‘রকেট সায়েন্সের কিছু নেই যে হঠাৎ করে পরিবর্তন চলে আসবে’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর আলোর পথের সন্ধানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ঢেলে সাজানোর পথে খালেদ মাহমুদ সুজনের ওপর ভরসা রেখেছে বিসিবি। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান বিসিবি পরিচালককে দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা পেয়ে গেছেন তিনি।
ঘর গোছানোর দায়িত্ব পেয়েই মাঠে নেমে গেছেন খালেদ মাহমুদ। ঘরের মাঠে আসন্ন পাকিস্তান সিরিজে বিবেচনা করা হচ্ছে, এমন কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটারকে নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তিনি। তবে কাজ শুরু করে সাবেক এই ক্রিকেটার জানিয়ে দিলেন, রাতারাতি কিছুই হবে না; পরিবর্তনের জন্য ধৈর্য ধরতে হবে।
খালেদ মাহমুদ বলেন, 'তাড়াহুড়ো করলে কিছু হবে না। একটা ধাক্কা তো এসেছে, আমাদের কেউ প্রত্যাশা করিনি। রকেট সায়েন্সের কিছু নেই যে হঠাৎ করে পরিবর্তন চলে আসবে। জেতা আরম্ভ করবে, সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। ধৈর্য্য ধরতে হবে। যারা এখানে আছে, তারা সবাই সামর্থ্যবান। হয়তো বাইরে আরও সামর্থ্যবান ছেলে আছে। তারা আস্তে আস্তে প্রস্তুত হবে। পরিবর্তন অবশ্যই হবে। পরিবর্তন হওয়াটাই স্বাভাবিক।'
'জানুয়ারিতে পরিবর্তন আসতে পারে। যেহেতু সিরিজটা অনেক কাছে। পরিবর্তন হওয়ার সুযোগ আছে এখানে। টি-টোয়েন্টিতে নতুনদের আমরা এক্সপোজার দিতে পারি। ওয়ানডে দল অনেকটা সেট হয়ে আছে। টেস্টেও ভালো দল সেট করা আছে। তরুণ ক্রিকেটারদের এক্সপোজার দিতে হলে আমাদেরকে এ ফরম্যাটেই দিতে হবে। এই ছেলেরা খেললেই বাংলাদেশ জিতবে, তেমনটা নয়। কিন্তু তাদেরকে তৈরি করতে হবে। সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আমরা পযার্য়ক্রমে তাদের নিয়ে এগোতে চাই।' যোগ করেন তিনি।
পরিবর্তনের জন্য দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা করতে চান খালেদ মাহমুদ। এ কারণেই সময় দেওয়ার কথা বলছেন তিনি, 'আপনি যদি কাউকে চিন্তা করেন, তাহলে তাকে সময় দিতে হবে। জাতীয় দল এমন একটা জায়গা যেটা ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে অনেক উপরে। এখানে এসেই যে একটা ছেলে অনেক কিছু করে ফেলতে পারবে, তা নয়। যদি আপনি ছেলেদের বিবেচনা করেন তাহলে তাদেরকে অনেক সময় দিতে হবে। দুই-একটা সফর দিয়ে তাদেরকে বিবেচনা করলে হবে না। আমরা তাদেরকে সেই সাহসটা দিতে চাই। স্বাধীনতা, এই টার্মটা আমরা সব সময় বলি। সেটাই ওদেরকে দিতে চাচ্ছি।'
এ ছাড়া বড় পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে তেমন 'অপশন' নেই বলে মনে করেন খালেদ মাহমুদ। তার ভাষায়, 'বিশাল পরিবর্তনের সম্ভাবনা বলতে, আপনার কাছে তো পাইপলাইনে এমন খেলোয়াড় নেই যে হুট করে পরিবর্তন হবে। পরিবর্তন হবে, সেটা কোন ফরম্যাটে হবে বা কী হবে, সেটা তো বলতে পারবে না।'
খালেদ মাহমুদ যেসব ক্রিকেটারদের নিয়ে অনুশীলনে নেমেছেন, এদেরকে নির্বাচকরা যাচাই করতে চেয়েছেন বলে জানালেন তিনি, 'নতুন কিছু খেলোয়াড়দের নির্বাচকরা ডেকেছেন। তাদের দেখতে চেয়েছেন। কোচিং স্টাফরা যেহেতু নেই, তাই আমি কাজ করেছি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেকটা আমরা যেভাবে খেলতে চাই, সেভাবে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি।'
পালাবদলের এই বাঁকে স্থানীয়দের ওপরই বেশি আস্থা রাখতে চায় বিসিবি। স্থানীয় অভিজ্ঞ কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনকে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা করছে বিসিবি। তবে সালাহউদ্দিনের সংযুক্তির ব্যাপারটি তার ওপরই নির্ভর করছে বলে জানালেন খালেদ মাহমুদ, 'তাকে নিয়ে কাজ করার সুযোগ আছে। ও আসবে কিনা, সিদ্ধান্ত ওর। আমরা চাই ওকে বাংলাদেশ টিমের সঙ্গে যুক্ত করতে।'
ক্রিকেট মানসিক খেলা বলে এই জায়গা নিয়ে বেশি কাজ করার পরিকল্পনা খালেদ মাহমুদের। তিনি বলেন, 'ক্রিকেট মানসিক খেলা। আপনি যদি মানসিকভাবে শক্ত না হোন, কিছু পারবেন না। যারা টেনিস বলে ক্রিকেট খেলে, তাদেরও চাপ থাকে। সেই চিন্তাটা ম্যানেজমেন্ট থেকেই করে দিতে হবে। একটা ছেলে প্রতিদিন রান করবে না। কিন্তু তার আত্মবিশ্বাসের জায়গায়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য মানসিক ব্যাপারটাই গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে কখনও কখনও অভিনয় করতে হবে যে আপনি আত্মবিশ্বাসী এবং এভাবেই ব্যাটিং করতে চান।'