কুমিল্লা বিসিকে ওষুধ কারখানায় বিস্ফোরণ, চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কুমিল্লার একটি ওষুধ কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ৮ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আহতদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতরা আহতরা হলেন ক্লিনার শামিমা আক্তার (২৬), প্যাকেজিংয়ের কাজ করা আল আমিন (২০), সন্ধ্যা রাণী (৫৬) ও মুকুল (২৬)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সকাল ১০টার সময় বেঙ্গল ড্রাগিস্ট অ্যান্ড ফার্মাসিটিক্যালসে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এসময় তিন তলা বিশিষ্ট কারখানাটির দোতলার একটি অংশ উড়ে গিয়ে প্রায় ৩০মিটার দূরে এসে বিসিক কার্যালয়ের পুরোনো ভবনের সামনে এসে পড়ে। এসময় হুড়োহুড়ি করে নিচে নামতে গিয়ে কয়েকজন আহত হন। ফ্যাক্টরির কাঁচ ও দেয়াল ভেঙে গুরুতর আহত হন চারজন।
সরেজমিন কারখানাটিতে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে ছোপছোপ রক্তের দাগ। কাঁচ ভেঙে পড়ে আছে চারিদিকে। আশেপাশের কয়েকটি দেয়াল নড়বড়ে হয়ে দুলছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শাওন আহমেদ জানান,' আমি পাশের একটি দোকানে বসে নাস্তা করছিলাম। এসময় বিকট শব্দ শুনে ফ্যাক্টরির দিকে দৌঁড়ে যাই। মানুষের চিৎকার শুনে ফ্যাক্টরির ভেতর ঢুকি। গুরুতর আহতদের টেনে বের করি। এদের মধ্যে একজনের চোখ উপড়ে গেছে এবং আরেকজনের পিঠে কাঁচ ঢুকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে দেখেছি।'
ওই কারখানার শ্রমিক হামিদা ও আমেনা জানান, 'সকাল ৮টায় আমরা ফ্যাক্টরিতে আসি। বুধবার ফ্যাক্টরিতে ৪০-৪৫জন শ্রমিক কাজ করছিল। সকালে ফ্যাক্টরিতে বিকট আমরা আওয়াজ শুনে দোতলা থেকে নিচতলায় নেমে আসি। আমরা কোনোকিছুই বুঝে ওঠার আগেই দেখি সব এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে।'
আরেক শ্রমিক নাজমিন আক্তার জানান,'বিস্ফোরণের পর সবার শেষে আমি নামি। দোতলার একটি অংশ উড়ে যেতে দেখেছি। অন্য অংশে আমি কাজ করছিলাম। ওই অংশে কাঁচ ভেঙে পড়ে।'
বিসিক কুমিল্লার উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম জানান,' এটা অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা। ওই প্রতিষ্ঠানে ৬৭ জন কাজ করত বলে আমরা জেনেছি। ঘটনার সময় আমি অফিসেই ছিলাম। তাৎক্ষণিক আহত সাত-আটজনকে ভ্যানে করে হাসপাতালে নিতে সহায়তা করেছি। মালিকপক্ষ বলছে এসি বিস্ফোরণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসি বিস্ফোরণে এধরনের ঘটনা ঘটা সম্ভব নয় বলে আমি মনে করি। অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য তিনটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।'
ফায়ার সার্ভিস কুমিল্লার উপ-পরিচালক জসিম উদ্দিন জানান,'আমরা ঘটনাস্থলে এসে গুরুতর আহত চারজনকে উদ্ধার করি। ওই বিল্ডিংয়ের দোতলায় দুটি এসি ছিল। একটি বিস্ফোরিত হয়। তারপরও যেহেতেু এটি ওষুধ কারখানা, ঠিক কী কারণে এ বিস্ফোরণ ঘটেছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে ওই সময় বিদ্যুতের ভোল্টেজ ওঠানামা করছিল বলে মালিকপক্ষ দাবি করেছেন।'