‘দলের জন্য সবচেয়ে বেশি ত্যাগ মাহমুদউল্লাহর’
সেই ২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে খেলে আসছেন। একটা সময় জায়গা নড়বড়ে থাকলেও বেশ কয়েক বছর ধরে দলে নিয়মিত খেলে আসছেন। তিন ফরম্যাটের প্রায় সব ম্যাচেই থাকেন তিনি। কিন্তু পাদপ্রদীপের আলোয় সেভাবে থাকা হয় না। এভাবে চলতে চলতে তার নামই হয়ে গেছে 'সাইলেন্ট কিলার'। অনেক ভক্তই তাকে এই নামে ডাকতে পছন্দ করেন।
বাংলাদেশ দলে মাহমুদউল্লাহর অবস্থান এমনই। যদিও টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর চিত্র কিছুটা বদলেছে। তবু ব্যাটিং অর্ডারে তার উপস্থিতি সেই সাইলেন্ট কিলারের মতোই রয়ে গেছে।
অথচ মাহমুদউল্লাহর নামের পাশে থাকতে পারতো ৭-৮ হাজার রান। চার-পাঁচ নম্বরে ব্যাটিং করলে রেকর্ড বইয়ে তার অবস্থান হতে পারতো সামনের কাতারে। কিন্তু এসব না ভেবে কেবল দলের দিকেই তাকিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। যখন যে পজিশনে দরকার হয়েছে, ব্যাট হাতে নেমে পড়েছেন তিনি। এতে ক্যারিয়ারে অনেক রান হারাতে হয়েছে তাকে। দলের জন্য আর কেউ এমন ত্যাগ করেনি বলে মনে করেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।
সোমবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গে লম্বা সময় ধরে আড্ডা দেন তামিম ইকবাল। সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক ও বর্তমান ওয়ানডে অধিনায়কের এই আড্ডায় অনেক বিষয়ের সঙ্গে উঠে আসে দলে মাহমুদউল্লাহর অবদানের ব্যাপারটিও।
আগেরদিন রাতেই মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে লাইভে আলাপচারিতা করেন তামিম। সেই আলাপচারিতায় তামিম জানান, মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে গর্ব করেন তারা। এবার মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে নিজের মূল্যায়ন জানালেন মাশরাফি।
বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল এই অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে বলেন, 'রিয়াদ এমন একজন ব্যাটসম্যান, ও যদি চার-পাঁচ নম্বরে ব্যাটিং করার সুযোগ পেত, ওর পরিসংখ্যানও কিন্তু ভালো হতো। দলের ভালোর জন্য ওকে আমাদের ছয়ে ব্যটিং করাতে হচ্ছে। আমাদের নিচের দিকে এরকম ব্যাটসম্যান নাই যে বিধ্বংসী খেলতে পারে। দলের জন্য খেলতে গিয়ে ওর ক্যারিয়ারে অনেক রান হারিয়েছে। অনেক সময়ই রিয়াদ মন খারাপ করেছে। আমি বুঝিয়েছি, সে হাসিমুখে মেনে নিয়েছে।'
বাংলাদেশ দলের জন্য সবচেয়ে বেশি ত্যাগ মাহমুদউল্লাহর জানিয়ে মাশরাফি বলেন, 'আজ ওর নামের পাশেও ৭-৮ হাজার রান থাকতে পারত। কিন্তু ওকে দলের জন্য খেলতে হয়েছে। খুব কঠিন কাজ করতে হয় ওকে। ওর কাজটা এমন, সব দিন সফল হবে না। সফল না হলে দর্শক, মিডিয়া, সব জায়গায় সমালোচনা শুনতে হয় ওকে। তার পরও করে যাচ্ছে। সে সিনিয়র ক্রিকেটার, তবু একদিনও এসে কিন্তু বলেনি যে চারে ব্যাটিং করতে চাই। বাংলাদেশ দলের জন্য সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করে আসছে সে।'