এসি রক্ষণাবেক্ষণ ও দুর্ঘটনা এড়ানোর উপায়
বাংলাদেশে এয়ার কন্ডিশনার (এসি) ব্যবহার প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তবে একইসঙ্গে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এসি বিস্ফোরণের খবরও পাওয়া যাচ্ছে হরদম।
এসি কেনার আগে কিছু বিষয় বিশেষভাবে খেয়াল রাখা এবং নকলের ফাঁদ থেকে বাঁচতে ব্র্যান্ডগুলোর নিজস্ব শোরুম থেকে কেনা উচিত। কেননা, বাজারে ইতোমধ্যেই নিম্নমানের ও নকল এসির ছড়াছড়ি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন এসি স্থাপন (ইনস্টলেশন) ও রক্ষণাবেক্ষণ (মেইনটেন্যান্স) খুবই গুরুত্বপূর্ণ, অথচ এটি বাংলাদেশে খুব একটা গুরুত্ব পায় না।
এসি রক্ষণাবেক্ষণ
-
কোনো এসির যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন পড়ে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই সবসময় পেশাদার সার্ভিস টেকনিশিয়ান নিয়ে আসবেন।
-
এসি ফিল্টার নিয়মিত পরিবর্তন কিংবা পরিষ্কার করুন। বদ্ধ ও ময়লা হয়ে যাওয়া ফিল্টার স্বাভাবিক বায়ুপ্রবাহ ব্যাহত করে এবং এসির কার্যকারিতা ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিয়ে দুর্ঘটনার কারণ হয়ে ওঠতে পারে।
-
এসির ইভাপোরেটর ও কনডেন্সার কয়েল প্রতি বছর পরীক্ষা ও পরিষ্কার করা উচিত। ইভাপোরেটর ও কনডেন্সার কয়েলে থাকা অ্যালুমিনাম ফিন বা পাখাগুলো খুব সহজেই বেঁকে গিয়ে বায়ুপ্রবাহ আটকে দিতে পারে। এসির পাইকারি বিক্রেতারা 'ফিন কম্ব' নামের একটি যন্ত্র বিক্রয় করেন, যেটি পাখনাগুলোকে পরিষ্কার করে প্রায় অরিজিনাল অবস্থা এনে দিতে সক্ষম।
-
মাঝে মধ্যে কোনো শক্ত তার দিয়ে ইউনিটটির ড্রেন চ্যানেল পরিষ্কার করুন। এসি ও উইন্ডো ফ্রেমের মধ্যকার 'সিল'টি খেয়ালে রাখুন, যেন প্রতিটি কুলিং সেশনের শুরুতে এটি ইউনিটের মেটাল কেসের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে।
-
শীতকালে আপনার রুমের এসিটি ঢেকে রাখুন অথবা খুলে স্টোরে রেখে দিন। শীতকালীন আবহাওয়া ও ধূলিবালি থেকে এটি সুরক্ষিত থাকবে।
এসি দুর্ঘটনা এড়ানোর উপায়
- পেশাদার টেকনিশিয়ানের মাধ্যমে আপনার এসি নিয়মিত সার্ভিস করুন।
- রুমের আকার অনুযায়ী যথাযোগ্য ক্যাপাসিটির এসি বসান।
- বিশ্বাসযোগ্য ব্র্যান্ডের এসি কিনুন।
- একটানা দীর্ঘক্ষণ না চালিয়ে, মাঝেমধ্যে এসিকে একটু বিরতি দিন বা খানিকটা সময় বন্ধ রাখুন।
- বৈদ্যুতিক সংযোগ, সকেট, ফিল্টার ইত্যাদি নিয়মিত পরীক্ষা করুন।
- হাই ভোল্টেজ এড়াতে বাসায় সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করুন।
- বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় এসি চালাবেন না।
এসি দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ
- পুরনো ও নিম্নমানের এসি ব্যবহার করা।
- রুমের আকার অনুযায়ী যথাযোগ্য ক্যাপাসিটির এসি ব্যবহার না করা।
- কম্প্রেশারের ভেতরে ময়লা জমে আটকে যাওয়া।
- এসি থেকে গ্যাস লিক হওয়া।
- একটানা দীর্ঘক্ষণ ধরে এসি চালিয়ে রাখা, যার ফলে যন্ত্রটির ওপর চাপ বেশি পড়ে আর এটি গরম হয়ে যায়।
- এসির ভেতরে বা বাইরে বৈদ্যুতিক তারের কারণে শর্ট সার্কিট হওয়া।
- ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোতে হাই ভোল্টেজ ইলেকট্রিসিটির চাপ।
- দীর্ঘদিন সার্ভিসিং না করানো।
- ভালোমানের আর্থিং সিস্টেম ছাড়াই বজ্রপাত কিংবা বৃষ্টির সময় এসি চালানো।