‘ওই সময়ে মাঠে থাকলে হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেত’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠের দলটির শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের। ২৪ রানের মধ্যেই হারাতে হয় ৫ উইকেট। বাংলাদেশ যখন মাঝ দরিয়ায়, তখন মাঠে ছিলেন না বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। সে সময় মাঠে থাকলে হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেত বলে জানিয়েছেন তিনি।
২৪ রানে পাঁচ উইকেট হারানো বাংলাদেশই আর কোনো উইকেট না হারিয়ে প্রথম দিন শেষ করেছে, স্কোরকার্ডে জমা হয়েছে ২৭৭ রান। এর নেপথ্যে দুজন কাণ্ডারী; মুশফিকুর রহিম ও লিটন কুমার দাস। ধ্বংস্তূপ থেকে দলকে টেনে তুলে ব্যাট হাতে শাসন করেন তারা। দুজনই সেঞ্চুরি করে অপরাজিত আছেন। দলকে বিপদমুক্ত করায় মুশফিক-লিটনকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। এ দুজনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অভিনন্দন জানিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
ব্যাটিং করতে নেমে শূন্য রানেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। লঙ্কান দুই পেসার কাসুন রাজিথা ও আসিথা ফার্নান্দোর বোলিং তোপে পড়ে অল্প সময়ের মধ্যে একে একে ফিরে যান তামিম ইকবাল, মুমিনুল হক, নাজমুল হাসান শান্ত, সাকিব আল হাসানরা। এই বিপর্যয় মাঠে বসে দেখা হয়নি নাজমুল হাসানের। বিসিবি সভাপতি তখন বাংলাদেশ সফররত আইসিসি চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলের সঙ্গে নানা কর্মসূচিতে ব্যস্ত।
দিনশেষ অবশ্য স্বস্তিতেই নাজমুল হাসান পাপন। মুশফিক-লিটনের ২৫৩ রানের রেকর্ড জুটিতে দারুণ কিছুর আশায় বাংলাদেশ। যে কারণে খুশি মনেই আইসিসি চেয়ারম্যানকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে যান নাজমুল হাসান। শুরুতেই জানিয়ে দেন তার কী অবস্থা হয়েছিল। মজা করে তিনি বলছিলেন, 'হার্টের ডাক্তার দেখিয়ে নিই একটু, আগে কার্ডিওলজিস্টের কাছে যাই।'
বাংলাদেশের বিপর্যয়ের প্রসঙ্গ উঠলে নাজমুল হাসান বলেন, 'ওই সময় থাকলে হার্ট অ্যাটাক হতো, আল্লাহর রহমত আমি ছিলাম না। আমি তো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞেস করলেন, "এই, কি অবস্থা খেলার?" আমি বললাম, 'আপা, সাহস নেই দেখার। যতক্ষণ মাঠে না যাব, আমি শুনছি না।" মাঠে এসে লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে দেখলাম এই অবস্থা। তখন তো ন্যাচারালি একটা শক (পেলাম)। তবে যেভাবে মুশফিক ও লিটন ব্যাট করেছে, বিশেষ প্রশংসা ওদের প্রাপ্য। অবিশ্বাস্য।'
আইসিসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করাসহ প্রধানমন্ত্রী খেলার খবরও রেখেছেন জানিয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, 'আমাদের প্রধানমন্ত্রী ক্রীড়াপ্রেমী, বিশেষ করে ক্রিকেট। আজ তার মেডিকেল অ্যাপয়েনমেন্ট ছিল, তার পরও ঠিক করেছিলেন, আগে আইসিসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করবেন। আজ অনেক সময় দিয়েছেন তিনি, অনেক আগ্রহ দেখিয়েছেন।'
লিটন ও মুশফিককে প্রধানমন্ত্রী অভিনন্দন জানান। এ বিষয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন, 'আজ আমরা যখন হেলিকপ্টারে ফিরছিলাম, লিটন সেঞ্চুরি করল, যে মুহূর্তে সে সেঞ্চুরি করল, প্রধানমন্ত্রী আমাকে ম্যাসেজ পাঠালেন, 'লিটনকে অভিনন্দন।' আমি শুরুতে দেখতে ভয় পাচ্ছিলাম, গত টেস্টে লিটন অল্পের জন্য হাতছাড়া করেছিল (সেঞ্চুরি)। তার পর আপার আরেকটি ম্যাসেজ দেখলাম, 'মুশফিককে অভিনন্দন।' গ্রেগের (বার্কলে) জন্যও নিশ্চিতভাবে এটা দারুণ অভিজ্ঞতা। আমরা এ রকমই ক্রিকেটপ্রেমী জাতি।'