কারাগারে থেকেও চেয়ারম্যান হলেন বিএনপি নেতা
কারাগারে থেকেও চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আমান উল্যাহপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতা বাহারুল আলম সুমন। সারাদেশের ন্যায় গতকাল দ্বিতীয় পর্যায়ে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৪টিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে বাহারুল আলম সুমন ৩,১০৬ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। ওই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেগমগঞ্জ উপজেলার আমান উল্যাহপুর ইউনিয়নে ৩নং ওয়ার্ড করিমপুর গ্রামের পাটোয়ারী বাড়ির মাওলানা বশির উল্যার ছেলে বাহারুল আলম সুমন। বর্তমানে ওই ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতির পদে রয়েছেন তিনি। দ্বিতীয় ধফায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেন তিনি।
২৭ অক্টোবর নির্বাচনী প্রতীক আনতে উপজেলা শহরে গিয়ে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন সুমন। গত ১৫ অক্টোবর শুক্রবার চৌমুহনীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দিরে ভাঙচুরের মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যদিও ওই মামলার এজাহারে আসামির নাম ছিল কামরুল আলম সুমন।
স্থানীয়রা জানায়, ২৭ অক্টোবর গ্রেপ্তারের পর তাকে ছাড়াই ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রচারণায় নামে তার পরিবারের সদস্য ও আত্মীয় স্বজন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা বাহারুল আলম সুমনের পক্ষে প্রচারণায় নামে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আদালতে সুমনের মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুর রহমান জানান, মিথ্যা মামলায় আমান উল্যাহপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি বাহারুল আলম সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার এজাহাভুক্ত আসামি কামরুল আলম সুমনকে গ্রেপ্তার না করে নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে নিরপরাধ বাহরুল আলম সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে দুইবার ও সর্বশেষ নির্বাচনের আগের দিন ১০ নভেম্বর বুধবার সুমনের জামিন চেয়ে জজ কোর্টে আবেদন করা হয়। কিন্তু ওইদিনও বিজ্ঞ বিচারক সুমনের জামিন নামঞ্জুর করেন।
তিনি আরও বলেন, "আগামী রোববার সুমনের জামিন চেয়ে আদালতে পুনরায় আবেদন করা হবে। ওইদিন তার জামিন মঞ্জুর না হলে আমরা হাইকোর্টে তার জামিনের জন্য আবেদন করব।" একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে সুমনের জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
র্যাব-১১, সিপিসি ৩ লক্ষ্মীপুর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার মো. শামীম হোসেন জানান, চৌমুহনীর বিভিন্ন মন্দিরে হামলার ঘটনায় দায়ের করা ২৯নং মামলায় এজাহারভুক্ত আসামী কামরুল আলম সুমনকে গত ২৭ অক্টোবর চৌমুহনী বাজার থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১ লক্ষ্মীপুর ক্যাম্পের একটি দল। পরে তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়।
মামলার ৮২নং এজাহারভুক্ত আসামির নাম ভুলে বাহারুল আলম সুমনের পরিবর্তে কামরুল আলম সুমন হয়েছিল বলে নিশ্চিত করে পুলিশ। ওই মামলার ৮২নং আসামি হিসেবে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ।