খালেদা জিয়া মৃত্যুর প্রহর গুনছেন: ফখরুল
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে এমনভাবে কোণঠাসা করে ফেলা হয়েছে যে, তিনি এখন জীবনের শেষ প্রহর গুনছেন বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, এটি বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে খালেদা জিয়াকে সরিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, 'বেগম খালেদা জিয়ার প্রধান অসুখটা পরিপাকতন্ত্রের। ঠিক কোন জায়গায় তার রক্তপাত হচ্ছে, এটা বের করতে আমাদের এখানের ডাক্তাররা গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন রকম কাজ করেছেন। চিকিৎসার যে পদ্ধতি আছে, সেই পদ্ধতিতে তারা কাজ করেছেন। কিন্তু একটা জায়গায় এসে তারা আর এগোতে পারছেন না। কারণ আর কোনো টেকনোলজি বাংলাদেশে নাই, যে টেকনোলজি দিয়ে তারা সঠিক জায়গায় পৌঁছাতে পারেন। যে কারণে তাকে বারবার অ্যাডভান্স সেন্টারে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন চিকিৎসকেরা।'
সরকার খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, 'গণতন্ত্র এবং খালেদা জিয়া সমার্থক। ১/১১-তে যখন শেখ হাসিনা গ্রেপ্তার হলেন, তখন খালেদা জিয়া তার মুক্তির জন্য বিবৃতি দিয়েছিলেন।'
এর আগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে বিদেশে পাঠানো উচিত।
এদিকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনকে মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশের আড়াই হাজারের বেশি সাংবাদিক।
বুধবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফেরার ছয় দিন পর ১৩ নভেম্বর ফের এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৭৬ বছর বয়সি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদাকে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখ ও দাঁতের জটিলতায় ভুগছেন।
চিকিৎসকরা আরও বলেছেন যে, খালেদা জিয়া এখন গুরুতর কার্ডিয়াক ও কিডনি সমস্যায় ভুগছেন। তার রক্তে শুগার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেছে।
এ বছরের এপ্রিলে তিনি করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। এরপর তিনি বাড়িতে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। পরে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৮ মে তিনি করোনামুক্ত হন।
এরপর থেকে খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জন্য বলে আসছিল তার পরিবার ও বিএনপি।
খালেদাকে যেন বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, সেজন্য পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ১১ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জমা দেন।
কিন্তু সরকার বলছে, সাময়িক মুক্তির শর্ত অনুসারে তিনি বাংলাদেশ ছাড়তে পারবেন না।