হার থেকে কতোটা দূরে বাংলাদেশ
ভারতের বিপক্ষে চেন্নাই টেস্টে বাংলাদেশ হারতে যাচ্ছে, এটা এক প্রকার অবধারিত। হারের ব্যবধানটা বড় হতে পারে, সেটাও অনুমান করা যাচ্ছে। এই হার থেকে বাংলাদেশ কতোটা দূরে, কেবল এই ব্যাপারটি অমিমাংসিত। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ যে রান তুলেছে, তা প্রতিপক্ষের দেওয়া লক্ষ্যের এক-চতুর্থাংশের কিছুটা বেশি। ৬ উইকেটে দুই দিনে বাকিটা পথ পাড়ি দেওয়া প্রায় অসম্ভব তাদের জন্য। আবহাওয়া বাগড়া না দিলে হারই হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের অমোঘ নিয়তি।
রেকর্ডও রোখ রাঙানি দিচ্ছে নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে। এই চোখ রাঙানি উপেক্ষা করতে জিততে হলে বাংলাদেশকে গড়তে হবে ইতিহাস। বাংলাদেশের সামনে ৫১৫ রানের বিশাল লক্ষ্য, এই রান টপকানো মানে টেস্টের ইতিহাস নতুন করে লেখা। এর আগে কোনো দলই এতো রান তাড়া করে জিততে পারেনি, টেস্টের ১৪৭ বছরের দীর্ঘ ইতিহাসে ৪০০'র বেশি রান তাড়া করে জেতার ঘটনাই কেবল ৪টি।
বাংলাদেশ তাদের নিয়তি বুঝতে পারছে, তাদের লক্ষ্য নিশ্চয়ই পাহাড়সমান এই রান পাড়ি দেওয়া নয়। আগের ইনিংসের হতাশা কাটিয়ে এবার ভালো খেলাই হয়তো একমাত্র লক্ষ্য সফরকারীদের। সে পথে শুরুটা ভালোও হয়েছিল বাংলাদেশের। যদিও তৃতীয় দিন শেষে প্রত্যয়ী শুরুর সেই তৃপ্তি থাকেনি দলটির। চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ১৫৮ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। অধিনায়ক শান্ত ৫১ ও সাকিব আল হাসান ৫ রানে অপরাজিত আছেন। অসাধ্য সাধন করে জিততে বাংলাদেশকে করতে হবে আরও ৩৫৭ রান।
ভারত সফরের আগে পাকিস্তানে দারুণ সময় কাটে বাংলাদেশের। আগের ১৩ টেস্টের ১২টিতেই হারা দলটিই এবার ইতিহাস লেখে। প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটে জেতা বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানকে হারায় ৬ উইকেটে। পাকিস্তানের মাটিতে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতায় দলকে নিয়ে প্রত্যাশা বাড়ে, ভারত সফরেও দারুণ কিছুর আশা করে সবাই। ক্রিকেটাররাও জানান প্রত্যয়ের কথা। শুরুটা তেমনই হয়েছিল। চলমান টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৪৪ রানেই ভারতের ৬ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু এখান থেকে ভারত যে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে, তা আর বদলায়নি।
বড় লক্ষ্য পাড়ি দিতে নেমেও ভড়কায়নি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ভালোই শুরু করে তারা, উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ৬২ রান। দুই ওপেনার জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম অনিক সাবলীলভাবেই খেলে যাচ্ছিলেন। এই জুটি ভাঙেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ভারতের পেসারের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে থামেন ৩৩ রান করা জাকির। দলীয় রান ৮০ পেরোনোর পর সহজ ক্যাচ তুলে বিদায় নেন সাদমান। ফ্লিক করতে গিয়ে গড়বড় টাইমিংয়ে মিড উইকেটে শুভমান গিলের হাতে ধরা পড়েন ৩৫ রান করা বাঁহাতি এই ওপেনার।
ইনিংস বড় করতে পারেননি মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। রবীন্দ্রচন অশ্বিনের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১৩ রান করেন মুমিনুল। মিড অফে সহজ ক্যাচ তুলে বিদায় নেওয়ার আগে মুশফিকও করেন ১৩ রান। এর কয়েক ওভার পরই আলোক স্বল্পতার কারণে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ ঘোষণা করেন আম্পায়ার, এদিন আরও ৯.৪ ওভারের খেলা বাকি ছিল। ভারতের প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে ত্রাতার ভূমিকায় থাকা অভিজ্ঞ স্পিনার অশ্বিন নিয়েছেন ৩ উইকেট, বাকি উইকেটটি গেছে বুমরাহর ঝুলিতে।