মরুভূমির দেশে বরফ: পর্যটনে মিশরের নতুন ক্রেজ
বরফাচ্ছাদিত কোনো পাহাড়ে মনের আনন্দে ছোটাছুটি করছে মানুষ কিংবা স্লাইড দিয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে- এমন দৃশ্য পৃথিবীতে বিরল নয়। তবে এই ব্যাপারটা যখন মরুভূমির দেশ মিশরে ঘটবে তখন তা আশ্চর্যজনক বটে!
শুষ্ক, বালুময় সাহারা মরুভূমির প্রত্যন্তে অবস্থিত মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে বরফ তো দূরের কথা, বৃষ্টিপাতই হয় কালেভদ্রে।
কিন্তু মিশরের এই চিরচেনা আবহাওয়ার মধ্যে শীতের আমেজ না এনেই বরং পোর্ট ফুয়াদের একটি লবণ প্রক্রিয়াকরণ স্থান থেকে অসাধারণ একটি পর্যটন কেন্দ্র তৈরি হয়ে গেছে। সুয়েজ খালের উত্তর দিকের শেষাংশে অবস্থিত জায়গাটি।
পোর্ট ফুয়াদের লবণ পাহাড়ের গায়ে মানুষ স্লাইডে গড়িয়ে যাচ্ছে এমন একটি ছবি ভাইরাল হবার পর থেকেই জায়গাটি এখন মিশরের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দলে দলে মানুষ ভিড় করছে এখানে।
কিছু অতি উৎসাহী মানুষ আবার সেখানে স্কিইং করার চেষ্টাও করেছেন।
সেরে ওঠার ওষুধ!
মিশরীয় আলোকচিত্রী মোহাম্মদ ওয়ারদানি সিএনএনকে জানিয়েছেন, সুয়েজ খাল থেকে একটি ফেরী পারাপারের মাধ্যমে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় এই লবণ পাহাড়ে।
ওয়ারদানি আরো জানান, এই পাহাড়ে নেয়া তার ছবিগুলো মিশরকে ভিন্ন চোখে দেখার একটি প্রকল্পের অংশ হিসেবে কাজ করছে। এর ফলে মিশরে পিরামিডের পাশাপাশি অন্য অনেক কিছু দেখার আগ্রহ জন্মাবে মানুষের মধ্যে।
লবণ পাহাড়ের ধবধবে সাদা-উজ্জ্বল রঙ এর প্রতি আলোকপাত করে ওয়ারদানি বলেন, এই পাহাড় উত্তর মেরুর সাদা বরফের পাহাড়ের রূপই তুলে ধরেছে।
যদিও এখানে সেই হিমশীতল ভাব আপনি পাবেন না, তবে মিশরের এই জায়গাটি যথেষ্ট সজীব হাওয়ায় পরিপূর্ণ।
ওয়ারদানির মতে, এই লবণের মধ্যে রোগ সারিয়ে দেয়ার মত এক ধরনের উপাদান রয়েছে এবং এর উপরে বসলে শরীর থেকে খারাপ সব শক্তি বেরিয়ে যায়!
শীতল ভাব পাওয়ার জন্যে সবাইকে শীতকালে লবণ পাহাড়ে ভ্রমণ করার পরামর্শও দিয়েছেন এই আলোকচিত্রী।
যে লবণ দিয়ে পাহাড়টি তৈরি তা সংগ্রহ করা হয় এমন একটা সময়ে যখন পোর্ট ফুয়াদের পুকুর বা জলাশয়গুলোয় সমুদ্রের পানি এসে জমে এবং সূর্যের আলোয় বাষ্প হয়ে উড়ে যায়।
আর সেই সাথে এখানে শীতকালের একটা যোগসূত্রও রয়েছে। রয়টার্সের তথ্যানুযায়ী, এখানকার লবণ শীতপ্রধান দেশগুলোতে রপ্তানি করা হয় এবং তা বরফ গলানোর কাজে ব্যবহৃত হয়।
- সূত্র-সিএনএন