‘এমন হতে পারে, পাপন ভাই আমাকে চাপে রাখতে চান’

টেস্টের পর তৃতীয় দফায় টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব পেয়েছেন সাকিব আল হাসান। দলের নতুনের জয়গানে গুরুদায়িত্ব পেয়ে রোমাঞ্চিত অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। দুদিন আগে একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সাকিব জানান, নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত তিনি। কিন্তু এর দুদিন পরই কৌতুহল জাগানিয়া এক মন্তব্য করলেন টি-টিয়েন্টির নতুন অধিনায়ক।
মজার ছলে বললেও সাকিবের এই মন্তব্যের পেছনে থাকতে পারে কোনো 'রহস্য'। যে রহস্য আপাতত উন্মোচন হচ্ছে না, তবে তিনি যে টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব নিতে চাননি; তেমন এক ইঙ্গিত মিলেছে। সোমবার মিরপুরে নেতৃত্বে ফেরার প্রশ্নে সাকিব জানান, চাপে রাখতেই হয়তো বিসিবি সভাপতি তাকে টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক করেছেন।
হাসতে হাসতে সাকিব বলছিলেন, 'এমন হতে পারে পাপন ভাই (নাজমুল হাসান) আমাকে চাপে রাখে। এটা থাকলে (অধিনায়কত্ব) থাকলে একটা চাপে রাখার সুযোগ থাকে।' এরপরই সিরিয়াস সাকিব বললেন, 'আমার কাছে মনে হয় যেহেতু চ্যালেঞ্জিং জায়গা (অধিনায়কত্ব) এবং সেই জায়গায় আমি বোর্ডের কাছে সেরা অপশন। হয়তো এ কারণে আমাকে নির্বাচন করা হয়েছে।'
এশিয়া কাপ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে সোমবার বিসিবি সভাপতিকে জড়িয়ে মজার মন্তব্য করলেও একটি প্রশ্নে যেন থেমে যান সাকিব। বিসিবি সভাপতি চাইলেও আপনি অধিনায়কত্ব নিতে আগ্রহী ছিলেন কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কিছুটা সময় নেন সাকিব। উত্তরে জানান, প্রশ্নটা তার জন্য কঠিন। তবে এখন তিনি অনুপ্রাণিত।
অর্থাৎ, অধিনায়কত্ব পাওয়ার সময়টাতে তিনি অনুপ্রাণিত ছিলেন না, কিংবা নিতে চাননি নেতৃত্বভার। খোলাসা না করলেও সাকিব যতটুকু বলেছেন, তাতে টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্বে তার অনাগ্রহের ব্যাপারটি অনেকটাই পরিষ্কার হয়েছে। আগ্রহের প্রশ্নে সাকিব বলেন, 'কঠিন প্রশ্ন, আমি জানি না কতোটুকু। তবে এখন আমি অনেক অনুপ্রাণিত। আমি চেষ্টা করব আমার যে অভিজ্ঞতা আছে, সেটা দিয়ে যতটুকু দলের ভালো করানোর চেষ্টা করা যায়।'
নেতৃত্বের বিষয়ে আরও একটি প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে চেয়েছেন সাকিব। কবে নাগাদ তাকে টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে? এই প্রশ্নটির উত্তর দিতে চাননি তিনি। জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সাকিব যেন কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে যান। হাসতে হাসতে মাথা নাড়িয়ে কয়েক মুহূর্ত পরে কথা বলতে শুরু করেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার।
তার শারীরিক ভাষা ও কথায় মনে হয়েছে, বেশ আগেই অধিনায়কত্বের প্রস্তাব পেয়েছেন তিনি, কিন্তু নিতে চাননি। এমন একটা সময়ে এসে তাকে অধিনায়ক ঘোষণা করা হয়, যখন তিনি বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। বিসিবি সভাপতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, বেটউইনারের সঙ্গে চুক্তি বাতিল না করলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পর্ক থাকবে না সাকিবের। চুক্তি বাতিল করেন সাকিব, ওই ঘটনার বেশ থাকতে থাকতেই তাকে অধিনায়ক ঘোষণা করা হয়।
প্রস্তাব পাওয়ার সময়কাল সম্পর্কে করা এক প্রশ্নের উত্তরে সাকিব বলেন, 'আনঅফিসিয়াল প্রস্তাব কবে দেওয়া হয়েছে, সেটা বলাটা মুশকিল। অফিসিয়ালি বেশ অনেকদিন। এগুলো গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না। এই আলোচনা করলে আমাদের মূল আলোচনা থেকে দূরে সরে যাওয়া হবে। এই অবস্থায় খুব একটা আদর্শ না। এখন যেটা ফোকাসের জায়গা, সেটা আগামী দুই-আড়াই মাসে আমরা কতোটা উন্নতি করতে পারি।'