দুর্দান্ত স্যান্টনারে নিউজিল্যান্ডের আরেকটি দাপুটে জয়

ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছে নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় ম্যাচে তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও দাপুটে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছিল বিশ্বকাপের বর্তমান রানার্স আপরা। ব্যাটে-বলে শাসন করে সেই লক্ষ্য পূরণ করে নিলো কিউইরা, আরেকটি বড় জয়ে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নের পথে পরের ধাপে পা রাখলো তারা।
সোমবার হারদরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ৯৯ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপে এটা তাদের টানা দ্বিতীয় জয়। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে তারা। নেদারল্যান্ডস দুই ম্যাচেই হারলো, প্রথম ম্যাচে তারা পাকিস্তানের বিপক্ষে হার মানে। বিশ্বকাপে ২৭ বছর পর মুখোমুখি হলো নিউজিল্যান্ড-নেদারল্যান্ডস। সর্বশেষ ১৯৯৬ বিশ্বকাপে দেখা হয় তাদের, ওটাই ছিল একমাত্র সাক্ষাত।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৭ উইকেটে ৩২২ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন উইল ইয়াং, রাচিন রবীন্দ্র ও কেন উইলিয়ামসনের অবর্তমানে নেতৃত্ব পাওয়া টম ল্যাথাম। এ ছাড়া শুরুতে ডেভন কনওয়ে মাঝারি ইনিংস খেলেন। শেষ দিকে ক্যামিও ইনিংস খেলে দলের সংগ্রহ বড় করেন মিচেল স্যান্টনার। পরে বল হাতেও শাসন করেন ম্যাচসেরা স্যান্টনার। তার স্পিন ঘূর্ণির সামনে কলিন অ্যাকারম্যান, স্কট এডওয়ার্স, সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট ছাড়া কেউ-ই টিকতে পারেনি। ৪৬.৩ ওভারে ২২৩ রানে শেষ হয় ডাচদের ইনিংস।
লক্ষ্য তাড়ায় নেদারল্যান্ডস কখনই জয়ের আশা জাগাতে পারেনি। ডাচদের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন অ্যাকারম্যান। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৭৩ বলে ৫টি চারে ৬৯ রান করেন। ২৭ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ৩০ রান করেন এডওয়ার্ডস। এ ছাড়া ম্যাক্স ও'দাউদ ১৬, বাস ডে লেডে ১৮, তেজা নিদামানুরু ২১ ও এঙ্গেলব্রেখট ২৯ রান করেন। ম্যাচসেরা স্যান্টনার ১০ ওভারে ৫৯ রানে ৫টি উইকেট নেন। ওয়ানডেতে এটা তার দ্বিতীয় সেরা বোলিং, এর আগে আর একবারই তিনি ৫ উইকেট পেয়েছেন। দারুণ বোলিং করা ম্যাট হেনরি ৪০ রানে ৩টি উইকেট পান। একটি উইকেট নেন রাচিন রবীন্দ্র।
এর আগে ব্যাটিং করতে নামা নিউজিল্যান্ড কনওয়ে-ইয়াংয়ের উদ্বোধনী জুটি থেকে ৬৭ রান পায়। ৪০ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৩২ রান করা কনওয়ের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। উইকেট হারানোর চাপ অবশ্য বুঝতে হয়নি কিউইদের। দ্বিতীয় উইকেটে ৭৭ রানের জুটি গড়েন ইয়াং ও রবীন্দ্র। দলীয় ১৪৪ রানে বিদায় নেন ইয়াং, এর আগে ৮০ বলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় ইনিংস সেরা ৭০ রান করেন নিউজিল্যান্ডের এই ডাহহাতি এই ওপেনার।
এরপর ড্যারিল মিচেলের সঙ্গে ৪১ রানের জুটি গড়েন রবীন্দ্র। দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর নিজের উইকেট বিলিয়ে সাজঘরে ফেরেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৩ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলা রবীন্দ্র ৫১ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ৫১ রান করেন। পরের জুটিটি মিচেল ও ল্যাথামের, তারা যোগ করেন ৫৩ রান।
মিচেল কাছেও গিয়ে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পাননি, ৪৭ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৮ রান করেন তিনি। ৪৯তম ওভারে আউট হওয়া ল্যাথাম ৪৬ বলে ৬টি চার ও একটি ছক্কায় ৫৩ রান করেন। শেষ দিকে ঝড়ে তোলেন স্যান্টনার। বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার ১৭ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় হার না মানা ৩৬ রান করেন। ৪ বলে একটি ছক্কায় ১০ রানে অপরাজিত থাকেন ম্যাট হেনরি। ডাচদের আরিয়ান দত্ত, পল ফন মেকেরেন ও ফন ডার মারউই ২টি করে উইকেট নেন, একটি উইকেট পান বাস ডে লেডে।