দেশে ফিরে খেলতে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চান সাকিব
অনেকটা 'যাযাবর'- এর মতো বিদেশ ঘুরে ঘুরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হয়ে খেলছেন সাকিব আল হাসান। গত জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলে দেশে ফিরে দুদিনের মধ্যেই দেশ ছাড়েন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। এরপর বাইরে থেকেই দেশের হয়ে সিরিজ খেলছেন তিনি। সাকিব কবে দেশে ফিরবেন, আপাতত এই তথ্য কারও কাছে নেই। খোদ সাকিবও নিশ্চিত নন এ বিষয়ে। তবে দেশে ফিরে খেলতে চান, এর জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তার আশায় তিনি।
গত জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মাগুরা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাকিব। খেলার মাঠে থাকাকালীনই রাজনীতির মাঠে নামা বাংলাদেশ অলরাউন্ডার কয়েক মাসের মধ্যেই কঠিন সময়ের মুখোমুখি হন। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কিছুদিন পর হত্যা মামলায় নাম আসে সাকিবের। এরপর তাকে দল থেকে বাদ দিয়ে দেশে ফেরানোর জন্য বিসিবিতে পাঠানো হয় উকিল নোটিশও।
বিসিবি অবশ্য সাকিবের পাশেই আছে, দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত তিনি জাতীয় দলের হয়ে খেলে যাবেন বলে জানান বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। সাকিবকে আইনি সহায়তা দেওয়ার কথাও জানান বিসিবি প্রধান। বিসিবিকে পাশে পেলেও দেশে নিজের নিরাপত্তার ব্যাপারে নিশ্চিত নন সাকিব। তাই ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজের ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট সিরিজ খেলতে আসার আগে নিরপত্তা নিশ্চয়তার আশায় তিনি। এ ছাড়া দেশের বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রেও যেন কোনো সমস্যা না হয়, সেই নিশ্চয়তা চান অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার।
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ২৭ সেপ্টেম্বর কানপুরে শুরু হবে। এই ম্যাচের আগেরদিন দলের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে আসেন সাকিব। এদিন সাংবাদিকদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন দেশের ইতিহাসের এই সেরা ক্রিকেটার। ঘরের মাঠে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে খেলে টেস্টকে বিদায় বলতে চান তিনি। এর আগে দেশে ফিরে তিনি যেন নিরাপদ অনুভব করেন, সেই চাওয়া সাকিবের।
নিরাপত্তার ঝুঁকির বিষয়টি উল্লেখ করে সাকিব বলেছেন, 'আমি যেন গিয়ে খেলতে পারি এবং নিরাপদ অনুভব করি। যখন দেশের বাইরে আসার দরকার হবে, দেশের বাইরে আসতেও যেন আমার কোনো সমস্যা না হয়। বোর্ড খেয়াল করছে। বিষয়গুলোর সঙ্গে যারা জড়িত, তারা দেখছেন। তারা হয়তো আমাকে একটা সিদ্ধান্ত দেবেন, যেটার ভিত্তিতে আমি দেশে গিয়ে খুব ভালোভাবে খেলে অন্তত টেস্ট ফরম্যাটটা ছাড়তে পারব।' সাকিব পরিষ্কার করেই জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্টদের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে তার দেশে ফেরার বিষয়টি।
দীর্ঘ সময় ধরে দেশের বাইরে আছেন সাকিব। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলে দেশে ফিরে দুদিনের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার, সেখানে খেলেন মেজর লিগ ক্রিকেট (এমএলসি)। এরপর কানাডাতে বাংলা টাইগার্স মিসিসাগার অধিনায়ক হিসেবে খেলেন গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি। এরপর পাকিস্তানের মাটিতে খেলেন টেস্ট সিরিজ। এই সিরিজের পর ইংল্যান্ডে সারের হয়ে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে একটি ম্যাচ খেলে ভারতে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে যোগ দেন সাকিব, বর্তমানে সেখানেই আছেন তিনি।