বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের মৃত্যু
কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন লোক সংস্কৃতি ও পল্লীসাহিত্য গবেষক এবং বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
এপ্রিলের শুরুতে অধ্যাপক শামসুজ্জামান ও তার স্ত্রী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। তারা দুজনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হন। রোববার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আইসিউতে নেওয়া হয়।
বাংলা একাডেমির সচিব এ. এইচ এম লোকমান জানিয়েছেন, বুধবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
১৯৬৩ এবং ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। হরগঙ্গা কলেজে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন তিনি। ১৯৬৪ সালে মুন্সীগঞ্জ হারাগঙ্গা কলেজের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন। একই বছর তিনি জগন্নাথ কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন।
জগন্নাথ কলেজ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৬৮-৭৩) এবং বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের (১৯৯৯-২০০১) শিক্ষক ছিলেন তিনি।
২০০৯ সালে ২৪ মে তিনি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হন। তিনবার তার পদের মেয়াদ বাড়ানো হয়, ২০১৮ সালের ২৩ মে মেয়াদ শেষ হয়। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।২০১৮ সালের ১ অক্টোবর শামসুজ্জামান খান কুষ্টিয়ায় বাংলাদেশের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের 'বঙ্গবন্ধু চেয়ার'-এর অধ্যাপক পদে নিয়োগ পান।
বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা শিরোনামে ৬৪ খণ্ডে ৬৪ জেলার লোকজ সংস্কৃতির সংগ্রহসালা সম্পাদনা এবং ১১৪ খণ্ডে বাংলাদেশের ফোকলোর সংগ্রহমালা সম্পাদনা তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ । ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে।
একুশে পদক ছাড়াও বাংলা একাডেমি পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক পুরস্কার, কালুশাহ পুরস্কার, দীনেশচন্দ্র সেন ফোকলোর পুরস্কার,শহীদ সোহরাওয়ার্দী জাতীয় গবেষণা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন ।