প্রোজেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আটেই আশিতে ইউক্রেনের অ্যানা
অ্যানা স্যাকাইডন এই পৃথিবীতে আট বছর ধরে বেঁচে ছিল। কিন্তু তার বয়স হয়েছিল ৮০!
মাত্র আট বছর বয়সে চুলে পাক ধরেছিল অ্যানার। ‘বার্ধক্যে’ এক-এক করে বিকল হয়ে গিয়েছিল বিভিন্ন অঙ্গ। শেষে ‘বয়সের ভারে’ মাত্র আট বছরে মৃত্যু হল ইউক্রেনের এই শিশুকন্যার।
‘প্রোজেরিয়া’ নামক জেনেটিক রোগে আক্রান্ত ছিল অ্যানা। তবে এই অসুখে এত অল্প বয়সে মৃত্যুর ঘটনা এই প্রথম। চিকিৎসাবিজ্ঞানের হিসেব বলছে, অ্যানা স্যাকাইডন বিশ্বের কনিষ্ঠতম মানুষ, যে প্রোজেরিয়ায় মারা গেল।
অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘পা’ ছবিতে এই প্রোজেরিয়াতেই আক্রান্ত ছিল মূল চরিত্র অরো। ১৩ বছর বয়সে মারা যায় সে।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, মাত্র আট বছর বয়সেই অ্যানার শরীর এসে গিয়েছিল আশিতে। একাধিক শরীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ওজন ছিল মাত্র সাড়ে সাত কেজি।
অ্যানার মা ইভানা মেয়েকে সুস্থ করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন। ইউক্রেনের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রধান টিমোফি নাগরোনি বলেন, ‘‘ইভানা প্রতি দিন শুধু এই আশাতেই বাঁচতেন, চিকিৎসকেরা এসে জানাবেন, তারা রোগ ধরতে ভুল করেছেন। অ্যানার প্রোজেরিয়া হয়নি।’’
শিশুটির এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘হাচিনসন-গিলফোর্ড প্রোজেরিয়া সিন্ড্রোম হয়েছিল ওর। এতে হাড় স্বাভাবিক ভাবে বাড়ে। ফলে শরীরের বাড়বৃদ্ধি স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দ্রুত গতিতে বুড়িয়ে যায়। এক বছর বয়সই তার দশ বছরের সমান বুড়িয়ে যায়।
এ ধরনের রোগীদের মৃত্যু হয় সাধারণত স্ট্রোকে। অ্যানার ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল। একাধিক স্ট্রোক। হাত-পায়ে পক্ষাঘাত হয়ে গিয়েছিল।’’
তিনি আরও জানান, ১১ মাস বয়সেই বড়দের মতো হাঁটতে পারত অ্যানা (কারণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বৃদ্ধিতে তখন সে দশ)। কিন্তু আলো দেখে ভয় পেত। তাই বাড়ির বাইরে যেতে পারত না।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ২ কোটি মানুষের মধ্যে এক জনের এই রোগ হয়। এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে ১৬০ জন প্রোজেরিয়ায় আক্রান্ত।