দলের ব্যাটসম্যানদের ‘টেকনিক্যাল’ অনেক সমস্যা, বলছেন সাকিব
সব ঠিকঠাক চলছে, কিন্তু একটা উইকেট পড়লেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ। টেস্টে ব্যাটিংয়ের এই দশা বেশ পুরনোই। ইনিংসের শুরুটা নিয়েও ভাবনার শেষ নেই। গত মাসেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৪ রানে পাঁচ উইকেট হারানো বাংলাদেশ পরের ইনিংসে ২৩ রানে হারায় ৪ উইকেট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও ভাগ্য বদলায়নি। মুড়ি মুড়কির মতো উইকেট হারানো বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস শেষ মাত্র ১০৩ রানেই। দ্বিতীয় ইনিংসও খুব বড় হয়নি। মাহমুদুল হাসান জয়ের ৪২ এবং সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহানের হাফ সেঞ্চুরি ছাড়া বলার মতো রান কেউ করতে পারেননি। ক্যারিবীয়দের ৮৪ রানের মতো ছোট লক্ষ্য দিয়ে ৭ উইকেটের হার মেনে নিতে হয় বাংলাদেশকে।
ব্যাটিংয়ের এমন হতশ্রী অবস্থা কেন, সমস্যাটা কোথায়? জাতীয় দলের মতো পর্যায়ে এসে নিশ্চয়ই টেকনিক্যাল সমস্যা থাকার কথা নয় ব্যাটসম্যানদের! তবে কারণটা কি মানসিক চাপ? বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক সাকিব জানালেন, মানসিক নয়; বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের টেকনিক্যাল (কৌশলগত) অনেক সমস্যা আছে। এমনকি কৌশলে দক্ষ তেমন ব্যাটসম্যানই দলে দেখেন না তিনি।
অ্যান্টিগায় চার দিনে টেস্ট হারের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সাকিব খোলামেলাভাবেই কথা বললেন। তার কথায় উঠে এলো দলের ব্যাটসম্যানদের 'বেসিক' সমস্যার কথা। সমস্যাটা মানসিক চাপের কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে সাকিব বলেন, 'না, টেকনিক্যালি অনেক সমস্যা আছে। আমার মনে হয় না যে খুব বেশি আমাদের টেকনিক্যাল সাউন্ড খেলোয়াড় আছে। আমাদের দলে যারা আছে, তাদের সবারই অনেক টেকনিক্যাল সমস্যা আছে।'
এখান থেকে ভালো করতে নিজেদেরই রাস্তা খুঁজে নিতে হবে বলে মনে করেন সাকিব। তার ভাষায়, 'তাদেরকে উপায় খুঁজে বের করতে হবে যে কীভাবে রান করতে হবে এবং কীভাবে ক্রিজে থাকতে হবে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা আসলে যার যার ব্যক্তিগত দিক থেকেই আনা সম্ভব। এটা কেউ কাউকে বলে দিয়ে কাজ হবে বলে মনে হয় না। এটা প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে দায়িত্ব নিতে হবে। কীভাবে সে রানে ফিরতে পারে এবং ক্রিজে বেশি সময় থাকতে পারে।'
হতাশা কাজ করলেও সাকিব জানালেন, এর চেয়ে বেশি প্রত্যাশা ছিল না তার। বোলারদের পারফরমান্সে তিনি খুশি তবে ব্যাটিংয়ে আরও ভালো হতে পারতো। পাশাপাশি ওয়েস্ট ইন্ডিজে আরও ভালো করার যে সুযোগটা ছিল, সেটা মিস করলো বাংলাদেশ। সাকিব বলেন, 'আরেকটু ভালো করতে পারতাম। প্রথম দিনের প্রথম সেশনের পর থেকে আমরা সব সময় খেলার পেছনে ছিলাম। সব সময় আমাদের রিকভারি প্রসেসটাই ছিল। কখনও আমরা সামনে যেতে পারিনি। ওটাই একটা আফসোসের জায়গা।'
'এ ছাড়া আমি খুবই খুশি যে বোলাররা যেভাবে বোলিং করেছে। ব্যাটিং নিয়ে আমরা সবাই জানি, বার বার বলার কিছু নেই যে এই জায়গাটাতে আমাদের উন্নতির অনেক জায়গা আছে। ক্যাচিংটা আরও ভালো হলে ভালো হবে। তবে সব মিলিয়ে আমি খুশি পুরো ম্যাচটা নিয়ে। এর থেকে খুব বেশি যে প্রত্যাশা ছিল, আমি তা বলব না। আমি মনে করি আমাদের সামর্থ্য ছিল এখানে অনেক ভালো করার, একটা সুযোগ আমরা মিস করলাম।' যোগ করেন তিনি।
১০৩ রানে প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গেলেও সাকিব ত্রাতার ভূমিকায় ছিলেন। ৫১ রানের মহাকার্যকর এক ইনিংস খেলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ২৪৫ রান করা দ্বিতীয় ইনিংসেও নেতার ভূমিকা পালন করেন তিনি, খেলেন ৬৩ রানের ইনিংস। কিন্তু সোহান ও জয় ছাড়া বাকিদের ব্যাট থেকে রান আসেনি। তাই লড়াইও করা সম্ভব হয়নি, চতুর্থ দিন সকালেই হার মেনে নিতে হয় বাংলাদেশকে।