১০ বছর পর প্রথম জয়ের খোঁজে থাকা বাংলাদেশের দৃষ্টি সেমিতেও
গ্রুপ পর্ব, শেষ আট পেরিয়ে তারপর সেমি-ফাইনাল। সেরা চারের লড়াইয়ে নিজেদের দেখতে চাইলে পেরোতে হবে আগের ধাপগুলো। কিন্তু সেমি-ফাইনাল তো দূরের কথা, নারী টি-টায়েন্টি বিশ্বকাপে একটি জয়ই রীতিমতো সোনার হরিণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের জন্য। ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো আসরটিতে অংশ নেওয়া দলটি সেবার ঘরের মাঠে দুটি ম্যাচ জেতে। আর ওই দুই ম্যাচই হয়ে আছে শেষ সুখস্মৃতি।
এরপর আরও চারটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছে বাংলাদেশ, জিততে পারেনি একটি ম্যাচও। ১০ বছর পর এবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের প্রধান মিশন একটি ম্যাচ জেতা, ভুলতে বসা জয়ের স্বাদ নতুন করে নেওয়া। কিন্তু স্বপ্ন এতোটুকুতেই সীমাবদ্ধ নয়, জয়খরা কাটিয়ে এবার তারা দৃষ্টি দিচ্ছে সেমি-ফাইনালেও। বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে আজ মিরপুরে অফিসিয়াল ফটোসেশনের পর সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের লক্ষ্যের প্রশ্নে নিগার সুলতানা জ্যোতি জানালেন, সেমি-ফাইনাল কে না খেলতে চায়!
বিশ্ব আসরে সেরা চারে জায়গা করে নেওয়া কতোটা কঠিন, তা জানেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এ কারণে আগে জয়খরা কাটিয়ে আত্মবিশ্বাস কুড়িয়ে লড়তে চান সেমি-ফাইনালের জন্য। নিগার বলেন, 'লক্ষ্য অবশ্য ম্যাচ জেতা। ২০১৪ সাল ছাড়া বিশ্বকাপে আমরা আর কখনও কোনো ম্যাচ জিততে পারিনি। ভালো ক্রিকেট খেলেছি, কিন্তু জিততে না পারলে সেটির কোনো মানে নেই। প্রথম তাই লক্ষ্য থাকবে ম্যাচ জেতা, দ্বিতীয়ত, যখন আমরা ফ্লো পাব… সেই ফ্লোতেই… সেমি-ফাইনাল কে না খেলতে চায়!'
'আমাদেরও লক্ষ্য থাকবে তেমন কিছু করা। আমরা জানি যে, আমাদের ক্রিকেট যদি এক ধাপ এগিয়ে নিতে চাই, তাহলে বিশ্বকাপের চেয়ে বড় জায়গা আর হতে পারে না। ওখানে ভালো করলে, আমাদের মেয়েদের ক্রিকেট, শুধু আমরা নই, বাকি যে মেয়েরা, বাংলাদেশের জার্সি গায়ে যারা খেলতে চায় বা স্বপ্ন দেখে যে বাংলাদেশের হয়ে বড় কিছু করবে, তাদের জন্য আমরা ভালো কিছু করতে চাই।' বলেন নিগার।
৩ অক্টোবর শুরু হতে যাওয়া নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড। দলটির বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে কখনও হারেনি তারা। তবে সেমিতে উঠতে কেবল স্টকিশদের হারালেই চলবে না জানিয়ে নিগার বলেন, 'সেমি-ফাইনালে যেতে হলে কিন্তু শুধু স্কটল্যান্ড নয়, বাকি তিনটা ম্যাচ থেকেও জিততে হবে। প্রতিটি দলের বিপক্ষে ভিন্ন পরিকল্পনা তো অবশ্যই থাকবে।'
'প্রতিটি ম্যাচের আগে যদি ওই দলের প্রতি বেশি মনোযোগ দিই এবং আমরা যদি আমাদের ম্যাচ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারি, জন্য ভালো হবে। আমরা কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে এসেছি টি-টোয়েন্টিতে (তাদের দেশে), তাই তাদের বিপক্ষে আমাদের ভালো অভিজ্ঞতা আছে। ইংল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের বরাবরই শুধু বিশ্বকাপে দেখা হয় এবং খুবই কম খেলা হয়। নতুন প্রতিপক্ষ, ওদের জন্যও কিন্তু কঠিন হতে পারে। শারজাহতে খেলা, আমাদের স্পিন ভালো। কে জানে (কিছু হতেও পারে)…!' যোগ করেন তিনি।
এবারের নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর পরিস্থিতি বিবেচনায় আসরটি সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিয়ে যায় আইসিসি। তবে আনুষ্ঠানিক আয়োজক বাংলাদেশই থাকছে, এ কারণেই তারা উদ্বোধনী ম্যাচ খেলবে। গ্রুপ পর্বে পরের তিন ম্যাচে বাংলাদেশ ৫ অক্টোবর ইংল্যান্ড, ১০ অক্টোবর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ১২ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে লড়বে। প্রথম তিনটি ম্যাচ শারজাহতে খেলবে তারা, শেষটি দুবাইয়ে।