যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছায় হোটেলবন্দী সাকিব

গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুকে একের পর এক ছবি দিয়ে যাচ্ছিলেন সাকিব আল হাসান। ছবি দিয়ে শৈশবের স্মৃতি রোমন্থন করছিলেন দেশসেরা এই অলরাউন্ডার। সেই সাকিবকেই শনিবার দেখা গেল অন্য চেহারায়। এই সাকিবের মুখে নেই হাসি। চুল এলোমেলো, চেহারায় আতঙ্কের ছাপ। জানালেন যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে স্বেচ্ছায় হোটেলবন্দী হয়েছেন তিনি। আগামী ১৪ দিন এখানেই থাকবেন তিনি।
বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানো প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সতর্কতায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সব ধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ থাকা সাকিব আল হাসান। এ সময়ে স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশির ও মেয়ে আলাইনা হাসান অউব্রির সঙ্গেও দেখা করছেন না তিনি। পরিবারকে তার থেকে দূরে থাকতে বলেছেন সাকিব।
করোনা নিয়ে সবাইকে সতর্ক করতে শনিবার নিজের ভেরিফাইড অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে লাইভে এসেছিলেন সাকিব। যেখানে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার।
সবাইকে সতর্কতামূলক বার্তা দিয়ে সাকিব বলেছেন, 'একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। আমি মাত্রই যুক্তরাষ্ট্র এসে পৌঁছলাম। যদিও প্লেনে সব সময় ভয় কাজ করেছে একটু হলেও। তারপরও চেষ্টা করেছি নিজেকে কীভাবে জীবাণুমুক্ত রাখা যায়। তারপর যখন আমি যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছালাম, আমি সোজা একটি হোটেলের রুমে উঠেছি। আমি ওদেরকে অবগত করেছি, এখানে থাকব কিছুদিন।'
ভ্রমণ করায় পরিবারের সঙ্গে দেখা করার ঝুঁকি নিতে চান না সাকিব। বাংলাদেশ অলরাউন্ডার বলছেন, 'আমি যেহেতু ফ্লাই করে এসেছি, আমার একটু হলেও ঝুঁকি আছে। তাই আমি নিজেকে আইসোলেটেড করে রেখেছি। যে কারণে আমি আমার বাচ্চার সাথে দেখা করিনি। এটা অবশ্যই আমার জন্য কষ্টের। তারপরও আমার কাছে মনে হয়, আমার এই সামান্য আত্মত্যাগটুকু করতে পারলে অনেক দূর এগোতে পারব।'
যুক্তরাষ্ট্র যাওয়া সাকিব সব নিয়ম-কানুন মেনে চলছেন। সবাইকে নিয়ম মানার অনুরোধ জানিয়ে সাকিব বলেছেন, 'কিছু সাধারণ ধাপ অনুসরণ করলে আমার ধারণা আমরা এই রোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারব এবং আমাদের দেশকেও মুক্ত রাখতে পারব। যেমন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, সামাজিক যোগাযোগে দূরত্ব বজায় রাখা, হাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় সঠিক শিষ্টাচার মেনে চলা এবং যদি কেউ বিদেশ ফেরত থাকেন তাহলে অবশ্যই নিজেকে ঘরে রাখা ও ঘর থেকে যেন না বের হয় সে সম্পর্কে খেয়াল রাখা।'
ভ্রমণ করলে বা বিদেশ থেকে কেউ দেশে ফিরলে কী করতে হবে, সে সম্পর্কে সাকিব তার ভিডিও বার্তায় বলেন, 'একই সময়ে আপনাকে মনে রাখতে হবে, আত্বীয় স্বজন বা বাইরের মানুষ আপনার সাথে এসে যেন দেখা করতে না পারে। ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে, যা খুবই জরুরী।'
সাকিবের বিশ্বাস তার কথাগুলো সবাই অনুসরণ করবে। জাতীয় দলের অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার বলেন, 'আশা করি সবাই আমার এই কথাগুলো শুনবেন এবং কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশ সরকার, স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে, এগুলো সম্পর্কেও অবগত হবেন এবং সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করবেন।'
পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বাংলাদেশেও থাবা বসিয়েছে। ইতোমধ্যে ২৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে দুজন মারা গেছেন। কয়েক হাজার মানুষ আছেন কোয়ারেন্টিনে।