গাড়ির মতো বিমানেও থাকে হর্ন!

গাড়ি বা ট্রেনের হর্নের কথা তো সবাই জানি। কিন্তু কখনও বিমানের হর্নের কথা শুনেছি? চোখ কপালে উঠল বুঝি!
প্রশ্ন জাগতেই পারে, বিমানের আবার হর্ন! আকাশে তো কোন যানজট নেই, তা হলে আবার হর্নের প্রয়োজন কেন? কিন্তু এই হর্নের প্রয়োজন আছে।
বিমানেরও হর্ন আছে, এটা না হয় জানা গেল। কিন্তু তাই বলে আকাশে কি হর্ন বাজানো হয়? এখানেও প্রশ্ন জাগতে পারে, তা হলে নিশ্চয় কোনও বিমান কাছাকাছি চলে এলে সতর্ক করতেই সেই হর্ন বাজানো হয়! কিংবা পাখির কবলে পড়ে যাতে বিমান দুর্ঘটনা না হয় তার জন্য বাজানো হয়?
তা নয়। আসল বিষয়টা হল, বিমানের হর্ন থাকলেও তা কিন্তু আকাশে ওড়ার সময় ব্যবহার করা হয় না। বিমানচালককে এই হর্ন বাজানোর অনুমতি দেওয়া হয় না। বরং, উড্ডয়নের সময় বিমানের এই হর্ন নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। তবে বিমানবন্দরে বিমান থাকাকালীন এই হর্ন ব্যবহার করা হয়। একমাত্র গ্রাউন্ড ইঞ্জিনিয়াররা যখন ককপিটে থাকেন, তখন গ্রাউন্ড স্টাফদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য এই হর্ন ব্যবহার করেন। সামনের ল্যান্ডিং গিয়ারের কাছে এই হর্ন থাকে।

বিমানের ককপিটে যে ইনস্ট্রুমেন্ট প্যানেল থাকে সেখানে 'জিএনডি' লেখা একটা বোতাম থাকে। এই বোতাম টিপলেই হর্ন বাজে। অনেকটা জাহাজ বা স্টিমারের হর্নের মতো আওয়াজ। বিমানে কোনও আপদকালীন পরিস্থিতি তৈরি হলে সতর্কতামূলক সঙ্কেত হিসেবে এই হর্ন বাজানো হয়।
হর্নের আওয়াজেরও আবার ধরন আছে। এই নানা ধরনের হর্ন শুধু ইঞ্জিনিয়ারদের জন্যই। বিমানের কোথায় কোন সমস্যা হচ্ছে, বা কী সমস্যা হচ্ছে, হর্নের ধরন শুনে তারা বুঝতে পারেন। একেকটি হর্নের সঙ্গে একেক রকম আলোও লাগানো আছে। এছাড়া কেবিনে কোনও সমস্যা হলে তার জন্যও আলাদা হর্ন আছে।
তবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন বিমানের ককপিটেও হর্ন থাকে। নানা রঙের আলোর মাধ্যমে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পাইলটরা। ওই নানা রঙের আলোগুলোকেও প্রযুক্তিগতভাবে বিমানের হর্ন বলা হয়ে থাকে।
- সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা