সোশ্যাল মিডিয়া বয়কট করলো ইংলিশ ফুটবল
সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার ও বর্ণবাদী বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে চার দিনের জন্য সকল ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, ইংলিশ ফুটবল লিগ এবং উইমেন সুপার লিগের ক্লাবগুলো। এই বয়কট শুরু হবে ৩০ এপ্রিল থেকে।
এ ছাড়াও বয়কটে অংশ নেবে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, লিগ সংস্থা এবং বৈষম্য বিরোধী দাতব্য সংস্থা কিক ইট আউট'সহ লিগ সংক্রান্ত অন্যান্য সংস্থাগুলো।
কিক ইট আউটের চেয়ারম্যান সঞ্জয় ভাণ্ডারী বলেন, 'এই বয়কট আমাদের সম্মিলিত ক্ষোভকে প্রকাশ করে। দুঃখজনকভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন নিয়মিত অপব্যবহারের বিষ ভাণ্ডারে পরিণত হয়েছে।'
'সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে আমরা ক্ষমতাধর কোম্পানিগুলোর উদ্দেশ্যে প্রতীকী বার্তা দিচ্ছি। আমরা আপনাদের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ দেখতে চাই। আমরা চাই আপনারা পরিবর্তন আনুন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কোম্পানিগুলো যেন ফুটবল পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক প্রচারের জায়গা না হয় বরং অপমানমূলক ব্যঙ্গবিদ্রূপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়- আমরা সেটাই কামনা করি।' যোগ করেন তিনি।
গত বছর বর্ণবাদী হেনস্থার শিকার শেফিল্ড ইউনাইটেডের ডেভিড ম্যাকগোল্ডরিক এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, 'এটা সময়ের ব্যাপার। সোশ্যাল মিডিয়ায় যা ঘটছে, তা আমার সাথেও ঘটেছে।'
'এটা অনেক খেলোয়াড়ের সাথেই ঘটেছে। এ বিষয়ে কিছু একটা হওয়া দরকার, সোশ্যাল মিডিয়ায় বর্ণবাদীভাবে নির্যাতিত হওয়া খুবই সহজ হয়ে উঠেছে।'
এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে ফুটবল সমর্থক অ্যাসোসিয়েশন, লিগ ম্যানেজার্স অ্যাসোসিয়েশন, উইমেন ইন ফুটবল, উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ এবং এর ক্লাবগুলোর পাশাপাশি রেফারি বডি প্রফেশনাল গেম ম্যাচ অফিসিয়ালস লিমিটেড (পিজিএমওএল) ইতোমধ্যে টুইটার, ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম বয়কটের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সোয়ানসি সিটি তাদের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে লক্ষ্য করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বর্ণবাদী আচরণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে চলতি এপ্রিলের প্রথমদিকে এক সপ্তাহের জন্য নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে রেখেছিল। যার তিন সপ্তাহ পরে একই পদক্ষেপ নিলো ইংলিশ ফুটবল।
ভার্চুয়াল জগত জুড়ে বর্ণবাদ এবং উৎপীড়ন থেকে রেহাই পেতে আর্সেনাল ও ফ্রান্সের সাবেক স্ট্রাইকার থিয়েরি হেনরি অরি গত মার্চে সব সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন।
বিবিসির নিউজনাইট প্রোগ্রামকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ৪৩ বছর বয়সী সাবেক এই ফুটবলার বলেন, 'যথেষ্ট হয়রানির শিকার হয়েই যোগাযোগমাধ্যমের বর্ণবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি।'
ইংলিশ ফুটবল পরিচালনা সংস্থার এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'অনলাইন ঘৃণা নির্মূলের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে আরও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।'
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, 'বিচ্ছিন্নভাবে ফুটবল সংস্থাগুলোর বয়কটে অবশ্যই অনলাইনে বৈষম্যমূলক নির্যাতনের প্রকোপ নির্মূল করবে না, কিন্তু এটি প্রদর্শন করবে যে ফুটবল জগত চলমান এই লড়াই অব্যাহত রাখতে স্বেচ্ছায় এবং সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছুক।'
- সূত্র: বিবিসি