গাজীপুরে বিস্ফোরণে ভবনধস, আহত ১৮
গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকায় একটি হোটেলে বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৮ জন আহত হয়েছেন। চারতলা একটি ভবনের নিচতলায় বিস্ফোরণটি ঘটে। এতে বেশ আশেপাশের কয়েকটি ভবনের ক্ষতি হয়।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত দুটোর দিকে বিস্ফোরণটি ঘটে।
বিস্ফেরণে একজন দগ্ধ হয়েছেন। এখনও তার নাম জানা যায়নি। বাকিরা আহত হয়েছেন কংক্রিটের পলেস্তরা খসে ও অন্যান্য কারণে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রচণ্ড শব্দে মনসুর সুপার মার্কেট ভবনের নিচতলায় কংক্রিটের খুঁটি ও ছাদের পলেস্তরা ধসে পড়ে। আশেপাশে কংক্রিট ছিটকে পড়ায় ১২০ ফুট প্রশস্ত মহাসড়কের ডিভাইডার ও আরও কিছু স্থাপনার ক্ষতি হয়। মহাসড়কের অন্যপ্রান্তে, বোর্ড বাজার কেন্দ্রীয় মসজিদের মিনারের মাইক ও জানালার গ্লাসও ভেঙে যায়।
এ ভবনের পাশেই আল-আমিন হার্ডওয়্যার, প্যাসিফিক রেস্টুরেন্টসহ আইএফআইসি ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের অফিস। এসব ভবনেরও জানালার গ্লাস ভেঙে যায়, খসে পড়ে পলেস্তরা।
তবে বিস্ফোরণের উৎস সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার জাকারিয়া খান তার পর্যক্ষেণ থেকে মনে করছেন, রাঁধুনী রেস্টুরেন্ট ও তৃপ্তি হোটেল থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছে। কোথাও গ্যাস সিলিন্ডার যদি বিস্ফোরিত না হয়ে থাকে তবে কোনো বদ্ধ স্থানে গ্যাস জমা হয়েছিল, যেটি দাহ্যবস্তুর সংস্পর্শে আসে। আর তাতেই বিস্ফোরণ ঘটে। প্রাথমিকভাবে এটাই ধারণা করছেন বলে জানালেন জাকারিয়া।
তবে, আশেপাশে অতিরিক্ত দাহ্যবস্তু না থাকায় আগুন ছড়াতে পারেনি বলেও তার মত।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, “আন্ডারগ্রাউন্ডেও হোটেল দুটির কিছু অংশ রয়েছে। সে আন্ডারগ্রাউন্ডের পাশেই আবার স্যুয়ারেজের লাইন। সেখান থেকেও গ্যাস তৈরি হয়ে বিস্ফোরণ ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছি।”
ওদিকে, গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের সাবেক উপ-সহকারী পরিচালক ও বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসে কর্মরত আক্তারুজ্জামান বলেন, “ঘটনা শুনে, সরাসরি দেখে এবং আমার অভিজ্ঞতায় মনে হয়েছে যে, গ্যাস থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সিলিন্ডার বিস্ফোরণ না হলেও জমাট গ্যাস আগুনের স্পর্শ পেলে এমন বিস্ফোরণ ঘটে।”
তবে রাঁধুনী রেস্টেুরেন্টের মালিক হাবিবুর রহমান ও তৃপ্তি হোটেলের মালিক রেজাউল ইসলাম জানান, তাদের গ্যাস সিলিন্ডার অবিস্ফোরিত অবস্থায় রয়েছে।
আহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হলেন, রাশেদ (২২), তুহিন (২২), সুমন (২৬), আল আমীন (৩২), আরিফুল (১৮), জুবায়ের (১৯), নাজমুল (২২), জাহিদ (২৫), আলমগীর (২৭), মারুফ (২৩), মাসুদ (১৮), সুফিয়ান (২২), জাহাঙ্গীর (২৪), শুক্কুর (১৯)।
আহতদের পঙ্গু হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাটির তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সামনের সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।