আমার ক্যামেরা-ট্র্যাপিংয়ের ভ্রমণ
২০১৮ সালে আমি প্রথম নিজে নিজে ক্যামেরা-ট্র্যাপিং জরিপ শুরু করি। ক্যামেরা ট্র্যাপ হচ্ছে বিশেষ একধরনের ক্যামেরা যা নড়াচড়া ও তাপমাত্রার তারতম্য শনাক্ত করতে পারে। আশপাশে কোনো নড়াচড়া ধরা পড়লেই সক্রিয় হয়ে উঠে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি তোলে এ ক্যামেরা। ক্যামেরা ট্র্যাপ বন্যজীবন (ওয়াইল্ডলাইফ) নিয়ে গবেষণায় রীতিমতো বিপ্লব এনেছে।
ক্যামেরা-ট্র্যাপ বসানো যায় বনের পথগুলোতে, আবার ছাউনিতেও বসানো যায়। এর সাহায্যে বাঘ ও চিতাবাঘের গোপন জীবন দেখার সুযোগ মেলে। গোনা যায় সেরো (একধরনের ছাগল) ও পাহাড়ি ছাগল। দেখতে পারি শাওলার মতো প্রাণী, যা কারও কল্পনাতে আসবে। এমনকি কুখ্যাত, বন্দুকধারী চোরাশিকারিরাও ধরা পরে ক্যামেরা-ট্র্যাপে।
ক্যামেরা-ট্র্যাপ আমাদের সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা সবচেয়ে সঠিকভাবে জানায়। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের দৃশ্যপটই বদলে দিয়েছে এই ওয়েদার-সিলড প্রযুক্তি-বিস্ময়। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রাণিবিদ্যায় স্নাতক হওয়ায় ক্যামেরা-ট্র্যাপের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলাম আমি—অনেকটা পতঙ্গ যেমন করে আগুনের প্রতি আকৃষ্ট হয়।
তবে আমার কোনো পূর্বপ্রশিক্ষণ ছিল না। স্নাতক কোর্সেও ক্যামেরা-ট্র্যাপ সম্পর্কিত কিছুই ছিল না। ২০১৮ সাল পর্যন্ত ক্যামেরা-ট্র্যাপিংয়ের ব্যাপারে আমার অভিজ্ঞতা বলতে ছিল কেবল সিনিয়র সহকর্মীদের কিছু পুরানো মডেল নেড়েচেড়ে দেখা।
এই অপূর্ণতা কাটিয়ে উঠতে আমি একটি সংরক্ষণ এনজিও থেকে ১০টি ক্যামেরা-ট্র্যাপ ধার করে আনি। খানিকটা অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বেছে নিলাম আমার সুপারভাইজারের ওয়ার্কস্টেশনটাকে।
একটা ইউনিট প্রোগ্রাম করে টোপ হিসেবে ব্যবহার করলাম কয়েকটা বিস্কুট। ওই কক্ষের বাসিন্দা ইঁদুরেরা আমাকে হতাশ করেনি। কাজেই আমি রীতিমতো কঠোর সাধনা করে ইঁদুরের পথ অনুসরণ করলাম বলতে পারেন।
এরপর এমন একটা বনের সন্ধান করতে লাগলাম যেখানে ক্যামেরা-ট্র্যাপিং জরিপ চালানোর পাশাপাশি হুমকিতে থাকা স্তন্যপায়ী পাওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে। জরিপ করার জন্য বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বনভূমিকে মোটামুটি আদর্শ মনে হলো।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটা ছোট অঙ্কের অনুদান পেলাম, যা ২০১৮ সালের শীতজুড়ে আমাকে সাহায্য করেছে। যা-ই হোক, বিশেষজ্ঞের মতামত আরেকটি বাধা দাঁড় করিয়ে দিল সামনে। সুন্দরবনের বাঘের একজন বিশেষজ্ঞ আমার পরিকল্পনা শুনে হাসলেন। বললেন, 'শুধু সময়ই নষ্ট হবে।'
মিশ্র চিরহরিৎ বন আমাকে বাজিতে জিতিয়ে দিল। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আড়াই বর্গকিলোমিটার আয়তনের একটি জাতীয় উদ্যানে চালানো ছোট জরিপটি আশ্চর্যজনকভাবে সফল হয়েছিল।
পুরো জরিপকালে সারা রাত ধরে প্রায় ৬০০টি ক্যামেরা-ট্র্যাপ চালাই। ১০টি মাংসাশীসহ ১৭টি পৃথক প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী ধরা পড়ে ক্যামেরা-ট্র্যাপে। জরিপে দেখা গেল, এশিয়াটিক বন্য কুকুর—বৈশ্বিকভাবেই বিপন্ন এই শিকারি প্রাণী, বন্য পরিবেশে প্রাপ্তবয়স্ক ২ হাজার ২১৫টি এশিয়াটিক বন্য কুকুর টিকে আছে বলে জানা যায়—ঘন ঘন ওই বন ব্যবহার করে।
ওই জরিপে প্রাপ্ত তথ্যগুলো মাইলফলক ছিল। আর ছিল ঐতিহ্যগতভাবে হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের বন সংরক্ষণের দিকে উদাসীনতার দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি একটা ধাক্কা। এই বিপজ্জনক পরিস্থিতির পরিবর্তন অত্যাসন্ন ও উপযুক্ত মনে হয়েছিল।
কিন্তু এককভাবে টেনেটুনে ১০০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই ফরেস্ট রিজার্ভগুলোর কেন আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন? এই বনগুলো কি সংরক্ষণের যোগ্য?
হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের ভূ-ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য যে-কাউকে অবাক করবে। এই দুটি জেলার বনভূমি ত্রিপুরা ও ভারতের দক্ষিণ আসামের সঙ্গে ছিদ্রযুক্ত সীমানা ভাগাভাগি করছে।
এই অঞ্চল ত্রিপুরা পাহাড়ের উত্তর প্রান্তে অবস্থিত এবং ১২৭টি ধরনের স্থলচর স্তন্যপায়ী প্রাণীর আবাসস্থল। তবে খুব সম্ভব এরচেয়েও অবাক করা ব্যাপার হলো, ভারতীয় উপমহাদেশের সমস্ত মাংসাশী প্রজাতির প্রাণীর প্রায় অর্ধেকেরই বাস বাংলাদেশে।
এই ২৭ প্রজাতির প্রাণীর সবগুলোই এ ফরেস্ট রিজার্ভে বাস করে। ১৯৯০-এর দশকে বাঘও পাওয়া যেত এ অঞ্চলে। মানব বসতির কাছাকাছি অবস্থিত এই রিজার্ভগুলো পরিচালনা করা সহজ এবং আমাদের পাহাড়ি বনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ পরিকল্পনার জন্য আদর্শ স্থান।
এই ফরেস্ট রিজার্ভগুলোতে কি কোনো সংরক্ষণ ও গবেষণা বিনিয়োগ আছে? আজ পর্যন্ত এই প্রশ্নের উত্তর, না।
বাংলাদেশের বনভূমি বিস্ময়ে ভরপুর। খণ্ডিত ও মাত্র ৫০০ বর্গকিলোমিটারের এই চ্যালেঞ্জিং বনভূমিতে মাংসাশী প্রাণীরা কীভাবে জীবনযাপন করছে, তা জীববিজ্ঞানীদের কাছে রহস্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৭০ বছর পর বাংলাদেশে ভারতীয় ধূসর নেকড়ের পুনরাবির্ভাবের পর, যা আমি ২০১৮ সালে অনুসন্ধান করি, এই প্রশ্ন একটি বিপরীতমুখী মোড় নেয়।
সহকর্মীদের আড্ডায় মাংসাশী প্রাণীগুলোর ঘন ঘন উপস্থিতি দেখা গেলেও বন্য অঞ্চলে এরা প্রায় অধরাই থাকে। এদের উপস্থিতি বোঝা কঠিন, কখনও জরিপও করা হয়নি।
এক্ষেত্রে গর্ব করার মতো কিছু রেকর্ড বাংলাদেশের আছে। ভালুক, মেঘলা চিতা ও চিতাবাঘের আবাসস্থল এই দেশ, যা কোনো অংশেই বাঘের চেয়ে কম সুন্দর নয়। এই প্রাণীগুলোর উপর এদেশে সবচেয়ে কম গবেষণা হয়।
বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের বন্যপ্রাণীরা ভীষণ কঠিন জীবনযাপন করছে। প্রতিশোধমূলক হত্যা, বন উজাড় এবং 'প্যাচ ইফেক্ট'—যেখানে আবাসস্থলগুলো বিচ্ছিন্ন এলাকায় বা 'প্যাচ'-এ ভাগ হয়ে যায়, যার ফলে প্রজাতিগুলোর চারণ এবং/অথবা প্রজনন সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে—বৈরিতার এই তালিকা অন্তহীন।
তা সত্ত্বেও অনেক বন্যপ্রাণী অবিশ্বাস্য সহ্যক্ষমতা নিয়ে এই ফরেস্ট রিজার্ভগুলোতে বেঁচে আছে। যেমন, এ বছর আমার কয়েকজন সহকর্মী মৌলভীবাজারের একটি জঙ্গলে একটি নতুন প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান পান। সেখানে আর কী বসবাস করছে, তা-ই ভাবছি আমি। নদীতীরবর্তী, বৃষ্টিবিধৌত আধা-চিরহরিৎ এই রিজার্ভগুলোতে আর কী বাস করছে?
আমার কাজ শেষতক কনজারভেশন লিডারশিপ প্রোগ্রাম (সিএলপি) থেকে একটি ফিউচার কনজারভেশনিস্ট অ্যাওয়ার্ড এনে দেয়। যে সময় এই সমর্থন পেলাম, তাতে খুব সুবিধা হয়েছে।
২০২০ সালের আগস্টে আমি বাংলাদেশের স্তন্যপায়ী মাংসাশী প্রাণীদের উপর গবেষণা করে প্রস্তুত করা একটি পাণ্ডুলিপির প্রতিক্রিয়া পাই। আমাকে ও আমার মিশন সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন, বাংলাদেশের এমন একজন রিভিউয়ার তার হয়ে রিভিউ করার জন্য পাণ্ডুলিপিটি তার এক ছাত্রের কাছে পাঠিয়েছিলেন। পর্যবেক্ষণের সময় ওই রিভিউয়ার একটা অপ্রত্যাশিত ধাক্কা দিয়েছিলেন, 'বিরল মাংসাশী প্রজাতি নিয়ে গবেষণা খুব কমই হয়, সাধারণত বড় পরিসরের প্রকল্পের মধ্যেই [এদের নিয়ে] গবেষণা হয়।'
আমি গবেষণার নীতিশাস্ত্রে যেতে চাই না, কিন্তু এটা সত্য যে এরকম একটা মন্তব্য আমার মধ্যে ইম্পোস্টার সিনড্রোম তৈরি করেছিল।
ওই সময় লিডারশিপ প্রোগ্রামটি আমার মনোবল অটুট রাখে। সহকর্মীদের সমর্থন আমাকে সফলভাবে পাণ্ডুলিপিটি রক্ষা করার আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে।
কাজটি এখন প্রকাশিত হয়েছে এবং বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছয় বনভূমির তিনটিতে আমি গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছি। এখানে পদ্ধতিগত ক্যামেরা-ট্র্যাপ জরিপ চালানোর সময় আমি কিছু অনন্য উপায়ে স্বল্প পরিচিত মাংসাশীদের উপর আলোকপাত করার চেষ্টা করছি।
ক্যামেরা-ট্র্যাপিং শুরু করেছি চার বছর হলো। এই সময়ে ৫ হাজার রাত কাটিয়েছি ক্যামেরা-ট্র্যাপ করে, যা বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে চালানো ক্যামেরা-ট্র্যাপিংগুলোর মধ্যে আছে।
এখন উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশের বনাঞ্চলে আবাস গাড়া রত্নগুলো সম্পর্কে আমরা জানি। আমরা জানি, সিলেট বিভাগের প্রতিটি মিশ্র-চিরহরিৎ ফরেস্ট রিজার্ভে ছোট-নখরযুক্ত ভোঁদড় বাস করে।
আগে বিশ্বে ভোঁদড়ের সংখ্যা কত, তা জানা ছিল না। এই আবিষ্কারের আগে আমরা ভাবতাম, সিলেট থেকে ১ হাজার কিলোমিটার দূরের সুন্দরবনেই শুধু ভোঁদড় থাকে।
আমরা এখন এ-ও জানি যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বনে সোনালী বিড়ালের বাস আছে। এখন আমরা জানি, খুরযুক্ত প্রাচীন স্তন্যপায়ী প্রাণী সেরো এখনও টিকে আছে এ অঞ্চলের বনে। আমরা জানি, হগ ব্যাজার ও ফেরেট ব্যাজারের মতো অনন্য, অদ্ভুত স্তন্যপায়ী প্রাণীরা এখনও ঘুরে বেড়ায় এ বনাঞ্চলে। আমরা জানি, ভালুক এখনও এ অঞ্চলের বনে বেরি ও মধু খেয়ে বেড়ায়। এবং এ-ও জানি যে চিতা ও মেঘলা চিতা যেকোনো দিন আমাদের ক্যামেরা-ট্র্যাপে ধরা দিতে পারে।
এসব প্রাণী এই বনাঞ্চলগুলোতে প্রথমবারের মতো আবিষ্কার হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। এখন ২০২২ সাল। এ সময়ে এসে এরচেয়ে আশ্চর্যজনক তথ্য আর কী হতে পারে? আর কবে আমরা সংরক্ষণের কাজ শুরু করব? হাতে কি যথেষ্ট সময় আছে?
বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অবস্থিত। ত্রিপুরায় সর্বশেষ স্তন্যপায়ী প্রাণী জরিপ করা হয়েছে কয়েক দশক আগে। ত্রিপুরার বনাঞ্চলের সঙ্গে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলও মাংসাশী প্রাণী গবেষণার দিক থেকে পরিবেশগতভাবে অজানা অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত।
এ অঞ্চলগুলোকে আমরা গবেষণার 'অযোগ্য' মনে করি। তার ওপরে চিড়িয়াখানা-স্টাইলের বিনোদনমূলক সাফারি পার্ক, ব্যাপকভাবে নিয়মিত বাঁশ কাটার মতো অ-বৈজ্ঞানিক ও ক্ষতিকর উন্নয়ন কর্মসূচিগুলোর সঙ্গে চোরাশিকার ও ফাঁদ পেতে জন্তু ধরা যুক্ত হয়ে কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ড প্রতিটি প্রাণীকে নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে।
আমার চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো এই অজানা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ফরেস্ট রিজার্ভগুলোর প্রতি সংরক্ষণের মনোযোগ ঘোরানো। এটি এই বনাঞ্চলের প্রাপ্য। আগামী বছরগুলোতে আমি বাংলাদেশে মাংসাশী প্রাণীর বাস্তুবিদদের একটি দল গড়ে ওঠার স্বপ্ন দেখি।
আপাতত আমি সম্প্রতি পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা একটি ক্যামেরা-ট্র্যাপিং হ্যান্ড-অন সেশনের সমন্বয় করছি। আশা করি সব ধরনের বন্যপ্রাণীকে সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। এছাড়া আমি আশা করি বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সংরক্ষিত এলাকা আরও বাড়ানো হবে। কারণ বর্তমানে সাড়ে ৫ হাজার বর্গকিলোমিটার অঞ্চলের মাত্র ৯ দশমিক ২ শতাংশ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সংরক্ষিত এলাকার আওতায় আছে।
আমি আশা করি যে প্রতি শীতে একদল গবেষক বিভিন্ন বনে ক্যামেরা-ট্র্যাপিং করতে ছুটে যাবেন। বাংলাদেশের শেষ ২০০ বাংলা শকুনকে বাঁচাতে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।
আমরা কি বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের শেষ ৩০-৫০টি ভালুক বা সেরো কিংবা ২০০ ভোঁদড় বাঁচাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে পারি না?
সবশেষে একটা বলুন, শুধুই বাঘে ভরা বন কে চায়? কেবল বাঘ সংরক্ষণ করলেই কি আমাদের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের সামগ্রিক লক্ষ্য পূরণ হবে? আমরা যদি অন্যান্য আইকনিক বন্যপ্রাণীগুলোকে সমানভাবে ভালোবাসতে না শিখি, তাহলে কি বাঘকে প্রকৃত অর্থে ভালোবাসতে পারব? প্রকৃতপক্ষে সৌন্দর্য নিহিত এই চমৎকার পশুদের বৈচিত্র্যের মধ্যে।