Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • অন্যান্য
  • English
The Business Standard বাংলা
tbs
MONDAY, JULY 04, 2022
MONDAY, JULY 04, 2022
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • অন্যান্য
  • English
শাহজাদপুর: যে হাটে দেশের ক্রেতাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আসেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও

ফিচার

মেহেদি হাসান
05 January, 2022, 05:15 pm
Last modified: 05 January, 2022, 05:15 pm

Related News

  • কাক গণতন্ত্রী, মানুষের চেয়ে উত্তম প্রাণী
  • যে পোশাকে কাক বঙ্গভবনে আসে
  • কাক-কথা
  • ১৯১৬ সালে আমেরিকা সফরে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন আততায়ীদের টার্গেট
  • প্লেন স্পটারস বাংলাদেশ: মুরাদ হাসান ও তাঁদের ‘প্লেনধরা’ দল

শাহজাদপুর: যে হাটে দেশের ক্রেতাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আসেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর কাপড়ের হাটে সপ্তাহে দু'দিন হাট বসে। প্রতি হাটে লেনদেন হয় ১৫০-২০০ কোটি টাকার।
মেহেদি হাসান
05 January, 2022, 05:15 pm
Last modified: 05 January, 2022, 05:15 pm
লেনদেনের বিশাল অঙ্কের কারণে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের কাপড়ের হাটকে বলা হয় দেশের ‘সবচেয়ে বড়’ কাপড়ের হাট। ছবি: মেহেদি হাসান/ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

বিশাল আড়তের ভেতর ছোট ছোট দোকান, অগুনতি পাইকার-খদ্দেরের আনাগোনা, দরদামের হাঁকাহাকি, চারদিকে কাপড়ের বান্ডিল আর গাঁটের ছড়াছড়ি – হাটবারগুলোয় শাহজাদপুর কাপড়ের হাটের চিত্র এটি। সপ্তাহের রবি ও বুধ- এ দু'দিন রবীন্দ্র কাছাড়ি বাড়ির গা ঘেঁষে বসে এ হাট। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সীমান্তের ওপার থেকেও আসেন ক্রেতারা। পাইকার-খদ্দেরের হাঁকডাক আর কোলাহলে তিল ধারণের জায়গা থাকে না সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের এই কাপড়ের হাটে। 

একসময় শাহজাদপুরে হাট বসত সোম ও বৃহস্পতিবার। কাপড়ের বাজারের পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুধু কাপড়ের বিক্রি-বাট্টার জন্য আলাদা করে নির্ধারণ করা হয় দুটো হাটবার। রবিবার ও বুধবার। হাট শুরু হয় মূলত শনিবার ও মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই। রবি ও বুধবারে হাটের বিক্রি-বাট্টা থাকে মধ্যগগনে। 

বিক্রেতারা জানান, হাটবারগুলোয় এখানে খুচরা-পাইকারি বিভিন্ন দরে কয়েকশ কোটি টাকার বিক্রি-বাট্টা হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকারি খরিদ্দাররা, যাদের 'পাইকার' নামেও পরিচিত, এসে পাইকারি দরে কাপড় কিনে নিয়ে যান। দেশের বাইরে থেকেও খদ্দের আসে। এ হাটের শতকরা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ কাপড় ভারতীয় পাইকাররা কিনে নিয়ে যায়। 
 
গত আট বছর ধরে  এই হাটে ভারতীয় পাইকারদের সঙ্গে ব্যবসা করছেন 'সোনালি শাড়ি হাউস'-এর মালিক সিরাজুল ইসলাম। হাটের বিক্রি-বাট্টার বিষয়ে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, 'ইন্ডিয়ান পাইকাররাই আমার দোকানের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। আগে পাকিস্তান থেকেও খরিদ্দার আসত। এখন আর তারা আসে না। দেশের মধ্যে চিটাগাঙের ব্যবসায়ীরা বেশি আসে। একটা সময় ছিল যখন লেনদেন হইতো ক্যাশে। এখন ট্যাকার অঙ্ক হাজার বা লাখ যাই হোক সব অনলাইন ব্যাংকিংয়েই হয়'।

শাড়ি বা লুঙ্গির দোকানগুলোয় খোঁজ নিয়ে দেখা যায় প্রায় প্রতিটি দোকানের পাইকারি খরিদ্দার বাঁধা। ক্রেতা-বিক্রেতার এমন বিশ্বস্ততার সম্পর্ক নির্মিত হতে অনেকদিন সময় লাগে। এমনও দোকান পাওয়া গেছে যেখানে ক্রেতা-বিক্রেতার সম্পর্ক কয়েক প্রজন্মের।

গৌড় বসাক নামক একজন ভারতীয় পাইকার জানান, তিনি প্রায় প্রতি মাসেই পাইকারি দরে শাড়ি কিনতে শাহজাদপুর হাটে আসেন। পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমানে 'গৌড় এন্ড সন্স' নামে তার একটি শাড়ির দোকান আছে। কথায় কথায় তিনি বলেন, 'তাঁতের শাড়ি ভারতেও উৎপাদিত হয়। গুণে-মানে মোটামুটি ভালোই। কিন্তু দামে বেশি। বাংলাদেশের কাপড়ের হাটগুলোয় ভারতের বাজারের চেয়ে বেশ কম দামে তাঁতের কাপড় পাওয়া যায়। তাই এদিকে আসি আমরা।'

গৌড় বসাকের মতো চিত্তরঞ্জন বসাক, সুকুমার ঘোষ, কাশী নন্দীও নিয়মিত বাংলাদেশের হাটগুলোয় যাতায়াত করেন। শাহজাদপুর হাটে মোটামুটি তাদের দোকান বাধা।

চট্টগ্রাম থেকে আগত একজন পাইকার বলেন, চট্টগ্রামে শাহজাদপুরের শাড়ি-লুঙ্গির ব্যাপক চাহিদা। এখান থেকে কাপড় নিয়ে আমরা নিজেদের দোকানের ব্র্যান্ডের মার্কা লাগিয়ে শো-রুমে খুচরা দরে সেগুলো বিক্রি করি। কাপড়ের বিক্রি কমে যাওয়ায় অনেকসময় পুরো টাকা পরিশোধ করতে পারি না। তখন বাকিতে মাল নিয়ে সেগুলো বিক্রি করে তারপর দেনা পরিশোধ করতে হয়। বাকিতে কাপড় দেওয়ার বিষয়টি নির্ধারিত হয় বিশ্বস্ততার জায়গা থেকে। খরিদ্দার বিশ্বস্ত হলে বিক্রেতারা কোটি টাকার উপরেও বাকি দেয়। কাপড়ের বাজারে ধস নামলে বা বিক্রি-বাট্টা কমে গেলে অনেক ব্যবসায়ীর মূলধন বা পুঁজি আটকা পড়ে যায়।

ছবি: মেহেদি হাসান/ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের কাপড়ের হাটকে বলা হয় দেশের 'সবচেয়ে বড়' কাপড়ের হাট। এছাড়া, পাবনার 'আতাইকুলার হাট', সিরাজগঞ্জের 'সোহাগপুরের হাট', 'এনায়েতপুরের হাট' ও টাঙ্গাইলের 'করটিয়ার হাট' প্রসিদ্ধ ও বিখ্যাত। তবে এ হাটগুলোর তুলনায় শাহজাদপুর হাটের বিশেষত্ব হল এখানে গ্রে কাপড়ের চেয়ে প্রক্রিয়াকৃত কাপড়ের বাজার ভালো।

গ্রে-কাপড় মানে তাঁত থেকে সদ্য নামানো কাপড়। এ ধরনের কাপড় সরাসরি পরিধানের উপযুক্ত নয়। এ কাপড়ের অসুবিধা হল এটিকে ক্যালেন্ডারিং করে খুচরা বাজারে ছাড়তে হয়। তাই, বিদেশি বা বহিরাগত খরিদ্দাররা একদম রেডিমেড কাপড় কিনতে বেশি আগ্রহী হয়। আর শাহজাদপুর কাপড়ের হাট রেডিমেড কাপড়ের জন্য প্রসিদ্ধ। তবে, সিরাজগঞ্জের অন্য দুই বড় হাট, সোহাগপুর ও এনায়েতপুর হাটে গ্রে কাপড় বেশি চলে। শাহজাদপুরের অনেক পাইকার সেখান থেকে গ্রে কাপড় নিয়ে এসে প্রক্রিয়াজাত করে কাপড়ের গায়ে নিজেদের ব্র্যান্ডের লোগো লাগিয়ে বাজারে ছাড়ে।

শাহজাদপুর কাপড়ের হাট এক বিস্তৃত মহাযজ্ঞ। প্রতিবছর এ হাটের ইজারা ডাকে শাহজাদপুর পৌরসভা। হাটটি পৌরসভার দ্বারিয়াপুর গ্রামের অন্তর্গত হওয়ায় পৌরসভা হাট ডাকার এখতিয়ার লাভ করেছে। একজন ব্যক্তির নামে একটি গোষ্ঠী হাটের ইজারা ধরে থাকে। সাধারণত প্রতিবছর স্থানীয় প্রভাবশালী তথা সরকারদলীয় ব্যক্তিবর্গই আর্থিক প্রতিপন্নতার দিক দিয়ে সবাইকে ছাপিয়ে হাটের ইজারা গ্রহণ করে। এবছর, হাট ইজারার সর্বোচ্চ ডাক উঠেছিল প্রায় ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

যারা বা যিনি হাটের ইজারা লাভ করেন, তারা হাটকে আবার কয়েকজনের ভেতর বণ্টন করে দেন। এ বণ্টনটি করা হয় হাটের গলি ধরে ধরে। গলিগুলোকে পট্টি নামেও ডাকা হয় অনেকসময়। যারা হাটের গলিগুলোর ইজারা লাভ করেন তারা স্ব স্ব গলিগুলো থেকে বিভিন্ন খাজনা, চাঁদা উত্তোলন করে থাকেন। সেখান থেকে মূল ইজারাদারকে কিছু প্রদান করা হয়। উদ্বৃত্ত অংশটি তাদের লভ্যাংশ।

এ বিষয়ে 'শাহজাদপুর তাঁতবস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতি'-র সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সাজু দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'খাজনা বা চাঁদার বিনিময়ে ইজারাদারেরা হাটে শৃঙ্খলা বিধান করেন এবং ব্যবসায়ীদের ব্যবসাজনিত নিরাপত্তার দ্বায়িত্ব পালন করেন। ইজারাদারদের দ্বায়িত্বপালনে অনিয়ম ও অন্যায়ভাবে অতিরিক্ত খাজনা উত্তোলনের ব্যাপারে অনেকসময় ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ অভিযোগ তোলেন। আমি নিজেও একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীদের সকল ন্যায্য দাবি-দাওয়া আদায় ও সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাই আমাদের সংগঠনের উদ্দেশ্য'। 

এখন আর পুরোপুরিভাবে সরকারি ইজারাকৃত জায়গার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই শাহজাদপুর কাপড়ের হাট। সরকারি জায়গার পাশ দিয়ে গড়ে উঠেছে বড় বড় লুঙ্গি-কাপড়ের মার্কেট। সেখানে দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা পরিচালনা করেন।  

হাটের মধ্যে বড় দোকানের পাশাপাশি গলিগুলোতেও উন্মুক্ত দোকানে কাপড় বিক্রি করা হয়। ছোট এসব দোকানকে বলা হয় 'বিট'। বিটের মধ্যে জলচৌকির উপর কাপড় নিয়ে বসেন বিক্রেতারা। ক্রেতারা কাপড় পছন্দ করে দরদাম শুরু করেন। দামে পোষালে গোডাউন থেকে চাহিদামত কাপড় এনে দেওয়া হয়।

হাটের বিক্রি-বাট্টা ও সার্বিক পরিস্থিতির ব্যাপারে শাহজাদপুর তাঁতবস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রকিবুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা যায়, মোটামুটি প্রতি হাটে ১৫০-২০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা টিটি ও এলসির মাধ্যমে কেনাকাটা করেন। বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড ব্যবসায়ীদের কেনাকাটা নিয়ন্ত্রণ করে। শাহজাদপুর তাঁতবস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতি থেকে ব্যবসায়ীদের মূল্য পরিশোধের ব্যাপারে সাহায্য করা হয়। বিদেশি ব্যবসায়ীরা শাহজাদপুর থেকে কেনা কাপড় প্রধানত যশোরের বেনাপোল ও সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে পার করেন। ইদানীং চাঁপাইনবাবগঞ্জ দিয়েও পণ্য পারাপার শুরু হয়েছে।

রকিবুল ইসলাম শাহজাদপুর হাটের ব্যবস্থাপনা ও খ্যাতির ব্যাপারে খানিকটা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আজকাল মঙ্গল-বুধবারের হাটে টাঙ্গাইলের করোটিয়া হাটের বিক্রি বেড়েছে। শাহজাদপুরের পাইকারদের কেউ কেউ ঐদিকে যাচ্ছে, কারণ সেখানে অতিরিক্ত খাজনা বা চাঁদা দিতে হয় না।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট কাপড় ব্যবসায়ী শাহজাহান আনসারী জানান, করোটিয়া হাটের হাটপ্রতি লেনদেনের পরিমাণও শাহজাদপুর হাটের কাছাকাছি। প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। 

দেশের অন্যতম বৃহত্তম কাপড়ের হাট নরসিংদীর বাবুর হাট খুচরা বিক্রি-বাট্টার বিশাল এক ক্ষেত্র। এখানে সমানতালে পাইকারি বিক্রিও চলে। খুচরা বিক্রির কারণে বিভিন্ন উৎসবের আগে লেনদেনের পরিমাণ ব্যাপকহারে বেড়ে যায়। বাবুর হাটে হাটপ্রতি লেনদেনের পরিমাণ মোটামুটি ১৫০ কোটির কাছাকাছি। কোনো কোনো ইদের আগে এ পরিমাণ দ্বিগুণে গিয়ে দাঁড়ায়।

সিরাজগঞ্জের অন্য দুটি হাট সোহাগপুর ও এনায়েতপুরের হাট শাহজাদপুর হাটের মতো বিরাট না হলেও শাহজাদপুরেরই অনেক ব্যবসায়ী সেখান থেকে গ্রে কাপড় নিয়ে এসে প্রক্রিয়াজাত করে নিজেদের ব্র্যান্ডের মার্কা লাগিয়ে খুচরা ও পাইকারি বাজারে বিক্রি করে।

ছবি: মেহেদি হাসান/ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

শাহজাদপুরসহ যেকোন বড় পাইকারি হাটে তাঁতজাত পণ্যগুলো একটি একটি পিছ হিসেবে বিক্রি হয় না। শাড়ি, লুঙ্গির জন্য আলাদা আলাদা ইউনিট রয়েছে। শাড়ি বিক্রি করা হয় জোড়া হিসেবে। লুঙ্গির ইউনিট থান। চার পিছ লুঙ্গিতে এক থান।

'প্রিয়াংকা শাড়ি ঘর'-এর মালিক আব্দুস সালামকে শাড়ি-লুঙ্গির দামের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি একটি মজার তথ্য জানান। তিনি বলেন, 'পাইকারি বাজারে আমরা শাড়ি-লুঙ্গি বিক্রি করি জোড়া, পেটি, থান হিসাবে। কেউ শাড়ির দাম জিজ্ঞাসা করলে এক জোড়া শাড়ির দাম বলা হয়, আর লুঙ্গির ক্ষেত্রে এক থান, মানে, চারটা লুঙ্গির দাম বলা হয়। বাইরে থেকে কেউ এসে শাড়ি-লুঙ্গির দাম জিজ্ঞাসা করলে প্রায়ই কনফিউজ হয়।

থান, জোড়া ছাড়াও আরেকটি একক হিসাব করে তাঁতের পণ্য বিক্রি করা হয়। সেটি হল – পেটি। তবে, শাড়ি ও লুঙ্গির পেটির হিসাব আলাদা। ৬ টি শাড়িতে এক পেটি ও ১০ টি লুঙ্গিতে এক পেটি হিসাব করা হয়। অর্থাৎ, আড়াই থান লুঙ্গি বা তিন জোড়া শাড়িতে এক পেটি হয়ে থাকে। পাইকারি বেচাকেনার ক্ষেত্রে পেটি একক হিসেবে বিবেচিত হয়। যত বড় এককে পণ্য কেনা যায় দাম তত সাশ্রয় হয়। 

তাঁতজাত পণ্য উৎপাদন ও বিপণনের আরেকটি একক হল হাত। যেমন – বারো হাত বা সাড়ে বারো হাত শাড়ি, সাড়ে পাঁচ হাত বা ছয় হাতের লুঙ্গি, আড়াই হাতের গামছা ইত্যাদি। উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলের শাড়ি লম্বায় খানিকটা শাহজাদপুরের শাড়ির চেয়ে বড় হয়।

শাহজাদপুর কাপড়ের হাটে সর্বাধিক প্রচলিত শাড়ির ধরনের মধ্যে রয়েছে হাফসিল্কের শাড়ি, হাইব্রিডের শাড়ি, জামদানি শাড়ি প্রভৃতি। হাইব্রিড সুতা হাফসিল্কের চেয়ে খানিকটা মোটা। দামে অবশ্য খুব বেশি পার্থক্য নেই। জামদানি শাড়ির মূল্য সবচেয়ে বেশি। শাড়ির দামের পার্থক্য হয় কাপড়ের কাউন্টের পার্থক্যের কারণে।

কাউন্ট একপ্রকার কাপড়ের ঘনত্বের হিসাব। কাপড়ের মিটারের দৈর্ঘ্যকে গ্রামের ওজন দিয়ে ভাগ করলে সুতার কাউন্ট বের হয়। ২০০ কাউন্টের সুতার অর্থ ১০০০ মিটার সুতার ওজন হবে মাত্র ২ গ্রাম। কোনো কাপড়ের সুতার কাউন্ট যতবেশি সে কাপড় তত বেশি মিহি। পাতলা কাউন্টের কাপড়ের দাম বেশি হয়।

হাফসিল্ক এবং হাইব্রিড শাড়িগুলোর শাড়িপ্রতি উৎপাদন খরচ পড়ে মোটামুটি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা যেগুলো জোড়াপ্রতি ২২০০ থেকে ২৬০০ টাকায় বিক্রি হয়। জামদানি শাড়ির উৎপাদন ও বিক্রির মূল্যে ব্যাপক বিচিত্রতা দেখা যায়। শাহজাদপুর কাপড়ের হাটে ১৫০০ থেকে ৪০০০০ টাকার জামদানি পাওয়া যায়। ইদানীং প্রিন্ট কাপড়ের বিক্রি বেড়েছে। তাঁতে কাপড় তৈরি করে সেগুলোর ওপর বাইরে থেকে প্রিন্ট করানো হয়। 

শাহজাদপুর কাপড়ের হাটের জামদানি শাড়ির সবচেয়ে বড় বাজার হামিদ মার্কেট। অন্যান্য প্রসিদ্ধ মার্কেটগুলোর মধ্যে রয়েছে চৌধুরী প্লাজা, সরকার মার্কেট, বিশ্বাস মার্কেট, হায়দার শাড়ি হাউজ, বক্কার প্রিন্টিং হাউজ, মামা-ভাগিনা মার্কেট, কুরবান মার্কেট, হায়দার মার্কেট, নায়েব মার্কেট, আবুল মার্কেট ইত্যাদি। শেষোক্ত মার্কেটটি লুঙ্গির জন্য বিখ্যাত।
এ মার্কেটগুলোর দু'একটি দোকানে ইন্ডিয়ান বেনারসী, বাম্পার, চুমকিসহ কয়েকপ্রকার ভারতীয় শাড়ি পাওয়া যায়। স্বাভাবিকভাবে ভারতীয় শাড়ি মহিলাদের পছন্দের দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও বিয়ের মরসুমে বেনারসির বিক্রি বেড়ে যায়। বাহারি ধরনের সূক্ষ্ম কারুকাজ বেশি থাকায় দামে বেশি পড়লেও মহিলাদের কারো কারো ঝোঁক ভারতীয় শাড়ির দিকে থাকে। 

শাহজাদপুর কাপড়ের হাটে এক থান ভালো মানের লুঙ্গির দাম পড়বে ২৪০০ থেকে ৪০০০ টাকা। তবে ৭০০-৮০০ টাকা থানের লুঙ্গিও এই হাটে পাওয়া যায়। একসাথে এক থান লুঙ্গি বা এক জোড়া শাড়ি কিনলে দাম কিছুটা কম পড়বে। খুচরা দোকানগুলোয় দাম একটু বেশি। তবে, দরদাম করলে কমদামে কেনা সম্ভব। 

ঐতিহ্যবাহী এই হাটের বদৌলতে স্থানীয় পরিবহন ও পর্যটন শিল্পের উন্নতি ঘটেছে। হাটের চারদিক দিয়ে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় আবাসিক-অনাবাসিক হোটেল ও খাবারের দোকান। সে দোকানগুলোয় স্বল্পমূল্যে ভালো মানের খাবার পাওয়া যায়। কাপড়ের আড়তদার আর ব্যবসায়ীদের একটি প্রিয় খাবার 'দই-চিড়া'। হাটবারে 'মোদক', 'বসাক', 'পাল' 'সাহা' মিষ্টান্নভাণ্ডারের মতো মিষ্টান্নের দোকানগুলো স্পেশাল দই-চিড়ার আয়োজন করে।

প্রায় সকল ব্যবসায়ীর মুখেই শোনা যায়, তাঁতশিল্পের অবস্থা ভালো নয়। এর নেপথ্য কারণের ব্যাপারে তাঁতি ও ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন করা হলে প্রথমেই তারা বলেন, 'সুতোর দাম বেড়েছে কিন্তু কাপড়ের দাম বাড়েনি। মানুষের রুচির পরিবর্তন হচ্ছে। তারা আর তাঁতের কাপড় পড়তে অভ্যস্ত ও আগ্রহী নয়। দেশের মধ্যে বিদেশি কাপড়ের অত্যাধিক প্রসার তাঁতশিল্পকে হুমকির মধ্যে ফেলেছে। 
বিদেশি মেশিন চালিত তাঁত বা পাওয়ার লুম অনেক তাঁতিকে কর্মহীন করেছে। শীতের মৌসুমে তাঁতজাত পণ্যের বাজার ঘাটতির মধ্যে থাকে। তাঁতি ও ব্যবসায়ীদের ব্যবসা রমরমা থাকে ইদ, পূজা-পার্বণ বা কোনো অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে। সেসবকে ঘিরেই এখনো প্রবল প্রতাপে ব্যবসা করে যাচ্ছেন এ হাটের ব্যবসায়ীরা।

Related Topics

অর্থনীতি / টপ নিউজ

সিরাজগঞ্জ / হাট / কাপড় ব্যবসা / ফিচার

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • হাজারো কোটি টাকার বিনিময়েও আবার ‘জ্যাক স্প্যারো’ হবেন না ডেপ!
  • 'ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো' হতে ডেপকে ২৭৮৯ কোটি টাকার প্রস্তাব ডিজনির!
  • ঘরে ঘরে জ্বর, ডা. এবিএম আব্দুল্লাহর পরামর্শ 
  • ইভ্যালির কাছে ২৫ কোটি টাকার পণ্য আছে
  • এক জাপানির গলফ ক্লাবের টানেই যেভাবে দেশে শুরু হলো লেন্সের উৎপাদন 
  • পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট খুলে টিকটকে ভিডিও, সেই যুবক আটক

Related News

  • কাক গণতন্ত্রী, মানুষের চেয়ে উত্তম প্রাণী
  • যে পোশাকে কাক বঙ্গভবনে আসে
  • কাক-কথা
  • ১৯১৬ সালে আমেরিকা সফরে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন আততায়ীদের টার্গেট
  • প্লেন স্পটারস বাংলাদেশ: মুরাদ হাসান ও তাঁদের ‘প্লেনধরা’ দল

Most Read

1
বিনোদন

হাজারো কোটি টাকার বিনিময়েও আবার ‘জ্যাক স্প্যারো’ হবেন না ডেপ!

2
বিনোদন

'ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো' হতে ডেপকে ২৭৮৯ কোটি টাকার প্রস্তাব ডিজনির!

3
বাংলাদেশ

ঘরে ঘরে জ্বর, ডা. এবিএম আব্দুল্লাহর পরামর্শ 

4
অর্থনীতি

ইভ্যালির কাছে ২৫ কোটি টাকার পণ্য আছে

5
অর্থনীতি

এক জাপানির গলফ ক্লাবের টানেই যেভাবে দেশে শুরু হলো লেন্সের উৎপাদন 

6
বাংলাদেশ

পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট খুলে টিকটকে ভিডিও, সেই যুবক আটক

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab