পাওমাং: নিভু নিভু শিক্ষাপ্রদীপকে যারা এখনও জ্বালিয়ে রেখেছেন

বান্দরবানের নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্রের পাদদেশে অবস্থিত এক ম্রো গ্রাম। পর্যটন কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গার ব্যবস্থা করতে গিয়ে গ্রামছাড়া হয় ম্রো গ্রামের বাসিন্দারা। এরপর তাদের নতুন বসতি গড়ে তোলে নীলগিরি পাহাড়ের পাদদেশে। কিন্তু পর্যটন কেন্দ্রের পাদদেশের বেশিরভাগ গ্রামে কোনো স্কুল ছিল না, শিশুরা ছিল শিক্ষা সুবিধাবঞ্চিত।
মিটিমিটি জ্বলছিল সে গ্রামের শিক্ষাপ্রদীপ
তবে বান্দরবানের লামা জেলার অদূরে চম্পাঝিরি গ্রামে দু-তিনটা ছোট টিলা মিলে একটি স্কুল করা হয়েছিল ২০১১ সালে। সরকারি-বেসরকারি যৌথ একটা প্রকল্পের স্কুল ছিল এটি। দেড় হাজার বেতনে সেখানকার শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আদতে স্কুলটি অচল অবস্থাতেই পড়ে থাকতো। মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরের এই গ্রামে অনেক চেষ্টা করেও কোনো শিক্ষক আনা গেলো না। গ্রামেও লেখাপড়া জানা তেমন কেউ ছিল না।
কিন্তু এ অঞ্চলের মানুষেরা শিক্ষানুরাগী। তাই বাচ্চাদের লেখাপড়া যেন একদম বন্ধ না হয়ে যায়, সেজন্য দায়িত্ব দেওয়া হলো একজনকে। তিনি ছিলেন সেখানকার সবচেয়ে লেখাপড়া জানা মানুষ। নাম, অং সাই চিং চাক। পড়ালেখা করেছেন মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত। সবাই তাকে 'রিংকু দা' বলে ডাকে। রিংকু ঐ অঞ্চলে গিয়েছি্লেন জুম চাষের খোঁজে। গ্রামবাসীরা তাকে অনুরোধ করলো, শিশুদের পড়ালেখা শেখাতে। কিন্তু কৃষিকাজের বাইরে খুব একটা সময় পেতেন না তিনি। ফলে প্রতিদিন মাত্র দুই ঘণ্টা করে পড়াতে পারতেন বাচ্চাদের।

সে প্রদীপ প্রজ্বলিত হলো পাওমাংয়ের হাত ধরে
এদিকে পাহাড়ে ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসেন রূপা দত্ত। এর আগেও তিনি ঘোরার জন্য কয়েকবার গিয়েছেন বান্দরবান। কিন্তু ২০১৩ সালে যখন একটি এনজিও থেকে গবেষণার কাজে রূপা সেখানে যান, তখন যেন নতুন করে তার ভিতর এক উপলব্ধি এলো।
'দু' বছর আগেও যখন এসেছি তখনও এই জায়গাগুলো অন্যরকম ছিল। এখন এসব জায়গা পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে। প্রকৃতির গায়ে ব্যবসায়িক আঁচড় লেগে যাচ্ছে। আমাদের আনন্দ-ফুর্তির কারণে এখানকার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই এলাকার মানুষগুলো কিন্তু পিছিয়েই রয়েছে', রূপা বলেন।
সে জায়গা থেকেই সেদিন রূপা দত্তের মাথায় এলো এই জনগোষ্ঠীর জন্য কিছু করার। এক্ষেত্রে 'শিক্ষা'র বিকল্প নেই। তাই চম্পাঝিরির সেই স্কুলটাকে আবার কীভাবে জাগিয়ে তোলা যায়, তা ভাবতে লাগলেন। একসময় নিজের চাকরি বাদ দিয়ে রূপা লেগে গেলেন এই স্কুল পুনর্গঠনের কাজে।

২০১৩ সাল। মাত্র একজন শিক্ষক দিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় স্কুলের যাত্রা। ২০১৪ সালে এক বছরের মধ্যে ক্লাস ফাইভের ছাত্ররাও ভর্তি হয়ে গেল। তবে একসময় একা একা আর সামলাতে পারছিলেন না রূপা। তখন (২০১৪ সালে) আরও কিছু বন্ধুদের (মিতি, রাজীব, রানা, সঞ্জয়) নিয়ে শুরু করলেন সম্মিলিত যাত্রা। ধীরে ধীরে স্বেচ্ছাসেবক সংখ্যা বাড়লো।
পাহাড়ের বুকে গড়ে তোলা এই স্কুলটির নাম পাওমাং। পাওমাং অর্থ 'ফুলবাগান'। স্কুলটিতে চাক, বাঙ্গালি, ত্রিপুরা, খুমি মিলে শিক্ষার্থী আছে। বাকি বেশিরভাগ ম্রো। তাই মাতৃভাষায় পড়ানোর জন্য ম্রোদের মাতৃভাষাকে ভিত্তি ধরে নেওয়া হয়। কারণ, সবার ভাষায় শিক্ষক পাওয়া কঠিন।
তখন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন রিংকু দা। রিংকু ওই এলাকার ক্রামা, খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ- সব সম্প্রদায়ের যৌথ অনুরোধে এবং এলাকাবাসীর অর্থায়নে শিশুদের পড়াচ্ছিলেন। তাদের উদ্যোগে স্কুলটি স্থায়ী চরিত্র নিতে শুরু করে। তখন মেনরং ম্রোও এই স্কুলে শিক্ষক হিসেবে আসেন।
মেনরং একবার বাচ্চাদের হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচিয়েছিলেন। চারজন শিশু এতে আহত হয়েছিল। পরে তাদের চট্টগ্রামে নিয়ে সম্পূর্ণ কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

আছে আলাদা আবাসিক
কিন্তু দুর্গম আর শিক্ষার চর্চা না থাকায় দেখা গেল, শিশুরা স্কুল থেকে বাসায় ফিরে আর পড়ালেখা করছেনা। তাদের লেখাপড়া স্কুল পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকছে। এতে করে তারা আবার সব ভুলে যায় এবং আগ্রহও কমে যায়। আবার, আশেপাশের গ্রামের শিশুরাও এখানে পড়তে আসতে লাগলো। তাই শিশুদের জন্য আলাদা আবাসিক ঘরের ব্যবস্থা করা হলো। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা করে কোচিংয়ের ব্যবস্থাও করা হলো।
এই সময়টাতে তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে গ্রামবাসীরা। এতগুলো শিশুর খাওয়ার ব্যবস্থা, থাকার ব্যবস্থা- এই জায়গাগুলোতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে প্রতিবেশীরাই। তারা যে যতটুকু পেরেছে সাহায্য করেছে। রূপা দত্ত জানান, 'আমাদের স্কুলের পড়াশোনার মান, সার্বিক ব্যবস্থা ভালো বলে, এলাকার কমিউনিটি লিডার, চেয়ারম্যান, মেম্বার যারা আছেন, তাদের কাছ থেকেও সাধ্যমত সাহায্য পাওয়া যায় মাঝে মাঝে।'
পাওমাংয়ের শিশুরা শুধু লেখাপড়াতেই সীমাবদ্ধ না, পাশাপাশি বিভিন্ন কারিগরি দক্ষতাও শিখে নিচ্ছে। সরকারি কারিকুলামকে বাস্তবভিত্তিক চর্চার মধ্য দিয়ে শিশুদের স্বনির্ভর করার চেষ্টা করা হয় এখানে। যেমন, ম্রো আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী পুঁতির গহনা বানানো, তাঁতে কাপড় বুনন, আদিবাসী নৃত্য এবং কারাতের আত্মরক্ষার কৌশল। তারা নিজেদের পোশাক নিজেরাই তৈরি করে।নিজেরা খাবার পরিবেশন করে। এছাড়াও ঐতিহ্য অনুসরণ করে শিখছে জুম চাষ।
স্কুলটির প্রধান শিক্ষক লেংরিন ম্রো জানান, 'আমাদের যেকোনো প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীদের সফলতার জন্য, জেলা পরিষদ থেকে বিভিন্ন ট্রেনিং করানো হয়। এছাড়া আমরা শিশুদের ঘরের কাজের বাইরেও, নানা কাজ যেমন, বাঁশ-বেতের কাজও শিখিয়ে থাকি। আবার রান্না বান্নাও শিখিয়ে থাকি।'

তাছাড়া এই হোস্টেলে সবাই যত্ন নেয়, ভালোবাসে। বড় সদস্যরা নিজেদের ভাইবোনের মতো করে যত্ন নেয় ছোট সসদ্যদের। যেমন- তৃতীয় শ্রেণির ছাত্ররা প্রথম শ্রেণির ছাত্রদের গোসল করতে সাহায্য করে।
ভরসার জায়গা হয়ে উঠছে পাওমাং
পাওমাং স্কুলের অর্থ সরবরাহের ব্যবস্থা খুব অনিশ্চিত হলেও এখানকার শিক্ষক এবং শিক্ষাপদ্ধতি যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য। তাই আশপাশের আরও কিছু স্কুল এখানে আসে নানা বিষয়ে সহযোগিতা নিত। এখানকার শিক্ষকরা আরও স্কুল বানিয়েছেন অন্যান্য দুর্গম এলাকায় গিয়ে। মেনরং লামাতেই শুরু করেছেন আরেকটি স্কুল পাওমুম। মোট তিনটি গ্রামে চালু আছে প্রাক্-প্রাথমিক স্কুলব্যবস্থা। আর প্রাথমিক স্কুল হিসেবে আছে পাওমাং। তবে সমস্যা দেখা দিয়েছিলো এসব বাচ্চাদের মাধ্যমিক পর্যায়ের লেখাপড়া নিয়ে। কোনো মাধ্যমিক স্কুল না থাকায়, শিশুদের লেখাপড়া প্রাথমিক পর্যন্তই আটকে যেতে লাগলো। তাছাড়া শহরে গিয়ে কীভাবে নতুন স্কুলে ভর্তি করাতে হবে সেই বিষয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে কোনো ধারণা নেই। ফলে বড় হয়ে যাওয়া ছেলেমেয়েরা পাওমাং স্কুলের ব্যবস্থাপনাতেই বান্দরবান শহরের হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করছে। বর্তমানে সেখানে আবাসিক শিক্ষার্থী আছে ৩৭ জনের মতো। আর চম্পাঝিরি পাওমাং শিশু সদনে (আবাসিক ঘর)আছে ৬৫ জন।
বর্তমানে পাওমাং প্রাথমিক স্কুলটিতে আছে ৮৫ জন।
২০২০ সালে পাওমাং প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসি পাশ করে, ২০২১ সালে ছোট্ট মেয়ে চেরপাও ভর্তি হয় বান্দরবান শহরের ডন বস্কো স্কুলে। বান্দরবান শহরে অবস্থিত পাওমাং স্কুলের শিক্ষক এবং স্বেচ্ছাসেবক দ্বারা পরিচালিত পাওমাং শিশু সদনে থেকে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে সে। সেই ছোট্ট চেরপাও এখন ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী। কিন্তু বাড়ি থেকে দূরে আর দুর্গম এলাকায় স্কুল থাকায় একপর্যায়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল চেরপাওয়ের লেখাপড়া। পাওমাং স্কুলের শিক্ষক, স্বেচ্ছাসেবকদের চেষ্টায় চেরপাও আবার ফিরে আসে লেখাপড়ায়। সেখানে হোস্টেলে থেকে মেয়েটি লেখাপড়া শেখে। বড় হয়ে পেশা হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিতে চায় সে।

আরেক ছাত্র মেনথই পরিবারের একমাত্র ও প্রথম লেখাপড়া জানা শিশু। তার বড় তিন ভাইবোন লেখাপড়ার সুযোগ পায়নি। কিন্তু মেনথইয়ের পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ অনেক। আর পাওমাং মেধাবী শিশুর চেয়ে, আগ্রহী শিশুদের নিয়েই কাজ করে থাকে। তাই মেনথইও ভর্তি বাছাইয়ের টিকে যায়। এখন সে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। স্বপ্ন দেখে ডাক্তার হবার।
জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেছে কমক্লাই ম্রো। শুধু তাই নয়, ঢাকায় আয়োজিত ৪র্থ জুজুটসু প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক অর্জন করেছে। সংগীত, নৃত্য, কারাতে, লেখাপড়া, ঘরের কাজ সবকিছুতেই সে পারদর্শী। সে ছিল পাওমাং স্কুলের প্রাক্তন আবাসিক ছাত্রী।
শিশুদের বিকাশে চেষ্টার কোনো কমতি নেই
স্বেচ্ছাসেবক রূপা দত্ত জানান, 'আমরা স্কুলের সাথে যুক্ত হই ২০১৩ সালে। এখানে যে শিক্ষার পরিবেশ, তা অনেকেরই পছন্দ হলো, আশেপাশের মানুষ পাঠাতে শুরু করলো বাচ্চাদের। পাড়ার মানুষ তখন নিজেদের ঘরে শিশুদের রেখে পড়ানো শুরু করলো।'
হোস্টেল এবং স্কুল দুটো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য এখানে একটা রুটিন মেনে চলা হয়।
এখানে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের একটি দলের আওতায় রাখা হয়। প্রতিটি দলে একজন করে দলনেতা থাকে। দলনেতারা তাদের দলকে দিক নির্দেশনা দিয়ে দায়িত্ব পালন করে থাকে। দীর্ঘদিন একসাথে থাকার পর, তাদের একেক জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি, রীতিনীতি প্রভৃতি সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা লাভ করে। একে অপরের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং উৎসবের একটা গ্রহণযোগ্যতাও তৈরি হয় শিশুদের মাঝে। ফলে পরিবার, সমাজ, দেশের জন্য একজন আদর্শ মানুষ হয়ে উঠতে গোড়া থেকেই এই শিক্ষাগুলো তাদের দেওয়া হচ্ছে বলে জানান একজন স্বেচ্ছাসেবক।

প্রথমদিকে বিদ্যুতের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। তখন কেরোসিন দিয়ে জ্বালিয়ে বাচ্চাদের লেখাপড়া করানো হতো। এখন বর্তমানে সৌরবিদ্যুতের সাহায্যে বাচ্চারা পড়ালেখা করছে। এখানে ইন্টারনেটের সুবিধা খুবই কম। তারপরও স্বেচ্ছাসেবকরা চেষ্টা করা যাচ্ছেন, ল্যাপটপের মাধ্যমে যতটুকু সম্ভব, শেখানোর।
করোনার সময় লকডাউনের প্রথম ছয়মাস বন্ধ ছিল পাওমাং প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ছেলেমেয়েরা বাড়ি ফিরে গিয়ে লেখাপড়া থেকে দূরে সরে যাওয়ায়, এরপর সিদ্ধান্ত বদল করা হয়। হোস্টেলে রেখেই তাদের একজন স্বেচ্ছাসেবক চিকিৎসক বাবর আলীর মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে, পড়ালেখার পাশাপাশি হোস্টেল চালিয়ে নেওয়া হয়েছিল তখন।
এই স্কুলটা প্রথম থেকেই 'গণতান্ত্রিক'। নিজস্ব স্কুল কমিটি আছে, হোস্টেল কমিটি আছে। এই কমিটিগুলোর সাথে পাড়ার লোক, গ্রামের অভিভাবক সকলেই যুক্ত আছেন।
পরবর্তীতে আরও কয়েকটি স্কুল করা হয়। মোট ৬টা স্কুল শুরু করেছিলেন তারা। কিন্তু দুর্গমতা, আর অপর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার অভাবে শেষ পর্যন্ত তিনটে প্রতিষ্ঠান টেকে। একটি হলো, পাওমাং প্রাথমিক বিদ্যালয়, এর আবাসিক হোস্টেল ও সদরে থেকে পড়াশোনা চালানোর জন্য একটি হোস্টেল।
স্কুলটি বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের আওতায় চলে এসেছে। কিন্তু পার্বত্য অঞ্চলের ভূমিসংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতা থাকার কারণে স্কুলটি এখনো রেজিস্টার্ড নয়। আবাসিক হোস্টেলটিকেও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনতে চেষ্টা করে যাচ্ছে পাওমাং কর্তৃপক্ষ।

এখনো বাকি অনেকটা পথ
২০১৩ থেকে শুরু হলেও পাওমাং পরিবার এখনো তাদের আশানুরূপ পর্যায়ে যেতে পারেনি। এখানে প্রতিশিশুর জন্য পরিবার থেকে বাৎসরিক খাবার খরচ নেওয়া হয় ছয় থেকে সাত হাজার টাকা। যারা নগদ টাকা দিতে পারেন না, তারা সমমূল্যের বিভিন্ন তরকারি বা অন্যকিছু দিয়ে থাকেন। তবে যাদের একেবারেই সামর্থ্য নেই, তাদের সন্তানদের বিনামূল্যেই এখানে পড়ানো হয়।
এছাড়া কালারিং লিটল মাইন্ড, ভার্টিকাল ড্রিমার্স এবং ক্র্যাক প্লাটুনসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী এবং শুভাকাঙ্ক্ষী প্রতিষ্ঠানগুলো সাধ্যমত আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল।
এত অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়েও লেংরিন ম্রো স্বপ্ন দেখেন পাহাড়ের এই মানুষগুলোর জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যতের। তিনি বলেন, 'যারা সহযোগিতা করছেন, তাদের কারণেই আজ যেখানে আছি তাও হয়তো সম্ভব হতো না। এখানকার শিশুরা স্বাবলম্বী হয়ে একদিন আবার নিজেদের গোষ্ঠীতে ফিরে আসবে। আশেপাশের মানুষগুলোর জন্য কাজ করবে, তাদের কথা ভাববে।'