ছবির গল্প: জলবায়ু শরণার্থীদের সংগ্রাম
ছেলেবেলা থেকে বেড়ে ওঠা বাগেরহাটের মোংলায়। উপকূলবর্তী এলাকা হওয়ায় লবণাক্ত পানির সাথে খাপ খাইয়ে চলতে হয়েছে সবসময়ই। প্রকৃতির সাথে মানুষের জীবনের বোঝাপড়া দেখা হয়েছে খুব কাছে গিয়ে। শুরু থেকেই তাই আগ্রহ ছিল প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে।
২০০৭ সালে এক অ্যাসাইন্মেন্টের জন্য শিকাগো ট্রিবিউনের এক সাংবাদিকের সাথে নদীভাঙন কবলিত চাঁদপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাই। কাজটি করতে গিয়ে সেখানকার স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা, অভিজ্ঞতার গল্প আমাকে খুব-ই প্রভাবিত করে।
পরিবেশ দূষণের সাথে যাদের জীবনের প্রত্যক্ষ কোনো দায় নেই তারাই জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় শিকার সেখানে। এরপর কয়েকজন পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারি। তখন থেকেই জলবায়ু শরণার্থীদের নিয়ে কাজের শুরু।
ছবির মাধ্যমে জলবায়ু যোদ্ধাদের লড়াই করে টিকে থাকার শক্তি তুলে ধরার চেষ্টা করি। আমার কাছে তাদের অসহায়ত্বের চেয়ে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রামী মনোভাবটাই বেশী গুরুত্ববহ। জলবায়ু যোদ্ধাদের নিয়ে আমার কাজ সিংগাপুর, নিউইয়র্ক, প্যারিস, কানাডাসহ পৃথিবীর নানা প্রান্তে প্রদর্শীত হয়েছে।
'জলবায়ু শরণার্থী' শিরোনামে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকায় চলমান প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া ৩৪ টি ছবির মধ্যে আছে ২০০৭ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত তোলা কিছু ছবি। এরমধ্যে আছে সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, চিলমারীর বন্যার্ত এলাকার ছবি , মুন্সিগঞ্জের নদীভাঙন ও বন্যার ছবি, ঘূর্ণিঝড় সিডর ও ঘূর্ণিঝড় আইলার সময়ের বন্যার ছবি।
- আবীর আবদুল্লাহ একজন স্বাধীন আলোকচিত্রী ও শিক্ষক। তিনি পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের সাবেক প্রিন্সিপাল। ২০০৫-২০১৮ সাল পর্যন্ত ইউরোপিয়ান প্রেস ফটো এজেন্সির করেসপন্ডেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। নিউ ইয়র্ক টাইমস, নিউ ইয়র্কার, টাইম, গার্ডিয়ান, দ্য টেলিগ্রাফ, স্টার্ন, ডার স্পাইগেলে তার কাজ প্রকাশিত হয়েছে।