‘এই সিদ্ধান্তের কারণে তামিমের জন্য জীবন বাজি রেখে খেলবে লিটন-সৌম্যরা’
আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলবেন না তামিম ইকবাল। দীর্ঘদিন এই ফরম্যাটে না খেলায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অভিজ্ঞ এই ওপেনার। বিশ্বকাপের আগেই হাঁটুর চোট কাটিয়ে ওঠার বিশ্বাস তার। তবে চোট কাটিয়ে উঠলেই নিজেকে বিশ্বকাপ দলের জন্য উপযুক্ত মনে করছেন না তামিম। অনুশীলনের ঘাটতি ও দলের সমন্বয়ের কথা ভেবে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন তিনি।
দলে থাকার পরও নিজেকে সরিয়ে নেওয়ায় অনেকের প্রশংসাই পেয়েছেন বাংলাদেশ ওপেনার। সেদিনই তামিমের এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি জানান, বাংলাদেশ ওপেনার সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওয়ানডের সফলতম অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা অনুজ তামিমকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন।
তার মতে, তামিমের এই সিদ্ধান্ত ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে তার জন্য ইতিবাচক। এই সিদ্ধান্তের কারণে অধিনায়ক হিসেবে তামিম যখন ওয়ানডেতে ম্যাচ খেলতে নামবেন, দলের তরুণ ক্রিকেটাররা তার জন্য জীবন বাজি রেখে খেলবেন।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট দিয়েছেন মাশরাফি। দেশের সফলতম পেসারের পোস্টটি তুলে ধরা হলো-
'তামিম ইকবাল খান; নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সেরা একজন ব্যাটসম্যান। পরিসংখ্যানও তাই বলে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার সব যোগ্যতা তার আছে, বিসিবির টিম ম্যানেজম্যান্ট তাকে দলে রাখবে; এটা সবারই জানা। কেন তামিম এ সিদ্ধান্ত নিল, তার যুক্তিও আছে অনেক। প্রথম হলো তামিমের ইনজুরি, তারপর প্রায় চারটা সিরিজ সে খেলতে পারিনি। তার মানে প্রায় ১৬টা ম্যাচ, কোনো ম্যাচ না খেলে মাঠে নামার পর নিজের উপর নিজের বিশাল চাপ সৃষ্টি হবে। যা পরে ওর ওয়ানডে বা টেস্টে ওকে ক্যারি করতে হতে পারে।
কথা হলো এখন যারা খেলছে, তারা তো রান করেনি। আবার সেখানেও কথা আছে। যে উইকেটে খেলা হচ্ছে, সেখানে রিয়াদ ছাড়া আর কোনো দলের খেলোয়াড়ই ৫০ ছুঁতে পারেনি। সত্যিকারের ইউকেটে বিচার না করা হলে একেবারেই অন্যায় হবে সৌম্য, লিটন বা নাঈম এর সাথে। কঠিন সিরিজগুলো সত্যিই এই ছেলেগুলো পার করছে।
তামিমের সিদ্ধান্তকে জাস্টিফাই করা খুব কঠিন কাজ না। পুরোটা ইতিবাচকভাবে দেখলে প্রথমত, এটা একান্তই তামিমের সিদ্ধান্ত। এরপর সবচেয়ে বড় যে বিষয়টা ছিলো, তামিম সব সময় ড্রেসিং রুমে ওয়েলকামিং পারসন। কিন্তু ১৬টা আন্তর্জাতিক ম্যাচ বা কোন অনুশীলন ম্যাচ ছাড়া এবার সে কতোটুকু স্বাগত হতো, তা হয়তো তাকে ভাবিয়েছে।
আর কেউ না বুঝুক, তামিম নিজেও জানে এখন ব্যাটসম্যানরা কেমন উইকেটে ব্যাটিং করছে। যেখানে তাদের ভুল থাকলেও তাদের খুব বেশি কিছু করার নেই। আজকের উইকেট (নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি) তো অস্ট্রেলিয়া সিরিজের উইকেট থেকেও ভয়ানক ধীর গতির। এর পর কী অপেক্ষা করছে, কে জানে। আর এতো কিছুর পরও তামিমকে দলে ঢোকার জন্য কারও খারাপ খেলার প্রয়োজন নেই। এটা সবারই জানা, কারন তামিম দলের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন।
তাই আমার কাছে মনে হয়েছে, তামিম তার নিজের সিদ্ধান্ত নিজে ভেবেই নিয়েছে, যেটাকে সম্মান জানানো উচিত। টপ অর্ডারের অস্থিরতাও হয়তো কিছুটা কমবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কোনো কোনো সিদ্ধান্ত মানুষের জীবন পাল্টে দেয়। আমার কাছে মনে হয় এই সিদ্ধান্তের কারণে তামিম যখন ওয়ানডের পরবর্তী ম্যাচেই অনিায়ক হিসাবে মাঠে নামবে, লিটন, সৌম্য, নাঈমরা ওর জন্য জীবন বাজি রেখে খেলবে। কারণ কেউ করুক আর না করুক, তামিম নিজেই এই ছেলে গুলোর কঠোর পরিশ্রমকে জাস্টিফাই করেছে।
আর তামিম এখন সেরা, ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশা আল্লাহ। এই ফরম্যাটে জোর করে খেলে অবশ্যই টেস্ট, ওয়ানযের সেরা ব্যাটসম্যানকে আপসেট কেউ দেখতে চাইব না। তামিমের এখনও অনেক ম্যাচ জেতানোর বাকি আছে।
ইউ বিউটি খান। বিশ্বকাপে তোমাকে মিস করব। আজ বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে জিতেছে এক রকম নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়েই। এভাবে উড়তে থাকো বন্ধুরা।'