বিশ্বকাপের প্রস্তুতির মঞ্চ এশিয়া কাপ, বলছেন সাকিব

কদিন আগেই টি-টোয়েন্টির নেতৃত্বে পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের কাঁধে তুলে দেওয়া হয়েছে নেতৃত্বভার। এশিয়া কাপ দিয়ে মিশন শুরু হচ্ছে তৃতীয়বারের মতো নেতৃত্ব পাওয়া অধিনায়ক সাকিবের। এশিয়া কাপ শুরু হওয়ার মাত্র ৬ দিন বাকি, এ কারণে সব আলোচনা এই আসরটি ঘিরেই। যদিও সাকিবের দৃষ্টি অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। তার কাছে এশিয়া কাপটা কেবলই বিশ্বকাপের প্রস্তুতি মঞ্চ। যে কারণে এশিয়া কাপে কোনো লক্ষ্য নেই তার।
এশিয়া কাপকে সামনে রেখে শনিবার থেকে আনুষ্ঠানিক অনুশীলন শুরু করেছে বাংলাদেশ। যদিও সাকিবের অনুশীলন শুরু হয় আরও আগে। অধিনায়কত্ব পাওয়ার পরদিন থেকেই মাঠে যাওয়া শুরু করেন তিনি। কয়েকদিন পাওয়ার হিটিং নিয়ে কাজ করেছেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। তার মতো পাওয়ার হিটিংয়ের অনুশীলন করেছেন মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, এনামুল হক বিজয়, শেখ মেহেদি হাসানরা। কারণ এশিয়া কাপে এ কজনকে ওপেনার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
আগামী কয়েকদিন টানা অনুশীলনের মাধ্যে এশিয়া কাপে দলগতভাবে ভালো কিছু করা আশায় সাকিব। শনিবার একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, 'আমাদের আজ অনুশীলন শুরু হয়েছে, কাল আর পরশু দুটি অনুশীলন ম্যাচ আছে। অনুশীলন ম্যাচ বলতে গেম সিনারিও। তারপর আমরা এশিয়া কাপের জন্য ২৩ তারিখে যাচ্ছি, ওখানে আমাদের ৬-৭ দিনের অনুশীলনের সময় থাকবে। আশা করি আমাদের যে দলটা আছে, আমরা প্রস্তুতি নিয়ে দলগতভাবে ভালো কিছু করার চেষ্টা করব।'
টি-টোয়েন্টিতে শক্তিশালী দল নয় বাংলাদেশ। এটা মনে করানোর পাশাপাশি শক্তিশালী দলে পরিণত হওয়ার জন্য সময় চাইলেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক, 'এই সংস্করণে আমরা প্রথম খেলি ২০০৬ সালে৷ এরপর থেকে এখন পর্যন্ত খুব একটা ভালো ফল নেই, শুধু এশিয়া কাপ ফাইনাল বাদে। সে জায়গা থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি এই সংস্করণে। তাই আমাদের নতুন করে শুরু করা ছাড়া উপায় নেই। আর একটা বাচ্চা যখন চলা শুরু করে, তার ধাপগুলো খুব কঠিন হয়। আস্তে আস্তে জিনিসগুলো সহজ হতে থাকে। আশা করি ছোট একটা বাচ্চার মতো আমরা স্টেপ বাই স্টেপ চলা শুরু করতে পারব এবং আস্তে আস্তে দৌড়ানোর জায়গাতে পৌঁছাতে পারব।'
এশিয়া কাপে কোনো লক্ষ্য নেই সাকিবের। বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডারের সব চিন্তা বিশ্বকাপকে ঘিরে, 'আমার কাছে কোনো লক্ষ্য নেই। আমার লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বকাপে গিয়ে যেন আমরা ভালো করতে পারি। তার প্রস্তুতি হিসেবে এগুলো। আমি যদি মনে করি যে এখনই আমি একদিন, দুদিনে কিছু বদলে দিতে পারব কিংবা অন্য কেউ এসে বদলে দেবেন, তাহলে আমরা আসলে বোকার রাজ্যে বাস করছি। যদি বাস্তবিক চিন্তা করেন, কয়েক মাসের মধ্যে আমরা যখন বিশ্বকাপ খেলব, যদি একটা উন্নতি দেখতে পারেন দল থেকে, ওটাই আমাদের আসল উন্নতি।'
তৃতীয়বারের মতো অধিনায়কত্ব পেয়ে উচ্ছ্বসিত সাকিব। দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারাটা গর্বের জানিয়ে নেতৃত্বে জন্য নিজেকে প্রস্তুত মনে করছেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার, 'দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারা তো সব সময়ই গর্বের বিষয়। তাই আমি খুবই আনন্দিত, এক্সাইটেড এবং নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য নিজেকে প্রস্তুত মনে করি।'
বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট করা হয়েছে শ্রীধরন শ্রীরামকে। সাকিব জানালেন ভারতীয় এই কোচের কাছ থেকে খুব বেশি কিছু আশা করার নেই। তবে অস্ট্রেলিয়ার সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকায় বিশ্বকাপে তা কাজে দেবে। সাকিবের ভাষায়, 'আমরা মনে হয় না খুব বেশি কিছু আশা করার আছে এখানে। যেহেতু সে (শ্রীরাম) অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের সঙ্গে ৫ বছর ছিলেন, আর আমাদের বিশ্বকাপটাও অস্ট্রেলিয়াতে, তার অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে আসবে।'
'তার অভিজ্ঞতা টি-টোয়েন্টি বা এশিয়া কাপে কতটুক আসবে, বলাটা মুশকিল। খুবই অল্প সময়। কিন্তু আমি যেটা বললাম যে এখানে আমাদের সবার একটা দায়িত্ববোধ আছে যার যার জায়গা থেকে, কোচিং স্টাফ থেকে শুরু করে সাপোর্ট স্টাফ। বিসিবি, মানুষ, আপনারা সবাই যদি একসাথে কাজ করতে পারি, তাহলে আমার কাছে মনে হয় যে একটা পথযাত্রা শুরু হবে।' যোগ করেন তিনি।