মেয়ার্স-পুরান ঝড়ে উড়ে গেল বাংলাদেশ
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ভেন্যু বদলায়, ফরম্যাট বদলায়; কিন্তু বাংলাদেশের ভাগ্য বদলায় না। হারই অমোঘ নিয়তি হয়ে উঠেছে সফরকারীদের জন্য। চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়া বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি সিরিজেও হারের বৃত্তে বন্দি থেকে গেল।
বৃহস্পতিবার রাতে গায়ানাতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ৫ উইকেটে হেরে গেছে বাংলাদেশ। চার-ছক্কার ফুলঝুরি সাজিয়ে অসাধারণ ইনিংস খেলা ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক নিকোলাস পুরানের সামনে অসহায় হয়ে পড়েছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। ঝড়ো ইনিংস খেলেন অভিষেকেই ডাবল সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশের বিপক্ষে একাই টেস্ট জেতানো কাইল মেয়ার্সও।
দারুণ জয়ে ২-০ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টেস্টের মতো সংক্ষিপ্ততম এই ফরম্যাটেও হোয়াইটওয়াশ হতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হওয়ায় সেই অস্বস্তিতে পড়তে হয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলকে।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে লিটন কুমার দাস ও আফিফ হোসেন ধ্রুবর ব্যাটে ৫ উইকেটে ১৬৩ রান তোলে বাংলাদেশ। যে রান পাড়ি দিতে কোনো বেগই পেতে হয়নি স্বাগতিকদের। মেয়ার্স ও পুরানের ব্যাটিং ঝড়ে ১৮.২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
১৬৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে ৪৩ রানের মধ্যে ৩টি উইকেট হারালেও দকে কোনো চাপই বুঝতে দেননি মেয়ার্স-পুরান। চতুর্থ উইকেটে ৮৫ রানের জুটি গড়েন তারা। এই জুটি গড়ার মাঝে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মেয়ার্স। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ৩৮ বলে ২টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৫৫ রান করে আউট হন।
এরপর একাই ব্যাটিং শো চালিয়ে দলকে দারুণ এক জয় এনে দেন পুরান। ক্যারিবীয় অধিনায়ক ৩৯ বলে ৫টি করে চার ও ছক্কায় ৭৪ রানের চোখ ধাঁধানো ইনিংস খেলেও অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের নাসুম আহমেদ ২টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট নেন শেখ মেহেদি হাসান, আফিফ হোসেন ধ্রুব ও বাংলাদেশের তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে শততম টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা সাকিব আল হাসান।
এর আগে ব্যাটিং করা লিটনের ব্যাটে দারুণ শুরু পায় বাংলাদেশ। এনামুল হক বিজয় দেখেশুনে খেললেও লিটনের ব্যাটে দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকে বাংলাদেশ। যদিও জুটিটা বড় হয়নি। দলীয় ৩৫ রানে থামেন বিজয়। সফরজুড়ে নিজের ছায়া হয়ে থাকা ডানহাতি এই ওপেনার ১১ বলে একটি চারে ১০ রান করে বিদায় নেন ।
এদিন সাকিব বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারেননি। চার মেরে রানের খাতা খোলা বাঁহাতি অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান ৩ বলে ৫ রান করে আউট হন। এরপর জুটি গড়েন লিটন-আফিফ। তৃতীয় উইকেটে ৫৭ রানের জুটি গড়েন তারা। লিটনের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। ফেরার আগে ৪১ বলে ৩টি চার ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৯ রান করেন স্টাইলিশ এই ওপেনার।
আফিফের সঙ্গে যোগ দিয়ে মাহমুদউল্লাহ কিছুক্ষণ ব্যাট চালান। আফিফ-মাহমুদউল্লাহ গড়েন ৪৯ রানের জুটি। ২০ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ২২ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। এর ২ রান পরই থামেন আফিফ। এর আগে অবশ্য টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি।
৩৮ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ৫০ রান করে রান আউটে কাটা পড়েন আফিফ। শেষ দিকে নামা নুরুল হাসান সোহান ২ বলে ২ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৬ বলে ১০ রান করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র ২টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান ওডিন স্মিথ ও রোমারিও শেফার্ড।