শেষ ওভারের রোমাঞ্চের পর হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
কঠিন বাস্তবতা কাকে বলে, হারে হারে টের পাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে সিরিজ জিতে গিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবি হয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলের। সুপার টুয়েলভে টানা পাঁচ হেরে দেশে ফেরা বাংলাদেশ ঘরের মাঠেও ভাগ্য বদলাতে পারল না। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রতি ম্যাচেই হতাশার পারফরম্যান্স করা মাহমুদউল্লাহবাহিনী তৃতীয় টি-টোয়েন্টি হেরে হোয়াইটওয়াশ হলো।
তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৫ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ হারে হোয়াইওয়াশের যন্ত্রণাও সঙ্গী হলো বাংলাদেশের। টি-টোয়েন্টিতে তিন বছর পর ঘরের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ হলো তারা। সর্বশেষ ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ হারে বাংলাদেশ।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ বরাবরের মতো হতাশার ব্যাটিং করে। ৭ উইকেটে ১২৪ রান তোলে ঘরের মাঠের দলটি। জবাবে মোহাম্মদ রিজওয়ান ও হায়দার আলীর ব্যাটে জয়ের পথে থাকলেও শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহর তিন উইকেটে ম্যাচ জমে যায়। শেষ বলে মোহাম্মদ নওয়াজ চার মেরে পাকিস্তানকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান।
ব্যাট হাতে সামান্য পূঁজিই মিলেছিল। এমন পূঁজি নিয়ে লড়াই করাই যেখানে কঠিনসাধ্য, সেখানে জয়ের কল্পনা অলৌকিক। কিন্তু হারতে হারতে ক্লান্ত হয়ে পড়া বাংলাদেশ এদিন হাল ছাড়েনি। শেষ ওভারে গিয়ে স্পিন জাদু দেখান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষ ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিল ৮ রান, এই ওভার করতে এসে তিন উইকেট তুলে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবু সেটা যথেষ্ট হয়নি, শেষ বলে হার মানতে হয় বাংলাদেশকে।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা খারাপ হয়নি পাকিস্তানের। উদ্বোধনী জুটিতে ৩২ রান যোগ করেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও বাবর আজম। এই জুটি ভাঙেন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। বাংলাদেশের এই লেগ স্পিনারের বলে আউট হওয়ার আগে ২৫ বলে ২টি চারে ১৯ রান করেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
অধিনায়ককে হারানোর চাপ বুঝতে হয়নি পাকিস্তানকে। দ্বিতীয় উইকেটে ৫১ রানের জুটি গড়েন রিজওয়ান ও হায়দার আলী। পাকিস্তান তখন জয়ের সুবাশ পাচ্ছে, এমন সময়ে বাংলাদেশের অভিষিক্ত পেসার শহিদুলের বলে ইনসাইড এজে বোল্ড হন রিজওয়ান। ফেরার আগে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ৪০ রান করেন তিনি।
হায়দার আলী ও সরফরাজ আহমেদের ব্যাটে এগিয়ে যাচ্ছিল পাকিস্তান। শেষ ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ৮ রান। দ্বিতীয় বলে সরফরাজ ও তৃতীয় বলে ম্যাচসেরা হায়দারকে ফেরান মাহমুদউল্লাহ। চতুর্থ বলে ছক্কা মারেন ইফতিখার আহমেদ। শেষ ২ বলে দরকার ২ রান, পঞ্চম বলে ইফতিখারের উইকেট তুলে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শেষ বলে ২ রান দরকার পড়লেন নওয়াজ চার মেরে শেষ করেন। ৩৮ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৫ রান করে ম্যাচসেরা হন হায়দার। মাহমুদউল্লাহ ৩টি এবং শহিদুল ও বিপ্লব একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশ আবারও হতাশায় ডুবেছে। দলটির কোনো পরিবর্তনেই নেই, ধারাবাহিকভাবে বাজে ব্যাটিং করে যাচ্ছে তারা। এদিনও কোনো ব্যাটসম্যান পারেননি টি-টোয়েন্টির মতো করে ব্যাটিং করতে।
সর্বোচ্চ ৪৭ রানের ইনিংস খেলেন নাঈম শেখ। ২টি চার ও ২টি ছক্কা মারলেও বাঁহাতি এই ওপেনার বল খরচা করেন ৫০টি। দ্বিতীয় সেরা ২২ রান করেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। ভালো শুরু করেও ২০ রানের বেশি করতে পারেননি আফিফ হোসেন ধ্রুব। ১৩ রান করে বিদায় নেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
নাজমুল হোসেন শান্ত ৫, নুরুল হাসান সোহান ৪, শেখ মেহেদি হাসান ৫* ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ৩* রান করেন। পাকিস্তানের মোহাম্মদ ওয়াসিম ও উসমান কাদির ২টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান শাহনাওয়াজ দাহানি ও হারিস রউফ।