করোনায় এ যাবতকালের সর্বোচ্চ ২৬৪ জনের মৃত্যু
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে আরও ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। গত চার সপ্তাহ যাবত প্রায় প্রতিদিনই দুইশো বা তার কাছাকাছি সংখ্যক মৃত্যু হচ্ছে করোনায়।
গত এক বছরেরও বেশি সময়জুড়ে প্রাণঘাতি এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে ২১ হাজার ৯০২ জনের মৃত্যু হয়েছে কোভিডজনিত কারণে।
গত এক বছরে দেশে যতো মানুষ করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে ১ দশমিক ৬৬ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে এই রোগে।
মারাত্মক সংক্রামক এই ভাইরাসটি গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে দেশের আরও ১২ হাজার ৭৪৪ জনের দেহে। এর আগে গত ২৮ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছিল।
মহামারি শুরুর পর থেকে সব মিলিয়ে এই শনাক্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৩ লাখ ২২ হাজার ৬৫৪ জনে। গত বছর থেকে দুইটি আলাদা ওয়েভে দেশে করোনার উচ্চ সংক্রমণ দেখা গেলেও চলতি বছরের জুনের প্রথমার্ধ থেকেই করোনা শনাক্তের পরিমাণ ব্যাপকহারে বাড়তে শুরু করেছে। বিগত কয়েক সপ্তাহ প্রায় প্রতিদিনই ১০ হাজারের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে দেশে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ হাজার ৯৯৫টি কোভিড পরীক্ষার বিপরীতে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে শতকরা ২৭ দশমিক ৯১১২ জনের মধ্যে।
বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে করোনাভাইরাস বিষয়ে পাঠানো নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত এক বছরে মোট ৭৯ লাখ ৯৫ হাজার ৬৭৮টি নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় গত এক বছরে সংক্রমণের হার ১৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে পুরুষ ১৪০ জন ও নারী ১২৪ জন।
অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে দেশে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা নারীদের দ্বিগুণেরও বেশি।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ হাজার ৭৮৬ জন কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট ১১ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪৩ জন সেরে উঠলেন প্রাণঘাতি এই ভাইরাস থেকে।
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমিত প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে সে বছরের ১৮ মার্চ।
করোনাভাইরাস সংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য একটি বিশেষ ওয়েবসাইট (www.corona.gov.bd) চালু রেখেছে সরকার।
ভাইরাসটির মোকাবিলায় ফেব্রুয়ারি থেকেই দেশজুড়ে টিকাদান কর্মসূচী শুরু করে সরকার। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে আনা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দিয়ে এই কর্মসূচী শুরু হলেও ভারত ভ্যাকসিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় এই কর্মসূচী অনেকটাই স্তিমিত হয়ে পড়ে। বর্তমানে চীন থেকে আনা সিনোভ্যাক ভ্যাকসিন এবং ভ্যাকসিন বিষয়ক আন্তর্জাতিক জোট গ্যাভির বিশ্বব্যাপী টিকাদান কার্যক্রম কোভ্যাক্সের মাধ্যমে পাওয়া ফাইজার ও মডার্নার টিকার মাধ্যমে ফের এ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। জাপানের উপহার দেওয়া অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়ে প্রথম ধাপে বাদ পড়াদের টিকাদান শুরু হয়েছে ২ আগস্ট থেকে।