এইচএসসি পরীক্ষায় কিছু বিষয় কমানোর পরিকল্পনা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়
দেশে চলছে কোভিড-১৯ মহামারি। বন্ধ আছে অধিকাংশ বিদ্যালয় ও শিক্ষাকেন্দ্র। এই সঙ্কটকালীন অবস্থা বিবেচনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সূচি থেকে কিছু বিষয় বাদ দেওয়ার কথা ভাবছে। শনিবার (২৭ জুন) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি একথা জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ''পরীক্ষা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। কিন্তু, তারপরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। এই মুহূর্তে আমরা কিছু বিষয়ের পরীক্ষা বাদ দেওয়ার কথাও ভাবছি।''
চলতি শিক্ষাবর্ষ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বর্ধিত করার সম্ভাবনা রয়েছে, বলেও জানান তিনি।
শনিবার এডুকেশন রিপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ –ইর্যাব আয়োজিত এক অনলাইন আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা জানিয়েছেন।
এসময় অনলাইন ক্লাস নিয়ে কিছু ঘাটতির কথা স্বীকার করেন শিক্ষামন্ত্রী। ইন্টারনেট সংযোগের অভাব বা কম্পিউটার না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী যে ভার্চুয়াল ক্লাসগুলোতে যোগ দিতে পারছে না, তা তুলে ধরেন তিনি।
দীপু মনি বলেন, আমাদের টিম এই সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজছে। একইসঙ্গে, সকল শিক্ষার্থীর কাছে কিভাবে ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দেওয়া যায়, তা নিয়েই চেষ্টা চলছে। সকল শিক্ষার্থীকে অনলাইন ক্লাসের আওতায় আনতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
করোনাভাইরাস জনিত শিক্ষা সঙ্কট মোকাবিলায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেবে, বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসাইন।
তিনি বলেন, মহামারির মাঝেও যেন শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে সেটা নিশ্চিত করাটাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আমি মনে করি, এই বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যেই সফল হয়েছি।
তবে সরকারের প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা (পিইসি) এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা বাতিল করার পরামর্শ দিয়েছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটস প্রফেসর মঞ্জুর আহমেদ।
তিনি বলেন, এসএসসি এবং এইচএসসি'র পাঠ্যসূচি সংক্ষিপ্ত করতে হবে। বর্তমান অবস্থায় শিক্ষার্থীদের জন্য মাত্র চারটি বিষয়ের পরীক্ষা দেওয়ার নিয়ম করা উচিৎ।
দেশে শিক্ষা প্রসার আন্দোলন গণ স্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী- দেশের মুঠোফোন নেটওয়ার্ক অপারেটরদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টারনেট প্যাকেজ প্রণোদনা দেওয়ার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, চাইলেই তারা ব্যবসায়ের সামাজিক দায়িত্বের জন্য বরাদ্দকৃত তহবিলের অর্থ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য এসব প্যাকেজ স্পন্সর করতে পারে।
'সকল শিক্ষার্থীর জন্য ইন্টারনেট সংযোগ সুবিধা নিশ্চিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কেই উদ্যোগী হতে হবে। মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে গরীব শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল ডিভাইস কেনার ঋণ দেওয়াও সম্ভব। এর ফলে সবার জন্যেই সৃষ্টি হবে অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার সুযোগ' যোগ করেন তিনি।
ইর্যাবের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট মুশতাক আহমেদ। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডক্টর ফারহানা খানম।