কল্লুরের খনি থেকে যেভাবে ব্রিটিশ রাজমুকুটে ঠাঁই হলো কোহিনুরের
প্লাটিনামের ফ্রেমের ওপর ২,৮০০টি হীরা বসিয়ে তৈরি করা হয়েছে ব্রিটেনের রাজমুকুট। তার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত, ও বিতর্কিত হীরাটি হচ্ছে কোহিনুর।
১৯৩৭ সালে রাজমুকুটে এ হীরাটি সংযুক্ত করা হয়। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ এ কোহিনুরের মুকুট পরে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য শাসন করেছিলেন দীর্ঘ ৭০ বছর। গত বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) ৯৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
কোহিনুর হীরাটি 'আলোর পাহাড়' নামেও পরিচিত। অভিষেকের সময় কোহিনুর পরে রাজা তৃতীয় চার্লসের পাশে বসবেন রানি ক্যামেলিয়া।
এর আগে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, ক্যামেলিয়া কুইন কনসর্ট হিসেবে সম্বোধিত হবেন। আর তাই রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেকের দিনই রানির মাথায় শোভা পাবে মুকুটটি।
কোহিনুরের বিতর্কিত ইতিহাস
১৪ শতকে গোলকুণ্ডা সালতানাতের সময় ভারতের কৃষ্ণা নদীর তীরে অবস্থিত কল্লুর খনিতে হীরাটি প্রথমবার পাওয়া গিয়েছিল। কয়েক শতাব্দী ধরে এ হীরার মালিকানা বারবার বদল হয়েছে।
মুঘল, ইরানি, আফগান, ও পাঞ্জাব শাসকদের মধ্যে অনেকবার হাতবদল হয় হীরাটির। অস্পষ্ট ইতিহাসের তথ্যমতে, ১৯৪৯ সালে অ্যাংলো-শিখ যুদ্ধে হেরে যাওয়ার পর লাহোরের মহারাজা ইংরেজদের সঙ্গে এক শাস্তিমূলক সন্ধি করতে বাধ্য হন। তখনই সন্ধির শর্ত মোতাবেক কোহিনুর দখল করে ব্রিটিশরা। লাহোরের মহারাজ দুলীপ সিংকে ভারত ছেড়ে ব্রিটেনে চলে যেতেও বাধ্য করা হয় এ লড়াইয়ের পর।
প্রাথমিকভাবে হীরাটি ছিল ১৮৬ ক্যারটের। কিন্তু হীরার নকশা ব্রিটিশদের পছন্দ হয়নি। এরপর উপবৃত্তাকার আকৃতিতে হীরাটিকে নতুন করে কাটা হয়। এর ফলে হীরার মূল ভরের ৪০ শতাংশ হারিয়ে যায়।
এরপর থেকেই ব্রিটেনের কাছে রয়েছে হীরাটি। তবে ভারত, ইরান, আফগানিস্তান, ও পাকিস্তান এ হীরার মালিকানা দাবি করে আসছে।
কোহিনুর নিয়ে অনেক মিথ চালু আছে। যেমন একটি মিথ অনুযায়ী, কোনো পুরুষ বেশিদিন এটি ধারণ করলে তার কপালে দুর্ভাগ্য তৈরি হয়। কেবল একজন নারী ও দেবতাই কোনো ক্ষতি ছাড়া এ হীরা ধারণ করতে পারবেন। ১৪ শতকে কোহিনুর পরিধান করা অনেক রাজা অল্প বয়সে মারা যাওয়ার পর এ মিথটি তৈরি হয়।
সূত্র: দ্য লজিক্যাল ইন্ডিয়ান