উপহারের ভ্যাকসিন বাংলাদেশের কাছে ভারতের হস্তান্তর

ঢাকায় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টা পর বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করলেন ইন্ডিয়ান হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। ভারতের জনগণের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে এই ২০ লাখ ভ্যাকসিন হস্তান্তর করেন তিনি।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আজ বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের হাতে ভ্যাকসিনের প্রথম বাক্সটি তুলে দেন ইন্ডিয়ান হাইকমিশনার।
এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানে ভ্যাকসিনগুলো যথাযথ নিয়মানুসারে বাংলাদেশে পৌঁছে দেওয়ার পরে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যকার ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনের আলোচনার ধারাবাহিকতায় ভারতে ভ্যাকসিন প্রদান শুরু হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে ভারত বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছে।
তিনি বলেন, প্রতিবেশী প্রথমে নীতির অংশ হিসেবে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের প্রতি ভারত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়।
কোভিশিল্ডের ২০ লাখ ডোজ উপহার আসলে ভারতের পক্ষে প্রতিবেশী কোনো দেশকে দেওয়া সবচেয়ে বড় পরিমাণ বলে উল্লেখ করেন হাইকমিশনার।
তিনি আরও বলেন, কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের (অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন) চালানটি ভারতের পুনেতে অবস্থিত সেরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদন করেছে এবং উপহার দেওয়ার উদ্দেশ্যে ভারত সরকার তার নিজস্ব কোটা থেকে কিনেছে।
হাইকমিশনার বলেন, ২১ জানুয়ারি একটি যুগান্তকারী দিন। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের নিজস্ব প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে এই ভ্যাকসিনগুলো।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, 'আজ একটি ঐতিসিক দিন। আজ আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত সরকার আমাদের ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন গিফট করেছে। মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। এখন বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিলো।'
'চুক্তির ভ্যাকসিন ঠিক সময় আসবে। অনেক উন্নত দেশ এখনো ভ্যাকসিন পায়নি, দেওয়া শুরু করেনি। সেখানে আমরা আগে ভ্যাকসিন পেলাম, সেজন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ,' বলেন মন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, 'আজ সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ভ্যাকসিন দেশে এসেছে। আমরা সবাই খুবই আনন্দিত। আমাদের হাতে ২০ লাখ ভ্যাকসিন এসে পৌঁছেছে। সেই ভ্যাকসিন স্টোরে রাখা হয়েছে। আজ প্রমাণ হলো বন্ধু রাষ্ট্র একে অপরকে সাহায্য করে। যুদ্ধের সময ভারত আমাদের সাহায্য করেছে, এখন মহামারিতেও ভ্যাকসিন দিয়ে সাহায্য করল। দুই রাষ্ট্রের বন্ধুত্বের প্রমাণ রাখল এ ভ্যাকসিন। যেকোনো দুর্যোগ আমরা একসাথে মোকাবেলা করব।'
'তিন কোটি ভ্যাকসিন চুক্তি তাড়াতাড়ি বাস্তবায়ন হবে আশা করছি। ভারত সরকারকে অনুরোধ করব তাড়াতাড়ি যেন সেটি বাস্তবায়িত হয়। ৭০ লাখ ভ্যাকসিন এ মাসে আমাদের হাতে থাকবে। ভারত সরকারকে ধন্যবাদ,' বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, 'ভারত সরকার প্রমাণ করেছে তারা বাংলাদেশের সত্যিকারের বন্ধু।'