বোয়িং ৭৪৭-৪০০ ইজারা নেওয়ার মাসিক ব্যয় কত?

বোয়িং কমার্শিয়াল এয়ারপ্লেন কোম্পানির ৭৪৭ সিরিজের একটি অ্যাডভান্সড ভ্যারিয়ান্টের যাত্রীবাহী বিমান হলো বোয়িং ৭৪৭-৪০০। এখন পর্যন্ত এই মডেলের ৬৯৪ টি বিমান তৈরি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সারা বিশ্বের বিভিন্ন এয়ারলাইনসের হয়ে আকাশপথে রাজত্ব করলেও; এই মুহূর্তে সক্রিয়ভাবে সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিমানটি প্রায় বিরল হয়ে উঠেছে। সে আলোচনা নাহয় পরে হবে, কিন্তু বোয়িংয়ের এই জাম্বো জেটকে এক মাসের জন্য ইজারা নিতে ঠিক কত টাকা ব্যয় করতে হয়, সে সম্পর্কে আপনার কোনো ধারণা আছে কি?
আকাশপথে থাকা ৭৪৭-৪০০ বিমানের সংখ্যা কত?
সিএইচ-অ্যাভিয়েশন.কম থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই মুহূর্তে ১৬ টি অপারেটরের অধীনে মাত্র ৩০ টি বোয়িং ৭৪৭-৪০০ বিমান সক্রিয়ভাবে আকাশপথে চলছে। মালবাহী ও নিষ্ক্রিয় বিমানগুলোকে এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অবশ্য ভবিষ্যতে তাদের আবার সক্রিয় সেবাদানে ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
একই সময়ে, সক্রিয় ৩০ টি বিমানের মধ্যে আবার দুই ধরনের টেস্টবেড আছে। এর একটি পরিচালনা করে জেনারেল ইলেক্ট্রিক এবং অন্যটি রোলস-রয়েস। তাছাড়া, দুবাই এয়ার উইং ও বাহরাইন রয়্যাল ফ্লাইটে'র মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর অধীনে কিছু ভিআইপি বিমানও রয়েছে।
সাধারণ যাত্রীবাহী বোয়িং ৭৪৭-৪০০ এর দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই, 'রাশিয়ান ক্যারিয়ার রোশিয়া' একটি অন্যতম প্রতিষ্ঠান, যারা সক্রিয়ভাবে এই জাম্বো জেটগুলো পরিচালনা করছে। তাই ইজারা ব্যয় বোঝার জন্য আমাদেরকে কিছু সক্রিয় ও নিষ্ক্রিয় জাম্বো জেট সম্পর্কে জানতে হবে।
মাসিক ১০০,০০০ ডলার?
সিএইচ-অ্যাভিয়েশন ডট কমের ডেটা থেকে জানা যায়, বর্তমান বাজারে একটি বোয়িং ৭৪৭-৪০০ বিমান ইজারা নেওয়ার মাসিক খরচ ৫০,০০০ ডলার থেকে ১১০,০০০ ডলারের মধ্যে।
বোয়িং বিমানের মান ও খরচ যে বিষয়গুলোর উপর নির্ভর করে, তা হলো:
- বিমানের বয়স
- ফ্লাইট চক্র
- ফ্লাইট ঘন্টা
আর প্রতিটি বিমান আলাদাভাবে পর্যবেক্ষণ না করলেও, এটা নিশ্চিত করতে হয় যে প্রতিটি বিমানই ইউএস ফেডারেল অ্যাভিয়েশন রেগুলেশন পার্ট-১ এর অধীনে সনদপ্রাপ্ত, রক্ষণাবেক্ষণকৃত ও পরিচালিত।
নমুনা হিসাব
উপরে উল্লেখিত মানদন্ড এবং সীমাবদ্ধতার ভেতরে থেকেই কিছু আলাদা আলাদা বিমানের আনুমানিক ইজারা ব্যয় তুলে ধরা হলো:
১। ডি-এবিভিডব্লিউ: যদিও বিমানটি এই মুহূর্তে পার্ক করা আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু এর মাসিক ইজারা ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৫,০০০ ডলার। গত ৩০ জুন পর্যন্ত এটি সর্বমোট ১০৫,২৭৯ ঘন্টা আকাশে উড়েছে এবং এর ফ্লাইট চক্র ১২,৪৮৬।
২। এল-এক্সএলই: এই সক্রিয় রোশিয়া বিমানটিরও মাসিক ইজারা ব্যয় ধরা হয়েছে ১০৫,০০০ ডলার। বিমানটি প্রায় ছয় বছর ধরে ফ্লাইট পরিচালনা করছে এবং সর্বশেষ ফ্লাইট ঘন্টা ও চক্রের হিসাবে এর মান এখন অনেক কম।
৩। ইপি-এমএনবি: ৩২ বছর পুরনো এই বিমানটির পরিচালনার দায়িত্বে আছে ইরানের মাহান এয়ার। বর্তমানে এটি মাত্র ৫৫,০০০ ডলারেই ইজারা নেওয়া যাবে। কিন্তু এর ফ্লাইট চক্র ও ফ্লাইট ঘন্টার হিসাব নথিবদ্ধ না থাকায়, এর মূল্য আরও কমে যেতে পারে।
৪। ওয়াইই-একিউকিউ: ২৭ বছর বয়সী এই বিমানটি আছে ইরাকি এয়ারওয়েজ এর অধীনে। এটি ইজার নেওয়া যাবে মাসিক ৮০,০০০ ডলারের বিনিময়ে।
৫। এন৩২২এসজি: বোয়িং ৭৪৭-৪০০ এর সবচাইতে দামি এই বিমানটির বয়স ২১ বছর। অ্যাটলাস এয়ার প্যাসেঞ্জার জাম্বোটি ইজারা নিতে চাইলে আপনাকে মাসে ১১০,০০০ ডলার গুনতে হবে। ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত, এটির মোট ৪৬,২৬৪ ঘন্টা আকাশপথে থাকার রেকর্ড আছে এবং ফ্লাইট চক্রের সংখ্যা ৬,১৬২। বয়স তুলনামূলক কম হওয়ায় এবং ফ্লাইট ঘন্টাও কম থাকায় বিমানটির মূল্য ডি-এবিভিডব্লিউ'র চাইতে ৫০০০ ডলার বেড়ে গেছে।
- সূত্র- সিম্পলফ্লায়িং ডটকম