৩২.৫ ওভারেই শেষ বাংলাদেশ, সঙ্গী ছয় শূন্য

এক দিনে ৯০ ওভার পর্যন্ত খেলা চলে। টিকে থাকতে পারলে কোনো দল পাঁচ দিনও ব্যাটিং করতে পারে। টেস্ট ক্রিকেট এমনই, জেতার বিশেষ লক্ষ্য ছাড়া এখানে তেমন তাড়া নেই। কিন্তু বাংলাদেশ হয়তো অন্যভাবে এই ফরম্যাটে খেলতে পছন্দ করে। তাড়া না থাকলেও শট খেলতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসতে এতটুকুও কার্পণ্য দেখায় না তারা।
অ্যান্টিগায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেটাই আবার করে দেখালো বাংলাদেশ। ক্যারিবীয়দের শক্তিশালী পেস আক্রমণের বিপক্ষে অদ্ভুত আর অপ্রয়োজনীয় শট খেলতে গিয়ে অল্পতেই গুটিয়ে গেল সাকিব আল হাসানের দল। টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস মাত্র ১০৩ রানেই শেষ হয়ে গেছে। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এটা বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। দলের ছয়জন ব্যাটসম্যান রানের খাতাই খুলতে পারেননি।
যেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের ছবিই আবার দেখা গেল। গত মাসে অনুষ্ঠিত ওই টেস্টের প্রথম ইনিংসেও বাংলাদেশের ছয়জন ব্যাটসম্যান শূন্য রানে আউট হন। এরপরও বলার মতো সাফল্য মিলেছিল। ২৪ রানে ৫ উইকেট হারানো দলকে ওই ইনিংসেই ৩৬৫ রানে নিয়ে যান দুই সেঞ্চুরিয়ান লিটন কুমার দাস ও মুশফিকুর রহিম।
এবার তেমন কিছুর দেখা গেল না। কেউ-ই পারলেন না দলকে আলোর পথে ফেরাতে। তৃতীয় দফায় অধিনায়ক হিসেবে মিশন শুরু করার ম্যাচে সাকিবই যা রান করলেন। বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার ৬৭ বলে ৫১ রান করে বিদায় নেন। এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইনিংস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে ৫ হাজার রান পূর্ণ করা তামিম ইকবাল।
লিটন কুমার দাস করেন ১২ রান। সাকিব, তামিম ও লিটন; এই তিনজনই কেবল দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পেরেছেন। ২ রান করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এ ছাড়া বাকি ছয় ব্যাটসম্যানের কেউই রানের খাতা খুলতে পারেননি। শূন্য রানে সাজঘরে ফেরা ব্যাটসম্যানরা হলেন মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, নুরুল হাসান সোহান, মুস্তাফিজুর রহমান ও খালেদ আহমেদ।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে। অফ স্টাম্পের বাইরের লেংন্থ বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন জয়। ১৫ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে আসা তামিম আউট হন লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে। শান্ত ব্যাট চালিয়েছেন ব্যাট ও প্যাডের মাঝে অনেকটা জায়গা রেখে।
মুমিনুল অস্প স্টাম্পের বাইরের লেংন্থ বলে ব্যাট চালিয়ে স্লিপে ধরা পড়েন। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা লিটনও এদিন হতাশ করেছেন। মিরাজের আউটও চরম হতাশার। লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে অযথা ব্যাট চালিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। সোহান অনেকটা পা বাড়িয়ে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন। অধিনায়ক সাকিবও খেই হারান, শট খেলতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন তিনি।
বাংলাদেশের ইনিংসে প্রথম আঘাত হানা কেমার রোচ ২টি উইকেট নেন। আলজারি জোসেফের শিকার ৩৩ রানে ৩ উইকেট, টেস্টে এটাই তার সেরা বোলিং। জেডেন সিলসও নেন ৩ উইকেট। কাইল মেয়ার্সের শিকার ২ উইকেট। এর চার ক্যারিবীয় পেসার মিলেই বাংলাদেশের ইনিংস ধসিয়ে দেন।