রাত ১০টায় ঘুমালে কমতে পারে হৃদরোগের ঝুঁকি
রাত ১০টা থেকে ১১টার ভেতর ঘুমিয়ে পড়লে কমবে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনই তথ্য পাওয়া গেছে। ৮৮ হাজারের বেশি অংশগ্রহণকারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই ফল প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক।
গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে যারা ঘুমিয়ে যান তাদের তুলনায় ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে ঘুমানো ব্যক্তিদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ১২ শতাংশ বেশি। তবে, আগে ঘুমানোই যে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, এমনটাও নয়। ১০টার আগে যারা ঘুমিয়ে পড়েন, তাদের মধ্যে ঝুঁকির পরিমাণ ২৪ শতাংশ বেশি।
এছাড়া, মধ্যরাত অর্থাৎ ১২টার পর ঘুমানোর ক্ষেত্রে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।
তবে, তাড়াতাড়ি কিংবা দেরিতে শুতে যাওয়া হৃদরোগের ক্ষেত্রে সরাসরি কোনো প্রভাব রাখে কি না, সে সম্পর্কে গবেষণায় কোনো তথ্য নেই।
এছাড়া, গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ঘুমের গুণগত মান বা তারা কতক্ষণ ঘুমাচ্ছেন সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
ইউনিভার্সিটি অব এক্সিটারের হিউমা থেরাপিউটিকসের রিসার্চ প্রধান ও জ্যেষ্ঠ লেকচারার ড. ডেভিড প্ল্যানস বলেন, "দেরিতে কিংবা আগে শুতে যাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যক্তিবিশেষে যে পার্থক্য দেখা যেতে পারে তা মূলত সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসার মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ের কারণে হতে পারে।"
"সূর্যালোক মানুষের দেহে 'সার্কাডিয়ান ক্লক' বা জৈবিক ঘড়ি নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। শরীরের এই ঘড়ি দীর্ঘদিন ঠিক না থাকলে দেহে আচরণগত অসামঞ্জস্য সৃষ্টি হয়। এর ফলে, দেহে প্রদাহ সৃষ্টির পাশাপাশি গ্লুকোজ তৈরি ব্যাহত হতে পারে। দুটো বিষয়ই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়," বলেন গবেষক দলের প্রধান ড. প্ল্যানস।
গবেষণার তথ্যানুসারে, ২০০৬ থেকে ২০১০ সালের ভেতর ৮৮ হাজার ২৬ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে তিন হাজার ১৭২ জন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। গড়ে ৫.৭ বছরের ব্যবধানে তাদের পর্যবেক্ষণ করা হয়। তবে, তাদের আগে কোনো হৃদজনিত জটিলতা বা ঘুমের সমস্যা ছিল না।
ড. প্ল্যানস জানান, আরও বিশদভাবে তথ্য জানার জন্য আমাদের আরও বেশি সংখ্যক অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করতে হবে। জনসাধারণকে নির্দিষ্ট করে ঘুমাতে যাওয়ার সময় সম্পর্কে নির্দেশনা দেওয়ার মতো এখনও যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
"মানুষ প্রায়ই ধারণা করে যে, মানসিক অবস্থা হৃদরোগে ভূমিকা রাখে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, হৃদরোগের ক্ষেত্রে সার্কাডিয়ান রিদমে ব্যাঘাত ঘটায় আচরণগত পরিবর্তনের প্রভাব আরও বেশি," বলেন তিনি।
- সূত্র: গার্ডিয়ান