চট্টগ্রামে আতঙ্ক, রাস্তাঘাট ফাঁকা

নগরের প্রবেশদ্বার জিইসি মোড়। স্বাভাবিক সময়ে এই মোড়ে সারাক্ষণ যানজট লেগেই থাকে। দূরপাল্লার যানবাহনগুলো বেশিরভাগই এই মোড় দিয়ে নগরে প্রবেশ করে। তাই সবসময় জনসমাগম থাকে জিইসিতে।
শুক্রবার জিইসি সংলগ্ন দামপাড়ার এক বাসিন্দার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর থেকে জিইসি, দামপাড়াসহ পুরো চট্টগ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষজন ভয়ে ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। সাধারণ ছুটি ঘোষণার পরও এতদিন রাস্তায় কিছু যান চলাচল করছিল; কিন্তু এখন ফাঁকা সড়ক চোখে পড়ছে।
পুলিশ ইতোমধ্যে দামপাড়া এলাকার অলিগলি বন্ধ করে দিয়েছে। সেখানে করোনাভাইরাস আক্রান্তের বাড়িসহ ছয়টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। সাতকানিয়া ও পটিয়া উপজেলায় ওই রোগীর সংস্পর্শে আসা স্বজনদের বাড়িও লকডাউন করেছে প্রশাসন।
নগরের মুরাদপুর এলাকায় কথা হয় ওষুধের দোকানদার ফজলুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে চলমান সাধারণ ছুটির মধ্যেও মুদিসহ বিভিন্ন দোকান খোলা ছিল। এখন ভয়ে ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা এখনো খোলা রাখছি। তবে পরিস্থিতি খারাপ হলে বন্ধ করে দিতে হবে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, নগরের নতুন ব্রিজ মোড়, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর, ২ নম্বর গেট, জিইসি, ওয়াসা, লালখান বাজার, টাইগারপাস, দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ, বারিক বিল্ডিং মোড়, ফকিরহাট, কাস্টমস মোড়, সল্টগোলা ক্রসিং, সিমেন্ট ক্রসিং, কাটগড়, পতেঙ্গা, কদমতলী, নিউ মার্কেট, কোতোয়ালী, লালদিঘী পাড়, আন্দরকিল্লা, চেরাগি পাহাড় মোড়, ডিসি হিল, জামালখান, চকবাজারসহ চট্টগ্রাম ব্যস্ততম মোড়গুলো এখন ফাঁকা।
প্রশাসন জানিয়েছে, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তারা সবাইকে ঘর থেকে বের হতে নিরুৎসাহিত করছেন। কেউ বের হলে তাকে যথাযথ কারণ জানাতে হচ্ছে। অন্যথায় তাকে ঘরে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পর মানুষের আনাগোনা কমে গেছে। সাধারণ ছুটি ঘোষণার পরেও অনেক মানুষ রাস্তায় বের হয়েছিল। তাদেরকে ঘরে রাখতে আমাদের বেগ পেতে হয়েছিল। এখন আগের তুলনায় মানুষ কম বের হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মাহাবুবর রহমান বলেন, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। কারও কিছু প্রয়োজন হলে পুলিশকে হটলাইনে ফোন করলে তার বাসায় সেগুলো পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
গত শুক্রবার চট্টগ্রামে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। ৬৭ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন। তার পরিবারের কয়েকজন সদস্য ওমরা ফেরত ছিলেন।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। এ ছাড়া আরও তিন রোগী আইসোলেশনে রয়েছেন।