কক্সবাজারে একদিনেই ৪ করোনাভাইরাস পজিটিভ

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাব প্রতিষ্ঠার ১৮ দিনের মাথায় জেলায় চারজনের করোনাভাইরাস 'পজিটিভ' ধরা পড়েছে। রোববার সংগৃহিত ৭৩ জনের নমুনার মধ্যে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত পাওয়া যায় ৬৩ জনের ফলাফল। করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে তিনজন মহেশখালীর এবং একজন টেকনাফের বাসিন্দা।
এ নিয়ে কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঁচজনের করোনাভাইরাস ধরা পড়ল। এদের মধ্যে বাকিজন পাবর্ত্য নাইক্যংছড়ির ঘুমধুম এলাকার বাসিন্দা। তিনি তাবলীগফেরত।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারি অধ্যাপক, ট্রপিক্যাল মেডিসিন ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ শাহজাহান নাজির জানান, রোববার ল্যাবে আসে ৭৩টি নমুনা। সেখান থেকে ৬৩ জনের পরীক্ষার পর ফল পাওয়ার পর চারজনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। যাদের নমুনা ল্যাবে আনা হয়েছে, তাদের শরীরে ভাইরাসটির কোনো উপসর্গই দেখা যায়নি। শুধু ভিন্ন জেলা থেকে এলাকায় আসায় সন্দেহজনক হিসেবে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
তিনি আরও জানান, ৬৩টি নমুনার মধ্যে ২৬ জনই মহেশখালীর। বাকি ১০ জনের ফলাফল সোমবার সকালে দেওয়া হবে।
সূত্রমতে, কক্সবাজার জেলা ৮ এপ্রিল থেকে লকডাউন অবস্থায় থাকলেও মহেশখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও সাতকানিয়া থেকে লোকজন কৌশলে এসে অবস্থান করছেন। ব্যবসায়িক কারণে বা লকডাউন দীর্ঘ হওয়ায় সেসব স্থান থেকে তারা মহেশখালীসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় আসছেন বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো।
মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহফুজুর রহমান জানান, পরীক্ষার জন্য এখানকার যে ২৬ জনের নমুনা পাঠানো হয়, তাদের সিংহভাগের শরীরে ভাইরাসটির কোনো উপসর্গ ছিল না। শুধু বাইরের জেলা থেকে আসার তথ্য নিশ্চিত হয়েই তাদের পরীক্ষার আওতায় নেওয়া হয়।
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনুপম বড়ুয়া বলেন, এখানকার ল্যাবে প্রতিদিন ৯৬ জন রোগীর করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব। উপজেলা ফ্লু কর্নার থেকে সংগ্রহ করে নমুনাগুলো এখানে পাঠানো হয়। ইচ্ছে করলে যে কারও নমুনা পরীক্ষা করার সুযোগ নেই। রোববার পরীক্ষা করা ৬৩টি নমুনারই প্রতিবেদন ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। ওখান থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবটিকে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নির্ধারণ করেছে। গত ১ এপ্রিল থেকে ল্যাবটি চালু হয়ে প্রথম ৬ দিনে ২৪ জন, ৭ এপ্রিল ২৫ জন, ৮ এপ্রিল ২৪ জন, ৯ এপ্রিল ২৭ জন, ১০ এপ্রিল ৩৭ জন, ১১ এপ্রিল ৯ জন, ১২ এপ্রিল ৩২ জন, ১৩ এপ্রিল ২৪ জন, ১৪ এপ্রিল ৩১ জন, ১৫ এপ্রিল ১৭ জন, ১৬ এপ্রিল ৪১ জন, ১৭ এপ্রিল ৩৯ জন, ১৮ এপ্রিল ১৩ জন এবং ১৯ এপ্রিল ৬৩ জন সন্দেহভাজন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এই ল্যাবে। সব মিলিয়ে পরীক্ষা হওয়া নমুনার সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৪০৬।