কক্সবাজারের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হত্যাচেষ্টা মামলায় মেয়র মুজিবের জামিন
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এমএ মোনাফ সিকদারকে হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরমেয়র মুজিবুর রহমান। রোবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ (সদর) এর দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রে জেরিন সুলতানার কাছে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন মেয়র মুজিব।
শুনানি শেষে মামলার পুলিশ রিপোর্ট দাখিল না হওয়া পর্যন্ত কক্সবাজার বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল আলা ছিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও কক্সবাজার বারের সদস্য অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বারের সদস্য অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর জিম্মায় মেয়রের জামিন মন্জুর করেন বিচারক। কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক (কোট-ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মেয়রের পক্ষে শুনানিতে আরো অংশ নেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রনজিৎ দাশ, বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইকবালুর রশিদ আমিন সোহেল, সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট বাপ্পী শর্মাসহ দলীয় অর্ধশতাধিক আইনজীবী।
বাদীর পক্ষে অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিনসহ ১২ জন আইনজীবী নিয়োগ করা হলেও রহস্যজনক কারণে কেউই জামিনের বিরোধিতার জন্য দাঁড়াননি। কোনো প্রভাবশালী শক্তি হয়তো তাদের কোর্টে না দাঁড়াতে হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মামলার বাদি শাহজাহান সিকদার।
জামিন আদেশ পেয়ে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বেরিয়ে কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মসজিদ বদর মোকামে গিয়ে শোকরিয়া নামাজ আদায় করেন মেয়র মুজিব। এসময় তার অনুসারীরা সাথে ছিলেন। শোকরিয়া নামাজের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে প্রচার করা হয়।
গত ২৭ অক্টোবর (বুধবার) রাত ৯ টার দিকে কক্সবাজার শহরের কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্ট এলাকায় প্রধান সড়কের পাশে একটি শুঁটকি মার্কেটের সামনে মোনাফ সিকদারকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এসময় তিনি সেখানে আড্ডা দিচ্ছিলেন। যে মার্কেটের সামনে মোনাফ আড্ডা দিচ্ছিলেন, সেই জমির দখল-বেদখল নিয়ে মেয়র মুজিব ও মোনাফদের মাঝে বিরোধ চলে আসছে।
গুলির নির্দেশদাতা হিসেবে মেয়র মুজিবকে প্রধান আসামি করে রোববার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে সদর থানায় মেয়র মুজিবসহ ৮ জনের নামে মামলাটি করেন আহতের বড় ভাই শাহজাহান সিকদার। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও আটজনকে আসামি করা হয়। আহত মোনাফ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সেদিন সন্ধ্যার দিকে মামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে কক্সবাজার শহরের সকল দোকান-পাট, বাস-কাউন্টার বন্ধ করে দেয় মেয়র মুজিবুরের অনুসারীরা। পাশাপাশি সড়কের মাঝখানে পৌরসভার ময়লার গাড়ি রেখে যাতায়াত বন্ধ করে দেয় তারা। তারা বেশকিছু প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর চালায় এবং পৌর সেবা বন্ধ করে দেয়। এর ফলে চরম আতঙ্ক ভর করে শহরবাসী ও পর্যটকদের মাঝে। দলের উর্ধ্বতন মহলের নির্দেশে পর্যটন শহরের চলমান অরাজকতা বন্ধ করা হয় এবং ২২ ঘন্টা পর পৌরসেবা চালু করা হয়।
যদিও শুরু থেকেই এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার বিষয়টি অস্বীকার করে আসছেন মেয়র মুজিবুর রহমান।