একসঙ্গে বিষ পান করা প্রেমিক-প্রেমিকার মৃত্যু
বিয়েতে পরিবারের অসম্মতি থাকায় আত্মহত্যার জন্য এক সঙ্গে বিষ পান করেছিল প্রেমিক-প্রেমিকা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল তারা। বৃহস্পতিবার রাতে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় প্রেমিকা পূজা বৈরাগীর (১৫)।
মৃত্যুর খবর পেয়েছিল প্রেমিক প্রকাশ বিশ্বাস (১৭)। অবশেষে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে সেও চলে গেল পরপারে। শনিবার বেলা ১১টায় বরিশাল নগরীর রাহাত আনোয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। প্রকাশ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের পরিমল বিশ্বাসের ছেলে।
পূজা একই ইউনিয়নের মোহনকাঠী গ্রামের হীরা লাল বৈরাগীর মেয়ে ও মোহনকাঠী স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
স্থানীয়রা জানান, প্রকাশ বিশ্বাসের সঙ্গে পূজা বৈরাগীর ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। উভয়েই তাদের পরিবারকে বিষয়টি জানালে উভয় পরিবার এ সম্পর্ক মানতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর সোমবার সকালে পার্শ্ববর্তী উজিরপুর উপজেলার ভাউধর গ্রামে প্রকাশের মামা নিহার বাড়ৈর বাড়িতে যায় প্রকাশ ও পূজা। সেখানে দুপুরে তারা আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে একসঙ্গে বিষপান করে।
তাদেরকে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনরা। এরপর অবস্থার অবনতি ঘটায় পাঠানো হয় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক বখতিয়ার আল মামুন জানান, প্রকাশ ও পূজা সেখানে তিনদিন চিকিৎসাধীন ছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার তাদেরকে বরিশাল মেডিকেলে পাঠানো হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে মেডিকেলের মেডিসিন ইউনিট-৩-এ চিকিৎসাধীন প্রকাশ বিশ্বাস চিকিৎসকদের জানিয়েছিল, পূজার সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। পূজা তাকে বিয়ের জন্য বলে। বয়সের কারণে কোনো পরিবারই বিয়েতে রাজি হয়নি। কিন্তু পূজা তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে।
প্রকাশ বলেছিল, '৯ মার্চ পূজা স্কুল থেকে উপবৃত্তির টাকা তুলে আমাকে বিয়ে করতে বলে। কিন্তু পূজার বয়স কম হাওয়ায় আমি রাজি হইনি। সে উপবৃত্তির টাকায় বিষ কেনে। এরপর আমরা দুজন মামা নিহার বাড়ৈর বাড়িতে যাই। সেখানে বেলা দেড়টার দিকে প্রথমে বিষপান করে পূজা। এরপর আমিও বিষপান করি।'
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বরত কোতয়ালী থানার এসআই নাজমুল হুদা বলেন, বৃহস্পতিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় পূজার মৃত্যু হয়। অবস্থার অবনতি হলে প্রেমিক প্রকাশকে নগরীর রাহাত আনোয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করেন তার স্বজনরা। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার মারা যায় প্রকাশ। তাদের লাশ মর্গে রাখা হয়েছে।
