হোসেনী দালানের শিয়া ক্যালেন্ডার: বিয়ে, ব্যবসা, বাড়ি নির্মাণ কোন দিনে শুভ?
ভারতবর্ষের অন্যতম প্রাচীন ইমামবাড়া ঢাকার হোসাইনী দালান। ১৬৪২ সালে শাহ সুজার নৌ কমান্ডার মীর মুরাদ এটি প্রতিষ্ঠা করেন। দালান চত্বরে প্রাপ্ত শিলালিপি এ কথার সাক্ষ্য দেয়।
শাহ সুজা (১৬১৬-১৬৬১) তখন ছিলেন বাংলার সুবাহদার বা ভাইসরয়। সুজা ছিলেন সম্রাট শাহজাহান ও সম্রাজ্ঞী মুমতাজমহলের দ্বিতীয় পুত্র। বাংলার সুবাদার ছিলেন ১৬৩৯ থেকে প্রায় ২০ বছর প্রায়।
সুজাকে জ্ঞানী ও সংস্কৃতবান বলে উল্লেখ করেছেন ইতিহাসবিদরা। অনেক ফারসি কবি ও পন্ডিত তার দরবার অলংকৃত করেছেন যাদের অধিকাংশই ছিলেন ইরান থেকে আগত এবং শিয়া মতাবলম্বী। একজন যেমন নাজাফের মির সাইয়িদ শাকরুল্লাহ আল-হুসাইনি যার উত্তরসূরী একজন, ছোট্টেন নবাব নামে পরিচিত, বেচারাম দেউড়ির কাছে আবুল হাসনাত রোডে তাদের বিশাল ভূসম্পত্তি, সেখানে মোহাম্মদী বেগম ইমামবাড়াটি প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল ১৭০৭ সালে।
উল্লেখ্য, মোগলরা বিদেশী কর্মচারী রাখতে পছন্দ করত, কারণ তারা অনুগত থাকত। যেমন সুজার প্রধান পারিষদ ও অধস্তন কর্মচারীদেরও বেশিরভাগ ছিল শিয়া।
সুজার মা এবং দুই স্ত্রীও ছিলেন শিয়া অনুসারী। বলা হয়ে থাকে, তিনি বাংলায় আসার সময় তিনশত শিয়া নিয়ে আসেন এবং বাংলার বিভিন্ন এলাকায় তাদের বসবাসের ব্যবস্থা করেন।
সুজার সময় সুবে বাংলার রাজধানী ছিল ঢাকা। তার আমলে বড় কাটরা, চুড়িহাট্টা মসজিদ নির্মিত হয়।
সুজার আমলেরও আগে ঢাকায় একটি ইমামবাড়া প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ফরাশগঞ্জের বিবি-কা-রওজা নামের এ মাতমখানা ১৬০০ সালে নির্মিত। সম্রাট জাহাঙ্গীর ছিলেন তখন দিল্লীর মসনদে। জাহাঙ্গীর ইব্রাহিম খান ফতেহ জঙ্গ নামের এক শিয়া কর্মচারীকে বাংলার সুবাহদারিত্ব দিয়েছিলেন ১৬১৭ সালে। তার সঙ্গেও এ মতের অনুসারী অনেক কর্মচারী ঢাকা এসেছিলেন।
কোম্পানি আমলে মির আশরাফ আলী (১৮২৯ সালে মৃত্যু) ঢাকায় আসেন। তিনি ছিলেন শিরাজ থেকে আগত একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান। ঢাকা, কুমিল্লা, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামে তার ছিল প্রভূত সহায়সম্পত্তি। অধীনস্থ কর্মচারীও ছিল অনেক। তিনি ঢাকায় অনেক দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন।
বাংলাদেশের খুব সম্ভ্রান্ত একটি শিয়া পরিবার বসতি নিয়েছিল মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার পৃথিমপাশায়। সেটা ছিল সুলতানী আমল, ১৪৯৯ সাল। তারা বিরাট জমিদারির অধিকারী হয়েছিল, বৃহত্তর সিলেটের অন্যতম একটি প্রধান পরিবারে পরিণত হয়েছিল। ত্রিপুরার রাজা এই পরিবারের আতিথ্য নিয়েছিলেন। এই পরিবারের এক জমিদার নবাব আলী আমজদ খানে ঘড়ি এখনো বহাল আছে সুরমার তীরে। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভী ১৯৫১ সালে পৃথিমপাশা রাজবাড়ির অতিথি হয়েছিলেন।
মহররমের তাজিয়া মিছিল সেই নবাবদের আমল থেকে আজ পর্যন্ত ঢাকায় জমজমাট। উল্লেখ্য, ইমামবাড়া হলো ইমামের বাড়ি যেটি হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর দৌহিত্র ইমাম হুসাইনের স্মরণে নির্মিত। এখানে শিয়া মুসলমানরা শোক পালনের উদ্দেশ্যে মহররমের ১০ তারিখ বা আশুরায় সমবেত হয়। ইমামবাড়ার কক্ষগুলোয় সাধারণত কারবালা ময়দানের মানচিত্র , যুদ্ধক্ষেত্রের কাল্পনিক দৃশ্য, ঢাল-তলোয়ার, জিঞ্জির ইত্যাদি সরঞ্জাম টানিয়ে রাখা হয়।
আশুরখানা বা হোসেনিয়াও বলা হয় ইমামবাড়াকে। ঢাকার ফরাশগঞ্জ, আদাবর, পল্টন, মোহাম্মদপুরে যেমন; মানিকগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, অষ্টগ্রাম, সৈয়দপুর, ঠাকুরগাও আর সিলেটেও ইমামবাড়া আছে।
একসময় কেবল ঢাকাতেই ১৫টি ইমামবাড়া ছিল। ঢাকার হোসেনী দালানই বাংলাদেশের প্রধান বা কেন্দ্রীয় ইমামবাড়া। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে এটি বিধ্বস্ত হলে খাজা আহসানউল্লাহ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে এটি পুনঃনির্মাণ করেন। হোসাউনী দালানের শেষ সংস্কারসাধন ও সৌন্দর্যবর্ধন করা হয় ২০১১ সালে।
ক্যালেন্ডার প্রসঙ্গ
হোসাইনী ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন (প্রতিষ্ঠা ১৯৬৪ সাল) প্রতি বছর ইংরেজি সালের প্রথম দিনে একটি ক্যালেন্ডার প্রকাশ করে। তাতে ইংরেজি তারিখই লেখা থাকে বড় করে; তবে আরবি আর বাংলা তারিখও লেখা থাকে। আরবি মাসের বিভিন্ন তারিখ ধরে শিয়াদের পালনীয় মাতম দিবস ও খুশির দিবসের কথা লেখা থাকে।
এছাড়া শিয়া মতের ইমামদের জন্মতারিখ, বদর যুদ্ধ বা খাইবার যুদ্ধের বিজয়দিবসগুলো ক্যালেন্ডারে শুভ হিসাবে চিহ্নিত করা থাকে। কবে কোন দিন লেনদেন বা ভ্রমণের জন্য উত্তম নয় তাও চিহ্নিত আছে।
এই ক্যালেন্ডারটি নির্দিষ্ট সংখ্যায় ইংরেজি বছরের শুরুতেই প্রকাশ হয় এবং ছাপা হরফেই লেখা থাকে, 'বিক্রয়ের জন্য নহে'। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ক্যালেন্ডার ধরে এই লেখা।
ইংরেজি জানুয়ারি মাসটি আরবি জামাদিউল আউয়াল ও জামাদিউস সানি দুই মাসে বিস্তৃত। আউয়ালের ১৬ তারিখকে অশুভ (নাহাস) বলা হয়েছে তবে বাড়ি নির্মাণের জন্য উত্তম।
১৭ থেকে ২০ জামাদিউল আউয়াল শুভ (নেক)। তবে ১৭ তারিখে লেনদেন উত্তম নয় আর ১৮ তারিখ ভ্রমণের জন্য। এভাবে ২৬ তারিখ শুভ, তবে বিয়ে ও ভ্রমণের জন্য উত্তম নয়।
জামাদিউস সানির ১ তারিখ আবার অতি অশুভ (নাহাসে আকবার)। ৩ তারিখ হলো অশুভ, কারণ দিনটিতে মৃত্যু হয় হযরত ফাতেমা-তুজ যাহরার।
ফেব্রুয়ারি, মানে আরবি জামাদিউস সানি। এ মাসের ২০ তারিখ শুভ, কারণ তা ফাতেমা (রা.) এর জন্ম দিন। রজব মাসের ১ তারিখও শুভ কারণ তা ইমাম মুহাম্মদ বাকির জন্মদিন।
কিন্তু ৩ তারিখটিই অশুভ কারণ ইমাম আলী নাকী বা হাদীর শাহাদাত দিবস। তার জন্ম ২১২ হিজরি বা ৮২৮ খ্রিস্টাব্দে মদীনার উপকণ্ঠে। আহলে বাইতের ধারায় তিনি ছিলেন ১০ম ইমাম।
রজব মাসের ৫ তারিখ শুভ, কারণ তা ইমাম আলী নাকীর জন্মদিবস। ১০ তারিখ শুভ, কারণ তা হযরত ইমাম মুহাম্মদ তাকী এবং হযরত আলী আসগারের জন্ম দিন।
জাওয়াদ বা তাকী ছিলেন আহলে বাইতের নবম সদস্য। মদীনায় ১৯৫ হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাকী, মানে খোদাভীরু ছিল তার উপাধি। ইমাম রেজা ছিলেন তার পিতা। মায়ের নাম সাবিকাহ।
মার্চ, রজব মাস। এ মাসের ২০ তারিখ শুভ, কারণ সেটা বিবি সকিনার জন্মদিন। শিয়াজস্টাডিজডটকম থেকে জানা যাচ্ছে, সকিনা ছিলেন ইমাম হুসাইনের ছোট মেয়ে।
সকিনা হাসিখুশি ও মমতাময়ী ছিলেন। হুসাইন (রা.) প্রায়ই বলতেন, সকিনা ছাড়া ঘর যেন সুবাসহীন।
মহররমের দ্বিতীয় দিনে যখন ইয়াজিদের বাহিনী কারবালা প্রান্তর ঘেরাও করে ফেলল তখন হুসাইন তার বোন জয়নবকে বলেছিলেন, সেদিন বুঝি সমাগত যেদিন আমাকে ছাড়া সকিনাকে নিদ্রায় যেতে হবে।
১০ মহররম সকিনার জন্য পানি আনতে গিয়ে তার চাচা আব্বাস ফোরাতের তীর থেকে আর ফেরেননি। তারপর থেকে সকিনা কারুর কাছে পানি চাননি।
সকিনার পিতৃহারা হতেও সময় লাগেনি বেশি। তারপর মায়ের সঙ্গে তিনি ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে বন্দি হয়ে সিরিয়ায় নীত হন।
কারাগারের ঠান্ডা মেঝেতে শুতে গিয়েছিলেন এক রাতে। ফজরের সময় মা যখন তাকে ডাকতে যান, দেখেন সকিনার শরীর ঠান্ডা। মানে তিনি আর ইহজগতে নেই।
রজবের ২৩ তারিখও অশুভ। কারণ এদিন ইমাম হাসান (রা.) আহত হয়েছিলেন।
রজবের ২৪ তারিখটি শুভ, কারণ সেদিন খাইবার যুদ্ধে বিজয় লাভ করেছিল মুসলমানরা।
২৫ রজব অশুভ, কারণ এদিন ইমাম মুসা আল কাজিম শাহাদাত বরণ করেন। তিনি সপ্তম ইমাম। তার পিতা ইমাম জাফর আল সাদিক ছিলেন ষষ্ঠ ইমাম।
শাবান মাসের ৩ তারিখ শুভ, কারণ ইমাম হোসাইন এদিন জন্মগ্রহণ করেন। ৫ তারিখও শুভ, কারণ ইমাম যায়নুল আবেদীন এদিন জন্মগ্রহণ করেন। ইমাম হোসাইনের পুত্র ইমাম আলী ইবনুল হোসাইন যায়নুল আবেদীনের জন্ম ৩৬ হিজরীতে মদীনায়।
কারবালায় উপস্থিত ছিলেন যায়নুল। পরে বন্দি হিসাবে মরুর ওপর দিয়ে খালি পায়ে কুফা হয়ে দামেস্ক পর্যন্ত হেঁটে যেতে বাধ্য হন। পিতার শাহাদাতের পরেও তিনি ৩৪ বছর জীবিত ছিলেন। ৯৫ হিজরীতে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। তাকে জান্নাতুল বাকীতে কবরস্থ করা হয়। তিনি বলতেন, যার ধৈর্য নেই তার ইমানের অভাব রয়েছে।
রজবের ১৫ তারিখ ইমাম মাহদীর (আ.) জন্মদিন, তাই শুভ এ দিন। তিনি হলেন ১২ ইমামের শেষজন। তিনি শেষ যামানায় আবির্ভূত হবেন। তিনি হবেন ত্রাণকর্তা ও মুক্তির দূত। পৃথিবীকে তিনি অন্যায়-অবিচার-জুলুম-অত্যাচার থেকে রেহাই দিবেন। তার নাম মাহদী, কারণ তিনি নিজে হেদায়েতপ্রাপ্ত এবং অন্যকে হেদায়েতের পথ দেখাবেন।
১৬ রজবও অশুভ, তবে বাড়ি নির্মাণের জন্য দিনটি উত্তম।
শাবান ও রমজান দিয়ে এপ্রিল মাস বিভক্ত। শাবানের ২৮ ও ২৯ তারিখ বিবাহের জন্য উত্তম নয়।
রমজানের ১০ তারিখ অশুভ, কারণ হযরত খাদীজা (রা.) এদিন মৃত্যুবরণ করেন। রাসুল (সা.)-এর প্রথম স্ত্রী তিনি, ফাতেমা (রা.)-এর মা। খাদিজা ছিলেন কুরাইশদের নেতা খুওয়ালিদ ইবনে আসাদের কন্যা। নিজের চেষ্টাতেই তিনি একজন সফল ব্যবসায়ীতে পরিণত হন।
১৬ রমজান বাড়ি নির্মাণের জন্য শুভ। ১৭ তারিখ শুভ, কারণ সেদিন বদর যুদ্ধে বিজয় সূচিত হয়। মে মাসে রমজানের কিছু আর শাওয়ালের কিছু ভাগ আছে।
রমজানের ২০ তারিখ মুসলমানরা মক্কা জয় করে। সেটি ছিল ৮ম হিজরী। অনেক ঐতিহাসিকদের মতে, এটি ছিল মুসলমানদের শ্রেষ্ঠ বিজয়, কারণ এর মধ্য দিয়েই রাসুল (সা.)-এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে সমগ্র আরববাসী।
শাওয়াল মাসের ৪ তারিখ ভ্রমণের জন্য উত্তম নয়। ১৫ তারিখ অশুভ, কারণ ইমাম জাফর সাদিকের শাহাদাত দিবস। তিনি আহলে বাইতের ষষ্ঠ ইমাম এবং অষ্টম শতকের একজন প্রখ্যাত পণ্ডিত। তিনি ইমাম আবু হানিফা ও মালিক ইবনে আনাসের শিক্ষক ছিলেন।
৮৩ হিজরীতে মদিনায় ইমাম জাফরের জন্ম। তার পিতার নাম ইমাম মুহাম্মদ বাকের। তিনি ৬৫ বছর বয়সে শাহাদাত বরণ করেন। তাকে সমাধিস্থ করা হয় মদীনার জান্নাতুল বাকীতে। উল্লেখ্য, ইমাম যায়নুল আবেদীন তার পিতামহ।
জুন মাসে শাওয়ালের এবং জিলকাদের ভাগ আছে। শাওয়ালের ২৭,২৮ ও ২৯ তারিখ বিবাহের জন্য উত্তম নয়, আবার জিলকাদের ৪ ও ৮ তারিখ ভ্রমণের জন্য উত্তম নয়।
জিলকাদ ও জিলহাজ্ব নিয়ে জুলাই মাস। জিলকাদের ২৬ তারিখটি বিবাহ ও ভ্রমণের জন্য শুভ নয় বলা হয়েছে।
জিলহাজ্ব মাসের ১ তারিখটি শুভ, এদিন হযরত ফাতেমা (রা.)-এর আক্দ সম্পন্ন হয়েছিল। ৭ তারিখটি অশুভ, কারণ ইমাম মুহাম্মদ বাকের এদিন শাহাদাত বরণ করেন। ১৫ তারিখ শুভ, কারণ ইমাম মুহাম্মদ তাকী জন্মগ্রহণ করেছেন। ১৬ তারিখ লেনদেনের জন্য ভালো নয়।
১৮ জিলহাজ্ব হলো ঈদে গাদীর। আলশিয়াডটওআরজি থেকে জানা যাচ্ছে, এই দিনে আলীকে (রা.) নিজের স্থলাভিষিক্ত করেন রাসুল (সা.)।
আগস্ট মাসে আছে জিলহাজ্জ এবং মুহাররম। জিলহাজ্বের ২৯ তারিখ বিবাহের জন্য উত্তম নয়।
মুহাররম মাসে কোনো শুভ কর্ম করা ঠিক নয়, বলা হচ্ছে ক্যালেন্ডারে।
মুহাররমের ১০ তারিখে কারবালা প্রান্তরে ইমাম হুসাইন ও তার সঙ্গীরা শাহাদাত বরণ করেন। এ মাসে অতি অশুভ (নাহাসে আকবার) আছে বেশ কয়েকটি।
সেপ্টেম্বরের কয়েকটা দিনও মুহররমের ভাগে পড়ে। ২৫ তারিখে ইমাম যায়নুল আবেদিন শাহাদাত বরণ করেন। এ পাতায়ও লেখা আছে মুহাররমে কোনো শুভ কর্ম করা সঠিক নয়।
তারপর সফর মাসের প্রথম দিনটিই অতি অশুভ। এরপর ১২ তারিখ অশুভ, কারণ হযরত সালমান ফারসীর মৃত্যু দিবস। তিনি আহলে বাইতের, মানে নবীবংশের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি জন্মেছিলেন ইস্পাহানে। তার পিতা ছিলেন একজন জরথ্রুস্টবাদী। ইসলাম গ্রহণের আগে তিনি খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেন।
খন্দকের যুদ্ধে পরিখা খননের সিদ্ধান্ত হয় হযরত সালমান ফারসীর পরামর্শেই। তিনি ধর্মীয় জ্ঞানে পন্ডিত ছিলেন। রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে তিনি রাত জেগে আলোচনা করতেন। তার থেকে ষাটটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
সফরের ২০ তারিখটি অতি অশুভ, কারণ এদিন ইমাম হুসাইন ও তার সঙ্গীদের চেহলাম হয়।
অক্টোবর মাসের পাতায় ১৪ রবিউল আউয়ালকে বলা হয়েছে শুভ। কারণ এদিন এজিদের মৃত্যু হয়েছে।
প্রথম ইয়াজিদ ছিলেন উমাইয়াদের দ্বিতীয় খলিফা। এজিদ ৩ বছর মসনদে ছিলেন। প্রথম বছর, মানে ৬৮০ খ্রিস্টাব্দেই কারবালার যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
নভেম্বর মাসের পাতায়, মানে রবিউল আউয়াল এবং রবি-উস সানিতে তেমন কোনো বড় ঘটনার কথা লেখা নেই।
কেবল ১০ রবি-উস সানি ইমাম হাসান আসকারির জন্মদিবস। ইমাম হাসান আসকারি ১১তম ইমাম।
শিয়াদের এ ক্যালেন্ডার দেশের প্রায় সব ইমামবাড়ায় ঝোলানো থাকে এবং অনুসারীরা তা দেখে লেনদেন, বিবাহ, যাত্রা ইত্যাদির সময় ঠিক করেন।