‘সবাই ম্যাচ দুটি জেতার পরিকল্পনা করেছে’
বাংলাদেশের প্রিয় ফরম্যাট ওয়ানডে, এই ফরম্যাটে প্রায়ই জয়ের স্বাদ মেলে। সর্বশেষ বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স বাদ দিলে ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে শক্তিশালী দল হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাট টি-টোয়েন্টিতেও প্রতিপক্ষকে হারায় তারা। কিন্তু টেস্ট আঙিনায় এখনও নিজেদের অবস্থান তৈরি করা হয়নি বাংলাদেশের। কালেভদ্রে যে জয় মেলে, তা রীতিমতো রেকর্ড ঘেটে বের করতে হয়। এরপরও ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জেতার আশায় বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
কিউইদের বিপক্ষে ১৭টি টেস্ট খেলা বাংলাদেশের জয় মাত্র একটি। বাকি ১৬ ম্যাচের ১৩টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ, ড্র হয় ৩টি ম্যাচ। অনেক এগিয়ে থাকা দলটির বিপক্ষে এবার নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। দলে নেই অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন কুমার দাস। চোটের কারণে খেলা হচ্ছে না দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও এবাদত হোসেনের। এরপরও শান্তর বিশ্বাস, সিরিজ জেতার সামর্থ্য আছে তাদের। এ পথে তার আত্মবিশ্বাসের রসদ ঘরের মাঠের কন্ডিশন ও বোলিং শক্তি।
কাল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার প্রথম টেস্ট। আগের দিন শান্ত জানালেন, বোলিং আক্রমণ বিবেচনায় ঘরের মাঠে যেকোনো প্রতিপক্ষকে হারানোর মতো দল বাংলাদেশ। তার ভাষায়, 'আমাদের যে বোলিং আক্রমণ আছে, আমরা দেশে জেতার মতো দল। আস্তে আস্তে সেই অভ্যাসও তৈরি করা দরকার। দেশে ম্যাচ জেতা আমাদের কাছে সবচেয়ে প্রাধান্য পাচ্ছে, যেকোনো দলের বিপক্ষে। এরপর দেখতে হবে দেশের বাইরে কীভাবে অন্য দলের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি।'
পরিকল্পনামাফিক এগোতে পারলে দুটি ম্যাচই জেতা সম্ভব বলে বিশ্বাস এই সিরিজে নেতৃত্ব পাওয়া শান্তর, 'নিউজিল্যান্ড খুবই ভালো দল। টেস্টে অনেক চ্যালেঞ্জিং ও শক্তিশালী দল। যেহেতু দেশের মাটিতে খেলা, স্পিনার বা ব্যাটিং শক্তি চিন্তা করলে আমরা অবশ্যই ভালো দল। পরিকল্পনা কাজে লাগালে এই দলকে হারানো সম্ভব। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারলে ভালো করার খুব সম্ভাবনা আছে। সবাই ম্যাচ দুটি জেতার পরিকল্পনা করেছে। আমরা বিশ্বাস করি জিততে পারি, জেতার জন্যই খেলব। সবার মধ্যে ওই বিশ্বাস আছে।'
অভিজ্ঞ অনেকেই না থাকলেও দলটাকে একেবারে নতুন বলতে নারাজ শান্ত। দলে থাকা ক্রিকেটারদের ওপর ভরসা রেখে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আশায় তিনি, 'একদম নতুন দল বলব না, তবে অভিজ্ঞতা কম। একটা না একটা সময় হবে। যারা এতদিন খেলেছেন, সাকিব ভাই, তামিম ভাই, রিয়াদ ভাই… মুশফিক ভাই এখনও খেলছেন। এক সময় তারা খেলবেন না। এটা আমাদের নতুন ও তরুণদের জন্য সুযোগ, সবার এই চ্যালেঞ্জ নেওয়া উচিত এবং সবাই এই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত।'
'টপ অর্ডারে জাকির, জয়, সাদমান, সৌরভ (মুমিনুল) ভাই আছেন, সাথে আমি আছি। একটা ম্যাচ খেলেছি, তারা তো এনসিএলে খেলেছেন, বিশ্বকাপে ছিলেন না। আমার মনে হয় তাদের খুব ভালো প্রস্তুতি হয়েছে, সবাই মোটামুটি রানের মধ্যে ছিল। আমাদের অবশ্যই খারাপ সময় গেছে, তবে সেটা ওয়ানডে ফরম্যাট ছিল, এখন টেস্ট। সর্বশেষ টেস্টে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ভালো অবস্থানে ছিলাম। ওই আত্মবিশ্বাস নিয়েই এই ম্যাচ খেলব।' যোগ করেন তিনি।
ঘরের মাঠ হলেও ভেন্যু চেনা নয় বাংলাদেশের। সর্বশেষ ২০১৮ সালে এই মাঠে টেস্ট ম্যাচ হয়েছে, এটাই এখানকার একমাত্র ম্যাচ। তবে এনসিএল ও বিসিএলের ম্যাচ এখানে নিয়মিত হয়। শান্ত বলছেন, 'এখানে টেস্ট খুব কম হয়েছে। প্রথম শ্রেণির ম্যাচ যা হয়েছে, ধারণা বলতে এতটুকুই। উইকেট নিয়ে খুব লম্বা আলোচনা হয়েছে, তা নয়। উইকেট কী রকম, বোঝার চেষ্টা করেছি। ঘরের মাঠের সুবিধা নেওয়া, এই কথা বলতে চাই না। প্রত্যেক দলই যখন হোমে খেলে, এমনিতেই কিছু সুবিধা থাকে। আমরা সেটা নেওয়ার চেষ্টা করব। কাল ম্যাচ শুরু হলে আরও স্পষ্ট বোঝা যাবে, উইকেট কেমন আচরণ করছে। তবে কিছুটা হলেও ধারণা হয়েছে। কী ধরনের উইকেট হবে, এটা বলা তো ঠিক হবে না।'