‘তামিম সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে’

আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলবেন না তামিম ইকবাল। দীর্ঘদিন ক্রিকেটের এই সংস্করণে না খেলায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অভিজ্ঞ এই ওপেনার। বিশ্বকাপের আগেই হাঁটুর চোট কাটিয়ে ওঠার বিশ্বাস তার। তবে চোট কাটিয়ে উঠলেই নিজেকে বিশ্বকাপ দলের জন্য উপযুক্ত মনে করছেন না তামিম। অনুশীলনের ঘাটতি ও দলের সমন্বয়ের কথা ভেবে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন তিনি।
এ নিয়ে বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন তামিম। তিনি জানান, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে না খেলার বিষয়টি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে ইতোমধ্যে জানিয়েছেন। পরে বিকালে বিসিবি সভাপতি তামিমের এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ ওপেনার সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বুধবার বোর্ড মিটিং শেষে অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেন বিসিবি সভাপতি। তামিমের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে নাজমুল হাসান বলেন, 'আমার দেখা সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিক, সেরা অধিনায়ক মাশরাফি। বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান। তামিম যদি দলে আসে, সে সব সময় প্রথম পছন্দ, বাদ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।'
'এটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ও আমাদের প্রথম পছন্দ। এই বিশ্বকাপ দলেও ছিল। কিন্তু নিজের ঘোষণার পর এই স্কোয়াডে সে থাকবে না। আজ আমাদের যে দল দিয়েছিল, সেখানেও সে ছিল। কিন্তু সে যেহেতু প্রত্যাহার করে নিয়েছে, এখন থাকবে না। সামনে আরও বিশ্বকাপ আছে, সে আবার খেলবে আশা করি। সিদ্ধান্তটা সহজ নয়, এটা সাহসী সিদ্ধান্ত। কারণ সবাই বিশ্বকাপ খেলতে চায়।' যোগ করেন বিসিবি সভাপতি।
তামিমের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে নাজমুল হাসান বলেন, 'একটা সমস্যা, তামিম অনেক দিন টি–টোয়েন্টি খেলছে না। নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়েতে টিটোয়েন্টি খেলেনি। ওর ইনজুরি থাকায় খেলেনি। অনেকে প্রশ্ন করে, ও তাহলে ওয়ানডে খেলল কেন? তামিম ওয়ানডের অধিনায়ক, ঝুঁকি নিয়ে খেলেছে। সে এমনই দায়িত্ব থাকলে সিরিয়াসলি খেলে।'
তামিমের বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে বলে জানান বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, 'এখনকার দলটা ভালো খেলছে। হতে পারে আমাদের হোম কন্ডিশনে। যখন দল ভালো খেলে, খুব একটা দল পরিবর্তন করতে চাই না। সব চিন্তা করে, ও যেটা বলেছে, সে ভালো কথাই বলেছে। ও জানে স্কোয়াডে থাকলে সে খেলবেই। সে মনে করেছে এটা হলে অনেকের জন্য অবিচার হতে পারে। ও যেহেতু লম্বা সময় খেলছে না, এই চোট থেকে ফিরে বিশ্বকাপ খেলাটা কঠিন।'
হাঁটুর চোটের কারণে জিম্বাবুয়ে সফরে শুধু ওয়ানডে সিরিজ খেলে দেশে ফিরে আসেন তামিম। অস্ট্রেলিয়ার পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজও খেলছেন না তিনি। এ ছাড়া গত বছরের মার্চ থেকে জাতীয় দলের হয়ে কোনো টি-টোয়েন্টি খেলেননি অভিজ্ঞ এই ওপেনার। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় থাকা তামিমকে এরপরও বিশ্বকাপ দলে বিবেচনা করা হচ্ছিল। কিন্তু তামিম চাননি তাকে দলে নেওয়া হোক।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বাংলাদেশের হয়ে ৬টি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেছেন তামিম ইকবাল। ২০০৭ সালে শুরু হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রতিটি আসরে খেলেছেন তামিম। টেস্ট এবং ওয়ানডের মতো এই ফরম্যাটে বলার মতো পারফরম্যান্স নেই তার। ৭৮ টি-টোয়েন্টিতে একটি সেঞ্চুরি ও সাতটি হাফ সেঞ্চুরিসহ ২৪.০৮ গড়ে তার রান ১ হাজার ৭৫৮। ৬ বিশ্বকাপে ২৩ ম্যাচ খেলা তামিম একটি সেঞ্চুরি ও একটি হাফ সেঞ্চুরিসহ ২৪.৪৭ গড়ে ৫১৪ করেছেন তামিম। চার ইনিংসে করেছেন ৩০ এর বেশি রান।