দুর্বার মিরাজ-তাসকিনে বাংলাদেশের দিন
পাকিস্তানের বিপক্ষে তাদের ঘরের মাঠেই সিরিজের প্রথম টেস্ট জিতে আত্মবিশ্বাসে টইটুম্বুর বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। দ্বিতীয় টেস্টেও বল হাতে শাসন দেখা গেল বাংলাদেশের বোলারদের। তাসকিন আহমেদ শুরুটা করে দিলেন, এরপর দায়িত্বটা যেন একাই কাঁধে তুলেন নিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ডানহাতি এই অফ স্পিনার মধ্যাহ্ন বিরতির পর থেকে দুর্বার বোলিংয়ে স্বাগতিকদের করে তুললেন দিশেহারা। বড় হলো না পাকিস্তানের ইনিংস।
রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানকে ২৭৪ রানে অলআউট করে দিয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন শেষ হওয়ার আগে কোনো উইকেট না হারিয়ে ২ ওভার ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ, স্কোরকার্ডে জমা হয়েছে ১০ রান। দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম অনিক ৬ ও জাকির হাসান শূন্য রানে অপরাজিত আছেন। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ পিছিয়ে ২৬৪ রানে।
আরও আগেই পাকিস্তানের ইনিংস শেষ হতে পারতো, কিন্তু চারটি ক্যাচ ফেলায় তা হয়নি। স্বাগতিকদের ইনিংস তিনশ'র আগেই বাধার প্রধান কারিগর মিরাজ। জাতীয় দলের সাবেক স্পিনার মোহাম্মদ রফিকের পর দেশের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে পাকিস্তানের মাটিতে ইনিংস ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। এক বছরেরও বেশি সময় পর টেস্ট খেলতে নেমে দারুণ বোলিং করেন তাসকিন আহমেদ, তার শিকার ৩ উইকেট।
বৃষ্টির কারণে এই টেস্টের প্রথম দিন একটি বলও মাঠে গড়ায়নি, হয়নি টসও। দ্বিতীয় দিন টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠান বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। শরিফুলের জায়গায় সুযোগ পাওয়া তাসকিন ইনিংসের প্রথম ওভারেই শফিকের স্টাম্প উপড়ে নেন। দারুণ পেস ও সুইংয়ে পাকিস্তান ওপেনারকে পরাস্থ করেন গত বছরের জুনের পর প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলতে নামা এই পেসার।
এরপর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন সাইম আউয়ুব ও অধিনায়ক শান মাসুদ। দ্বিতীয় উইকেটে তারা যোগ করেন ১০৬ রান। এ পথে দুজনই তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। দলীয় ১০৭ রানে শানকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন মিরাজ। সাজঘরে ফেরার আগে ৬৯ বলে ২টি চারে ৫৭ রান করেন পাকিস্তান অধিনায়ক। পাঁচ ওভার পর আবারও মিরাজের ছোবল, এবার তার শিকার ১১০ বলে ৪টি চার ও ২টি চক্কায় ৫৮ রান করা সাইম।
সৌদ শাকিলকে সাবলীল মনে হলেও তাকে টিকতে দেননি তাসকিন, ১৬ রান করে ফেরেন শাকিল। ১৫১ রানে ৪ উইকেট হারানো দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তারকা জুটি বাবর-রিজওয়ান। কিন্তু সাকিবের বাধায় তাদের মিশন সফল হয়নি। এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ৩১ রান করা বাবরকে ফেরান বাংলাদেশ অলরাউন্ডার। এদিন রিজওয়ান বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি, ২৯ রান করা এই ব্যাটসম্যানকে ফেরান তরুণ পেসার নাহিদ রানা।
সাইম ও শানের পর পাকিস্তানের হয়ে লড়েছেন কেবল সালমান আগা। স্রোতের বিপরীতে ব্যাটিং করে যাওয়া স্বাগতিকদের এই অলরাউন্ডার ৯৫ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৪ রান করেন। তাকে নিজের তৃতীয় শিকারে পরিণত করেন তাসকিন। খুররাম শাহজাদ, মোহাম্মদ আলী ও আববার আহমেদকে ফেরান মিরাজ। টেস্ট ক্যারিয়ারে দশমবার ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেন তিনি, যা বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ। সাকিব ও নাহিদ একটি করে উইকেট নেন।