আবারও দূষিত শহরের শীর্ষে ঢাকা

বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় আবারও শীর্ষে উঠে এসেছে ঢাকা।
বুধবার সকালে রাজধানীর এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ছিল ৩৭৮, যা 'বিপজ্জনক' হিসেবে বিবেচিত।
২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে একিউআইকে 'বাজে' অবস্থা হিসেবে বিবেচনা করা হয়, অন্যদিকে তা ৩০১ থেকে ৪০০ পর্যন্ত পৌঁছালে তা 'বিপজ্জনক' বলে মনে করা হয়, যা শহরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকির সৃষ্টি করে।
মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটোর এবং ভিয়েতনামের হ্যানয় বায়ু দূষণের শহরের তালিকায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান দখল করেছে, শহর দুটির একিউআই স্কোর যথাক্রমে ৩৫৬ এবং ২৭৮।
দৈনিক বাতাসের গুণগত মান নিরীক্ষার সূচক একিউআই। সরকারী সংস্থা এই সূচক ব্যবহার করে জনগণকে জানায়, একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা পরিষ্কার বা দূষিত। একই সাথে এর মাধ্যমে শহরবাসী জানতে পারে যে তাদের স্বাস্থ্যের জন্য শহরের বাতাসের প্রভাব উদ্বেগের বিষয় কিনা!
বাংলাদেশে সামগ্রিক একিউআই দূষণ পাঁচটি মানদণ্ডের উপর ভিত্তি করে। তা হল- পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম১০ এবং পিএম২.৫), নো২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)।
জলবায়ু দিক থেকে উপক্রান্তীয় মৌসুমী বৃষ্টিপাতের অঞ্চল বাংলাদেশ, যা উচ্চ তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার ব্যাপক মৌসুমী বৈচিত্র্য দ্বারা বেষ্টিত। সাধারণত, জুনের মাঝামাঝি থেকে মৌসুমী বৃষ্টি শুরু হলে ঢাকার বাতাস সতেজ হতে শুরু করে। জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বাতাসের অবস্থা থাকে অনেকটাই স্বাভাবিক।
বায়ু দূষণ ধারাবাহিকভাবে বিশ্বব্যাপী মৃত্যু এবং প্রতিবন্ধকতার ক্ষেত্রে অন্যতম শীর্ষ ঝুঁকি। বেশ কয়েকটি গবেষণা অনুসারে, শ্বাস-প্রশ্বাসে দূষিত বায়ু যাওয়ার ফলে মানুষের হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্টজনিত রোগ, ফুসফুসের সংক্রমণ এবং ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণের ফলে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়, যার বেশিরভাগই মূলত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত সংক্রমণের ফলে।
৮০ শতাংশেরও বেশি শহরাঞ্চলে বাস করা মানুষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাতাসের গুণগত মানের স্তর নির্দেশিকার সীমা অতিক্রম করে এমন দূষিত বায়ুর মাঝে বসবাস করছে। নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বায়ু দূষণের।