সীতাকুণ্ডে অগ্নিদগ্ধদের পাশে থাকার আহ্বান মাশরাফি-তামিমদের
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারি এলাকার কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯। সকাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একের পর এক মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স আসছে। চারপাশে তৈরী হয়েছে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। এমন ঘটনায় মর্মাহত বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। সবাইকে অগ্নিদগ্ধদের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, 'চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনারের ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং যারা আহত হয়েছে তাদের প্রতি রইল সমমর্মিতা। আমি চট্টগ্রামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সাধারণ মানুষদের অনুরোধ করি যেন হতাহতদের সাহায্যে এগিয়ে আসে। শুনেছি প্রচুর রক্তের প্রয়োজন। সবাই এগিয়ে আসুন। আপনার একটু সহযোগিতা, এক ব্যাগ রক্ত হয়তো বাঁচিয়ে দিতে পারে একটি প্রাণ, হাসি ফোটাতে পারে একটি পরিবারকে। সকলে প্রার্থনা করি।'
রোববার একটি মোবাইল কোম্পানির অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের ছেলে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেছেন, 'যা হয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আহত এবং নিহত হয়েছে; তাদের পরিবারের প্রতি আমাদের সবার দোয়া আছে। আমরা যে যেখানে আছি, ঢাকা বলেন, সিলেট বলেন, খুলনা বলেন; আমরা আমাদের দিক থেকে ছোট-বড় যতটুকু পারি, সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে আসি। আশা করি, তারা সবার কাছ থেকে সব রকমের সহযোগিতা পাবে। আর আমাদের দোয়া তাদের সঙ্গে আছে। আমরাও তাদের পাশে আছি।'
মুশফিকুর রহিম তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, 'চট্টগ্রামের খবর শুনে মর্মাহত। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য প্রার্থনা। শক্ত থাকো সীতাকুণ্ড। আল্লাহ আমাদের সবাইকে নিরাপদে রাখুন।' পেসার তাসকিন আহমেদ লিখেছেন, 'আসুন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ, ফায়ার ফাইটার , ডাক্তার, পুলিশসহ উদ্ধারকার্যে অংশ নেয়া সবার জন্য দোয়া করি। যে যেভাবে পারি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিই৷ হে আল্লাহ, তুমি আমাদের হেফাজত করো।'
ডানহাতি ব্যাটসম্যান লিটন কুমার দাস তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, 'চট্টগ্রামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সকলকে অনুরোধ করবো চট্টগ্রাম মেডিকেলে অবস্থান করার জন্য। সীতাকুণ্ডের কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা অনেক, প্রচুর পরিমাণ রক্তের প্রয়োজন হচ্ছে। দয়া করে যে যেখানে আছেন সাধ্যের মধ্যে থাকলে এখনই ছুটে যান, আপনার এক ব্যাগ রক্ত হয়তো বাঁচিয়ে দিতে পারে একটি প্রাণ। আপনার পরিচিত রক্তযোদ্ধা বন্ধুদেরও আসার জন্য অনুরোধ করুন। মানুষ মানুষের জন্য।'
নাম ও রক্তের গ্রুপ উল্লেখ করা একটি ছবি পোস্ট করে অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন লিখেছেন, 'চট্টগ্রামের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিস্ফোরণ। যে যার সাধ্যমতো এগিয়ে আসুন। প্রচুর রক্তের প্রয়োজন বিভিন্ন সরকারি/বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে। সেই সাথে এখনও অগ্নিকাণ্ড পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। তাই এম্বুলেন্স ও আরও ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি নিয়ে সবাই সীতাকুণ্ডের দিকে দ্রুত অগ্রসর হোন।'
আরেক অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ লিখেছেন, 'জীবন বাঁচাতে এগিয়ে আসুন! চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের একটি কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শত শত মানুষ আহত হয়েছেন। অসংখ্য রোগীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আহতদের জন্য প্রচুর পরিমাণে রক্তের প্রয়োজন।'
'সকল গ্রুপের রক্ত দরকার হতে পারে, তাই আশেপাশের রক্তদাতা ও স্বেচ্ছাসেবী ভাইয়েরা সম্ভব হলে চট্টগ্রাম মেডিকেলে যান। রক্ত দিন, জীবন বাঁচান! আপনার এক ব্যাগ রক্ত হয়তো বাঁচিয়ে দিতে পারে একটি প্রাণ। সবাই সবার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন দয়া করে। আল্লাহ সবাইকে রক্ষা করুন।'
শনিবার রাত ১১টার দিকে ভাটিয়ারিতে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। এতে রাসায়নিকের অনেকগুলো কনটেইনার একসঙ্গে বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণে আশেপাশের বেশ কয়েকটি ভবনের জানালা ভেঙে যায়। ৪ কিলোমিটার দূরের এলাকা থেকেও বিস্ফোরণের ধাক্কা টের পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।