গানের সুরে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই
ইতালিতে দিন দিন বাড়ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের বাড়ি থেকে বের হওয়া নিষেধ করেছে দেশটির সরকার। কিন্তু ইতালিয়ানরা হচ্ছে নাচে-গানে মেতে থাকার জাতি। বিকেল হলেই সেদেশের ক্যাফেটেরিয়াগুলোতে বসে প্রাণবন্ত আড্ডা, কফির পেয়ালায় চুমুক দিতে দিতে চলে গান, তর্ক আর বাদ্য বাজনা।
সেদেশের মানুষকে ঘরে আটকে রাখলে কি হবে বলুন তো? ভাইরাস আপনার শরীরে আক্রমণ করতে পারে, কিন্তু সংস্কৃতি আর শত শত বছরের ঐতিহ্যকে তো ক্ষয়ে দিতে পারে না। আর তাই তো দেখা গেল এক চমৎকার দৃশ্য।
গত বুধবার সিয়েনার টাস্কান শহরের এক মহল্লা থেকে শোনা গেল এলাকাবাসীর কোরাস, সম্মিলিত কণ্ঠে গান।
এই মহামারির দিনে একে অন্যের কাছাকাছি না থাকতে পারলে কি হবে, পাশে থাকার উপায়টা ঠিকই খুঁজে বের করেছেন তারা।
একটা পাড়া বা মহল্লার প্রত্যেক বাড়ির জানালা আর ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে গান গাইছেন সবাই, একেক জনের হাতে বাজছে একেক বাদ্য।
এভাবেই একে অন্যের পাশে থাকছেন, মনোবল জিইয়ে রাখছেন তারা।
আর গানের সুর ছড়িয়ে পড়েছে দেশটি জুড়ে। শুক্রবার রোমজুড়ে গানের এক 'ফ্ল্যাশমব' হয়ে গেল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও একটি গ্রুপ তৈরি হয়েছে, যেখানে সময় ঠিক করে নিচ্ছেন ইতালিবাসীরা। যেমন শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে একযোগে এক্সুরে বাদ্যযন্ত্র বাজানো শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন তারা।
গত বুধবার দেখা গেছে আরেক চমৎকার দৃশ্য। বাড়িতে বসে পরিবারের বাচ্চাদের নিয়ে তারা তৈরি করেছেন রঙিন ব্যানার; তাতে লেখা- 'আন্দ্রা তুতো বেনে', যার অর্থ 'সব ঠিক হয়ে যাবে'। তারপর সব বারান্দা আর জানালায় ব্যানারগুলো টাঙ্গিয়ে দিয়েছেন সবাই। যেন রঙে, আলোয়, সুরে, গানে আর ভালোবাসায় করোনার বিরুদ্ধে এক অন্যরকম লড়াইয়ে নেমেছে ইতালির মানুষ।
২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া মহামারি কোভিড-১৯ ছড়িয়ে গেছে বিশ্বের ১১৮টি দেশ ও অঞ্চলে। এতে বিশ্বজুড়ে মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ৪৩৬ জনের। আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৮১০ জন। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৭২ হাজার ৫৩০ জন।
আর এই ভাইরাসে ইতালিতে এই পর্যন্ত ১৭ হাজার ৬৬০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন এক হাজার ২৬৬ জন।