, দামপাড়ায় ১২ জন, আগ্রাবাদ ১২ জন, পাহাড়তলী ১২ জন ও আকবরশাহ এলাকায় ১১ জন জনের মৃত্যু হয়েছে। নগরের বাকি এলাকাগুলোতে করোনায় মৃতের সংখ্যা দুই অঙ্ক অতিক্রম করেনি।
এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১২৩ জন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে হাটহাজারী উপজেলায়। এরপরে সীতাকুন্ডে ১৫ জন, পটিয়ায় ১৪ জন, রাউজানে ১৪ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি উপজেলাগুলোতে করোনায় মৃতের সংখ্যা দুই অঙ্ক ছাড়ায়নি।
এদিকে বয়সভিত্তিক পরিসংখ্যানেও চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ বছরের বেশি বয়সীরা। এদের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হার ২৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের মাঝে সংক্রমণের হার ২৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এরপরে সবচেয়ে বেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা। তাদের মাঝে সংক্রমণের হার ১৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হার ১৮ দশমিক ৫২ শতাংশ।