নিজেকেই লিটনের প্রশ্ন, ‘এখন দায়িত্ব না নিলে আর কবে’
ব্যাট হাতে অনেকদিন খারাপ সময় গেছে লিটন কুমার দাসের, কোনো ফরম্যাটেই পাননি রানের দেখা। এ সময়ে তাকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিকার হয়েছেন বিদ্রুপের, দল থেকে হারাতে হয়েছে জায়গাও। পাকিস্তান সফর দিয়ে রানে ফিরেছেন উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান। ব্যাটকে কথা বলানোর সিরিজে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলাসহ দলের দুঃসময়ে পালন করেছেন বিশেষ দায়িত্বও। নিজেকে অভিজ্ঞ মনে করা লিটন নিজেকেই প্রশ্ন করতে শিখেছেন, এখন দায়িত্ব না নিলে আর কবে!
পাকিস্তানের মাটিতে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে ব্যাটিংয়ে লিটন হয়ে উঠেছিলেন দলের অন্যতম ভরসার নাম। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে জুটি গড়ার পথে খেলেন ৫৬ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে ৬ উইকেট হারানো দলের হাল ধরে মেহেদী হাসানের মিরাজের সঙ্গে রেকর্ড জুটি গড়া লিটন তুলে নেন সেঞ্চুরি, খেলেন ১৩৮ রানের মহামূল্যবান ইনিংস। এই সেঞ্চুরিতে টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ছয় বা সাতে ব্যাটিং করে তিনটি সেঞ্চুরির মালিক হন লিটন।
দলের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়, সেখানে ব্যাট হাতে নিজের অবদান মনে রাখার মতো। আবার গ্লাভস হাতেও দুর্বার ছিলেন লিটন, দুই টেস্টের সিরিজে ১২টি ডিসমিসাল করেন তিনি। যা বাংলাদেশের উইকেটরক্ষকদের মধ্যে সিরিজের সর্বোচ্চ। সব মিলিয়ে মাঠের লড়াইয়ে দারুণ সময় কাটে লিটনের। ভারত সফরের প্রস্তুতিতে মিরপুর স্টেডিয়ামে দলের সঙ্গে ব্যস্ত সময় পার করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানকে দায়িত্ব নেওয়ার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, এখনই সময় দায়িত্ব নেওয়ার।
২০১৫ সালে বাংলাদেশ দলে অভিষেক লিটনের, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার পথচলার বয়স ৯ বছর। এই সময়টাতে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে জানিয়ে প্রত্যয়ী কণ্ঠে লিটন বললেন, 'স্বাভাবিক, প্রায় ৯-১০ বছর হয়ে গেছে আমি ক্রিকেট খেলছি। অতোটুকু অভিজ্ঞতা তো হয়েছে। এখনই সময় দায়িত্ব নেওয়ার। এখন যদি দায়িত্ব না নিই, তাহলে আর কবে! আর আমি বলছি যে দায়িত্ব নেওয়ার সময় এসেছে, জিনিসটা এমন না যে, প্রতি ম্যাচে আমাকে দায়িত্ব নিতে হবে। আমি মানুষ, ভুল হতে পারে।'
খারাপ সময়ে সমালোচনা, বিদ্রুপের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে লিটন বলেন, 'যদি সঠিক উত্তর দিই, আমি এসব নিয়ে চিন্তাই করিনি। আমি শুধু আমাকে নিয়ে চিন্তা করেছি কীভাবে পরিশ্রম করা যায়, আরও ভালো হওয়া যায়। ভুল উত্তর হলো, সারাদিন রুমে বসে কান্না করতাম, এটা হলো মন রক্ষার্থে। তবে এটা বিষয় নয়, ক্রিকেটাররা সব সময় ভালো খেলবে না। তবে খারাপ সময়ে চেষ্টা করে ভালো কিছু করার। একটাই পথ আছে আমাদের ভালো করার, সেটা হলো অনুশীলন। আমি চেষ্টা করেছি অনুশীলনে অনেক পরিশ্রম করার এবং এটা ম্যাচে কীভাবে কাজে লাগানো যায়।'