হাসান-নাহিদ-তাসকিনদের এই সাফল্য টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম
পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে দুই হাত ভরে মিলছে বাংলাদেশের। প্রথম ম্যাচে ঐতিহাসিক জয় তুলে নেয় তারা, দলটির বিপক্ষে মেলে প্রথমবারের মতো টেস্ট জয়ের স্বাদ। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে জুটি এবং নিজেদের ইনিংস দিয়ে কয়েকটি রেকর্ডে নাম তুলেছেন লিটন কুমার দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজ, যা টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসেই আগে কখনও দেখা যায়নি। এবার পেসারদের কল্যাণে এমন দৃশ্য দেখা গেল, যা টেস্টে আগে কখনও করতে পারেনি বাংলাদেশ।
রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংস ১৭২ রানে গুটিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষকে অল্প রানে বাধতে নেতৃত্ব দেন হাসান মাহমুদ, তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ৫ উইকেট। আগুনে বোলিংয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন ২১ বছর বয়সী তরুণ নাহিদ রানা। বাকি উইকেটটি গেছে তাসকিনের আহমেদের ঝুলিতে। ঠিক ধরেছেন, তিনজনই পেসার। তিন পেসার মিলে পাকিস্তানের ১০ উইকেট নিয়েছেন। যা টেস্টে বাংলাদেশের জন্য প্রথম অভিজ্ঞতা।
২০০০ সাল থেকে টেস্ট ক্রিকেট খেলে আসছে বাংলাদেশ। এই ২৪ বছরের বেশিরভাগ সময়ে প্রতিপক্ষকে আটকানোর কৌশলে স্পিনারদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। সাফল্যও মিলেছে স্পিনারদের হাত ধরে। কন্ডিশন বিবেচনায় পেসারদের ওপর ভরসা রেখে বাংলাদেশের সাফল্য পাওয়ার পরিমাণ উল্লেখ করার মতো নয়। পেসাররা মিলে আগে কখনই প্রতিপক্ষের ইনিংসের সব উইকেট নিতে পারেননি। চারবার খুব কাছে গিয়েও মেলেনি ১০ উইকেট।
এই সাফল্যের আগে চারবার ইনিংসে ৯টি করে উইকেট নেন বাংলাদেশের পেসাররা মিলে, চারবার নিয়েছেন ৮টি করে উইকেট। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পরের বছরই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের পেসাররা ১০ উইকেট নেওয়ার খুব কাছে চলে যান। ২০০১ সালে বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসে হাসিবুল হোসেন শান্ত, মঞ্জুরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ শরিফ মিলে ৯ উইকেট নেন। মঞ্জুরুল ৬টি, শান্ত ২টি ও শরিফ পান একটি উইকেট। বাকি উইকেটটি পান নাঈমুর রহমান দূর্জয়।
একই বছরে হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাশরাফি বিন মুর্তজা, মঞ্জুরুল ইসলাম, মোহাম্মদ শরিফ ও খালেদ মাহমুদ সুজন মিলে নেন ৯ উইকেট। ২০০৫ সালে কলম্বোতে সৈয়দ রাসেল, শাহাদাত হোসেন ও আফতাব আহমেদ মিলে শিকার করেন ৯ উইকেট। রাসেল ও শাহাদাত ৪টি করে উইকেট নেন। ২০২২ সালে মাউন্ট মঙ্গানুইতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইবাদত হোসেন ও তাসকিন আহমেদ মিলে নেন ৯ উইকেট। ইবাদত একাই নেন ৬ উইকেট।
বাংলাদেশের পেসারদের চারবার করে নেওয়া ৯ ও ৮ উইকেটের সাতটিই বিদেশের মাটিতে। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের পেসারদের সর্বোচ্চ শিকার ৮ উইকেট, গত বছর মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। আফগানদের দ্বিতীয় ইনিংসে শরিফুল ইসলাম ৩টি, তাসকিন আহমেদ ৪টি ও ইবাদত একটি উইকেট পান। বাংলাদেশের পেসাররা প্রথমবারের মতো ইনিংসে ১০ উইকেট নিলেও টেস্টে এটা দেখা গেছে মোট ৮৫৯ বার। ওয়ানডেতে ১৫৮ ও টি-টোয়েন্টিতে ২৪ বার।
ইনিংসে বাংলাদেশের পেসারদের সম্মিলিত সেরা সাফল্য:
প্রতিপক্ষ | উইকেট | ভেন্যু | সাল |
পাকিস্তান | ১০ | রাওয়ালপিন্ডি | ২০২৪ |
জিম্বাবুয়ে | ৯ | বুলাওয়ে | ২০০১ |
নিউজিল্যান্ড | ৯ | হ্যামিল্টন | ২০০১ |
শ্রীলঙ্কা | ৯ | কলম্বো | ২০০৫ |
নিউজিল্যান্ড | ৯ | মাউন্ট মঙ্গানুই | ২০২২ |